নয়াদিল্লি: শুল্ক নিয়ে টানাপোড়েন চলছেই। সেই আবহেই আমেরিকা সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেপ্টেম্বর মাসে আমেরিকা যাচ্ছেন তিনি। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে মোদির। পাশাপাশি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক রয়েছে। সেখানে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে কী কথা হয়, ভারতের ‘শুল্ক-শাস্তি’ লাঘব হয় কি না, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে। (India Us Relations)

সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে আমেরিকা সফরে যাওয়ার কথা মোদির। রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার অধিবেশনে বক্তা হিসেবে নাম রয়েছে তাঁর। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জে বক্তৃতা করতে গেলেও, আসলে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাতের উপরই দিল্লি জোর দিচ্ছে বলে খবর। মোদি এবং ট্রাম্প সেখানে মুখোমুখি বসলে, গত সাত মাসে এই নিয়ে দ্বিতীয় বার বৈঠকে বসবেন তাঁরা। এর আগে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে হোয়াইট হাউসে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তাঁরা। (Narendra Modi)

G7 বৈঠকে যোগ দিতে মোদি যখন কানাডায়, সেই সময়ই তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়েছিলেন ট্রাম্প। সেই সময় আমেরিকায় ছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির, যাঁকে হোয়াইট হাউসে আপ্যায়ন করেন ট্রাম্প। সেই কারণেই সেবার ট্রাম্পের সঙ্গে মোদি দেখা করেননি বলে জানা যায়। তবে এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির সাক্ষাতের দিকে তাকিয়ে শিল্পমহলও। দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা হলে, শুল্ক নিয়ে আমেরিকার কড়া অবস্থান বদলাতে পারে বলে আশাবাদী বিশেষজ্ঞ মহল। 

এতদিন ট্রাম্পের সঙ্গে মোদির বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথাই বার বার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে। আমেরিকায় ট্রাম্পের হয়ে যেমন সভা করেছেন মোদি, তেমন গুজরাতে মোদিকে পাশে নিয়ে সভা করে গিয়েছেন ট্রাম্পও। কিন্তু শুল্ক নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে তাঁদের ব্যক্তিগত সমীকরণেও ছেদ পড়েছে বলে মত অনেকের। মোদি খোদ সেই জল্পনা বাড়িয়েছেন। ট্রাম্প ভারতের শুল্ক বাড়িয়ে ৫০ শতাংশ করলে, মোদি জানান, দেশের স্বার্থে ব্যক্তিগত ভাবে মাশুল দিতেও প্রস্তুত তিনি। তাই মুখোমুখি সাক্ষাতে বরফ গলতে পারে বলে আশাবাদী অনেকেই। 

দ্বিতীয় বার আমেরিকার মসনদে ফেরার পর থেকেই শুল্ক নিয়ে কড়া মনোভাব দেখাচ্ছেন ট্রাম্প। ভারতের বিরুদ্ধে একাধিক বার ক্ষোভ উগরে দিতে শোনা গিয়েছে তাঁকে। বিশেষ করে রাশিয়া থেকে তেল কেনা নিয়ে ভারতকে প্রকাশ্য়ে ভর্ৎসনা করেন তিনি। আর তার পরই দু’দফায় ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানোর ঘোষণা করেন তিনি। রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেন চালিয়ে গেলে আরও কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন। মোদির আমেরিকা সফরে তাতে কোনও হেরফের ঘটে কি না, তা-ই দেখার। আমেরিকা সফরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও বৈঠকের কথা মোদির, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ভারতের উপর চড়া শুল্ক চাপাতে গিয়ে রাশিয়া বনাম ইউক্রেন যুদ্ধের দোহাই দিতে শোনা যায় ট্রাম্পকে। ভারতকে বিক্রি করা তেলের টাকাতেই রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।