নয়াদিল্লি: চড়া হারে শুল্ক বসানো নিয়ে এবার আমেরিকাকে নিশানা। ভারতের উন্নতি আটকাতেই ‘শুল্ক-শাস্তি’ দেওয়া হয়েছে বলে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তীব্র কটাক্ষ করলেন ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ। আমেরিকা নিজেকে ‘হর্তাকর্তা’ ভাবছে, ভারতের উন্নতি দু’চক্ষে দেখতে পারছে না বলেও দাবি করলেন তিনি। (India-US Relations)
গত কয়েক মাসে ভারত ও আমেরিকার সম্পর্কে লাগাতার অবনতি ঘটেছে। রাশিয়ার থেকে তেল কেনার জন্য ভারতের উপর দফায় দফায় মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছে ট্রাম্প সরকার। সেই নিয়ে এই প্রথম কেন্দ্রের তরফে কেউ আমেরিকার উদ্দেশে এত কড়া মন্তব্য করলেন। তাঁর বক্তব্য, “যে গতিতে ভারত উন্নতি করছে, তা কারও কারও পোষাচ্ছে না। একেবারে ভাল লাগছে না ওদের। ভাবছে, ‘আমরা তো সবার বস’। ভারত এত দ্রুত এগোচ্ছে কী করে?” (Rajnath Singh on US Tariff)
সেখানেই থামেননি রাজনাথ। তিনি আরও বলেন, “ভারতে তৈরি পণ্য যাতে বাইরের দেশে বহুমূল্য হয়ে ওঠে, অনেকেই সেই চেষ্টা করছে। কারণ দাম বাড়লে, সেই পণ্য কেনার লোক কমবে। সব রকমের অপচেষ্টা চলছে। কিন্তু ভারত এত দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে, যে আমার বিশ্বাস, পৃথিবীর কোনও শক্তি ভারতকে অন্যতম আন্তর্জাতিক শক্তি হয়ে ওঠা থেকে আটকাতে পারবে না।”
রাশিয়ার থেকে তেল কেনায় ভারতের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েই থামেননি ট্রাম্প, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা চালিয়ে গেলে, আরও শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। যদিও রাজনাথের দাবি, ভারতের রফতানির উপর কোনও রকম প্রভাবই পড়েনি। তাঁর কথায়, “প্রতিরক্ষা নিয়ে বলতে পারি, জেনে খুশি হবেন যে ২৪ হাজার কোটি টাকার বেশি সামরিক সরঞ্জাম রফতানি করছি আমরা। এটাই ভারতের শক্তি। নতুন ভারতের নতুন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। রফতানি লাগাতার বাড়ছে।”
আমেরিকার চাপানো শুল্ক নিয়ে আগেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানায় দিল্লি। আমেরিকার এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক, দ্বিচারিতা বলে উল্লেখ করা হয়। রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনার নেপথ্যে রাজনৈতিক কোনও কৌশল নেই, বরং অর্থনৈতিক কারণেই তেল কেনা হয় বলে জানায় ভারত। আমেরিকার বিভিন্ন সংস্থা যেখানে রাশিয়ার থেকে পণ্য কিনে চলেছে, বেছে বেছে ভারতের উপর শাস্তির খাঁড়া নামল কেন, প্রশ্ন তোলে দিল্লি। যদিও আমেরিকার যুক্তি, ভারতকে তেল বিক্রির টাকাতেই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে এই যুদ্ধে ভারত জ্বালানি জোগাচ্ছে বলে অভিযোগ করে তারা।