প্রত্যেক তরুণ-তরুণীদের মধ্যেই একটি দ্বন্দ্ব থাকে মনে যে খোলা হাতে টাকা খরচ করা দরকার নাকি খরচ অনেক কমিয়ে টাকা বিনিয়োগ করা দরকার বা ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করা দরকার। সমাজমাধ্যমের যুগে যখন তাদের সামাজিক প্রত্যাশা অনেক বেশি থাকে, তখন দুই কাজ একসঙ্গে করা খুবই কঠিন হয়ে যায়। আর এখনকার দিনে তরুণদের মধ্যে ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করার অনিশ্চয়তা ও তাড়না ক্রমেই বেড়ে চলেছে। এডেলউইস মিউচুয়াল ফান্ডের সিইও রাধিকা গুপ্তা সম্প্রতি সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে আজকের তরুণ পেশাদারদের এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেছেন – YOLO নাকি Savings ?

রাধিকা গুপ্তা জানিয়েছেন যে বাস্তব জীবনে YOLO নীতি বা সঞ্চয়ের নীতি এককভাবে কোনওটাই কাজ করে না, দরকার পড়ে এই দুয়ের ভারসাম্য। YOLO এই প্রবাদটির আসল অর্থ হল You Only Live Once। অর্থাৎ জীবন একটাই, তাই এই জীবনের প্রতিটি ক্ষুদ্র মুহূর্ত উপভোগ করা দরকার। রাধিকা গুপ্তা স্মৃতিচারণ করে লেখেন যে তাঁর বাবাও একসময় রেকর্ডের পিছনে প্রচুর টাকা ব্যয় করেছেন, আর তাই আজকের তরুণরাও কনসার্ট বা ব্র্যান্ডেড জিনিসপত্রের পিছনে টাকা খরচ করতে পারে। নিজের লেখা বই ‘ম্যাঙ্গো মিলিওনেয়ার’ থেকে মিলিওনেয়াল এবং জেড প্রজন্মের পার্সোনাল ফিনান্সের বিষয়টি সহজ করার জন্য রাধিকা গুপ্তা ১০-৩০-৫০ নীতিটি উল্লেখ করেছেন।

এই নীতিটি খুবই সহজ। আপনার ২০ বছর বয়সে আয়ের ১০ শতাংশ, ৩০ বছর বয়সে আয়ের ৩০ শতাংশ এবং ৫০ বছর বয়সে আয়ের ৫০ শতাংশ সঞ্চয় করতে হবে ব্যক্তিকে। এর কারণ হল বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই মানুষের আর্থিক দায়িত্ব বৃদ্ধি পায়, জীবনের পরবর্তী সময়ে মানুষের আয়ও বাড়ে যার কারণে সঞ্চয়ের মাত্রাও বেশি রাখাটা যুক্তিযুক্ত। তিনি একটি টার্ম উল্লেখ করেন যা হল SDS অর্থাৎ Savings Deducted At Source। অর্থাৎ চাকরির বেতনের থেকে যেমন কর বাবদ কিছু টাকা কেটে অ্যাকাউন্টে জমা হয়, তেমনই আগে এই নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট টাকা আলাদা সরিয়ে রাখতে হবে সঞ্চয় হিসেবে তারপর বাকি টাকা খরচ করতে হবে।

টাকা অ্যাকাউন্টে এলেই সবার আগে এসআইপি, বা রেকারিং ডিপোজিট বা ফিক্সড ডিপোজিটের মাধ্যমে টাকা সরিয়ে সঞ্চয় বা বিনিয়োগের জন্য রেখে দিতে হবে। টাকার পরিমাণ নয়, সঞ্চয়ের অভ্যাস এক্ষেত্রে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রাধিকা গুপ্তার কথায়, আজকের তরুণ পেশাদারদের একটি বিলাসি হ্যান্ডব্যাগ কেনা বনাম স্বপ্নের স্টার্টআপের জন্য সঞ্চয় করা এই দুই রাস্তার মধ্যে যে কোনও একটি বেছে নেওয়ার কোনও দরকার নেই। অটোমেশন ও ধারাবাহিকতার মধ্য দিয়ে উভয় লক্ষ্যই ধীরে ধীরে পূরণ হবে আপনার জীবনে।