বিশ্বজুড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ঘটছে হৃদরোগে (CVD)। কয়েকটি গবেষণা অনুসারে, বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর এক নম্বর কারণই হল হার্টের অসুখ।  বয়স্কদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা ঘটছে । এর পিছনে নানা কারণ খুঁজে পাচ্ছেন গবেষকরা। তবে কোনও কোনও ভিটামিনের অভাবও হার্টের অসুখের পরোক্ষ কারণ হতে পারে। আবার বিভিন্ন গবেষকরা   ভিটামিন K₁ (ফাইলোকুইনোন)-এর মধ্যে এমন কিছু বৈশিষ্ট খুঁজে পেয়েছেন, যা হার্টের অসুখ আটকাতে অনেকটাই সহায়ক। সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় ভিটামিন K₁। হৃদরোগের সুস্থতার জন্য এই ভিটামিন আপনার ডায়েটে থাকা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই ভিটামিনে উপকার নিয়ে চর্চা হয় যথেষ্ট কম। 

 দ্য আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন (২০২৫) এ প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে চমকপ্রদ ফল। এই গবেষণায় ভিটামিন K₁ এর সঙ্গে হার্টের স্বাস্থ্যের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। নানারকম শাকে থাকে এই ভিটামিন। সবুজ শাকসবজি যাঁরা খান, তাঁরা অনেকটা উপকার পেতে পারেন, এই সব ভিটামিন থেকে। 

গবেষকরা ১৪ বছরেরও বেশি সময় ধরে ৭০ বছরের বেশি বয়সীদের নিয়ে একটি সমীক্ষা চালান। এতে স্যাম্পল হিসেবে রাখা হয়  ১,৪৩৫ জনকে।  হৃদরোগের মৃত্যু প্রতিরোধে অনেকটাই কার্যকরী  ভিটামিন K₁। গবেষকরা বলছেন, ভিটামিন K1 ম্যাট্রিক্স GLA প্রোটিনকে (MGP) সক্রিয় হতে সাহায্য করে। এর ফলে ভাস্কুলার ক্যালসিফিকেশন  অর্থাৎ ধমনীতে ক্যালসিয়াম জমার বাধা দেয়। যখন ভিটামিন K1 এর অভাব ঘটে শরীরে,তখন MGP নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। এর ফলে ধমনীতে এথেরোস্ক্লেরোটিক প্লেক তৈরি হয়, যা করোনারি ধমনী রোগ এবং স্ট্রোকের কারণ হতে পারে। গবেষণা বলছে, ভিটামিন K1 কার্ডিওভাসকুলার রোগের (CVD) ঝুঁকি হ্রাস করে। গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব বয়স্ক মহিলারা প্রতিদিন ভিটামিন K1 বেশি পরিমাণে খান,তাদের হৃদরোগজনিত মৃত্যুর ঝুঁকি ৪৩% কমে যায়। 

এই ভিটামিনে উৎসগুলি কী কী 

ভিটামিন K1 এর প্রধান উৎসই হল সবুজ শাকসবজি।  আঙ্গুর, ব্লুবেরি , অ্যাভোকাডো, কিউই ফল, ইত্যাদি ফলেও অল্প পরিমাণে ভিটামিন K1 পাওয়া যায়।  উদ্ভিজ্জ তেল থেকেও ভিটামিন K1 পাওয়া যায়। যেমন, সয়াবিন তেল, ক্যানোলা তেল, জলপাই তেল ইত্যাদি।    পালং শাক, বাঁধাকপি, ব্রকলি, লেটুস পাতা, শালগম শাক, কলার মোচা ইত্যাদিও ভিটামিন K1 এর ভালো উৎস।   কিছু শস্য এবং দুগ্ধজাত দ্রব্যেও অল্প পরিমাণে ভিটামিন K1 পাওয়া যায়।