কলকাতা: শিয়ালদা স্টেশনের নাম পরিবর্তনের দাবি তুললেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপি সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নামে শিয়ালদা স্টেশনের নয়া নামকরণের দাবি তুললেন তিনি। এই মর্মে রাজ্য সরকারের তরফে কেন্দ্রের কাছে সুপারিশ করা উচিত বলে দাবি তাঁর। সুকান্তকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। তাঁর যুক্তি, শ্যামাপ্রসাদ কেন, স্বামী বিবেকানন্দের নামে নামকরণ হোক। (Sukanta Majumdar)

রবিবার শিয়ালদা-রানাঘাট এসি লোকাল ট্রেনের উদ্বোধনে হাজির ছিলেন সুকান্ত। সেখানেই স্টেশনের নামবদলের দাবি তোলেন তিনি। সুকান্ত বলেন, "রাজ্য সরকারের প্রস্তাবের উপরই রেল স্টেশনের নামকরণ নির্ভর করে। আমার অনুরোধ, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্য়ায়ের নামে শিয়ালদা স্টেশনের নামকরণের জন্য় যেন প্রস্তাব পাঠায়। রাজ্য থেকে প্রস্তাব গেলে কেন্দ্রের অনুমতি নিয়ে শিয়ালদা স্টেশনকে ডক্টর শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি শিয়ালদা টার্মিনাস নামে পরিচিত করতে পারব আমরা। এতে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় এবং ওপার বাংলা থেকে পালিয়ে আসা লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি মানুষকে সম্মান জানানো হবে।" (Sealdah Station Renaming Claims)

যদিও সুকান্তর এই দাবির পাল্টা মুখ খুলেছেন কুণাল। শ্যামাপ্রসাদ কেন, বিবেকানন্দের নামে কেন স্টেশনের নাম করণ হবে না, প্রশ্ন তোলেন তিনি। কুণালের বক্তব্য, "শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি। তাঁর নামে বন্দর রয়েছে। শিয়ালদা স্টেশন কেন? শিয়ালদা স্টেশনের নাম যদি বদল করতে হয়, তা স্বামী বিবেকানন্দের নামে করা হোক। কারণ শিকাগো ধর্মসভায় ঐতিহাসিক বক্তৃতার পর জাহাজে ফেরার পথে শিয়ালদায় নেমেছিলেন তিনি। বিশ্বজয়ের পর শিয়ালদা স্টেশনে নেমেছিলেন তিনি। নাম বদল করতেই হয় যদি, তাঁর নামে করা হোক।"

রাজ্য সরকার জমি না দেওয়ায় রেলের বহু প্রকল্প আটকে রয়েছে বলেও এদিন দাবি করেন সুকান্ত। তাঁর দাবি, অন্তত ৬০-৬১টি প্রকল্প আটকে রয়েছে রেলের। টাকার কোনও অভাব নেই। যত টাকা লাগে, দিতে রাজি রেল। রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে মানুষের স্বার্থের কথা ভাবতে হবে বলে জানান তিনি। 

কিন্তু সুকান্তর এই দাবি উড়িয়ে দেন তৃণমূলের দেবাংশু ভট্টাচার্য। তাঁর বক্তব্য, "১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনার টাকা নিয়ে গত চার বছর ধরে এই কথাই বলে আসছি আমরা। শুভেন্দু-সুকান্তরা বলেন, ওঁরা ফোন করলে ১০ সেকেন্ডেই টাকা দিয়ে দেবে কেন্দ্র। কিন্তু তা হতে দেবেন না ওঁরা। শুভেন্দু জানিয়েছেন, অর্থ কমিশনের টাকাও আটকে দেবেন। গর্ব করে, বুক ঠুকে ওঁরা এসব বলেন। তখন মানুষের কথা মনে হয় না। জমি জটের তত্ত্বও মিথ্যে। কেন্দ্রকে শ্বেতপত্র দিতে বলুন দেখি! সীমান্ত নিয়েও একই কথা বলেন। আসলে অসমে যে কারণে জমি আটকেছে, বাংলাতেও কারণ একই। ব়্যাডক্লিফ লাইন ধরে হলে বাংলাদেশে জমি চলে যাবে। সেটা নিয়ে মিথ্যাচার চলছে। আসলে বাংলার জন্য কিছু করার ইচ্ছেই নেই। গত ১২ বছরে ৩৪ জন সাংসদ দিয়েছে বাংলা, পরিবর্তে কাঁচকলা দিয়েছেন ওঁরা। বুলেট ট্রেনও দিল্লি গিয়েছে।"