কলকাতা: সোনা এবং হিরে চিরকালীন। ভারতে ধনী হোক বা গরিব সকলেই তাঁদের ক্ষমতা অনুযায়ী সোনা বা হিরের গয়না কিনতে পছন্দ করে। দেশের ধনী এবং উচ্চ-মধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্তরা বড় বড় খুচরো দোকান থেকে ব্র্যান্ডেড গয়না কিনতে পছন্দ করে। ভারত গ্রামনির্ভর দেশ, তাই গয়নার বাজারে এখনও আধিপত্য রয়েছে অসংগঠিত বাজারের। গত কয়েক বছরে ভারতের গয়নার বাজার ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। ভারতের গহনার বাজার ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে ৫০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ছিল, যা ২০২৩-২৪ সালে ৮০ বিলিয়ন ডলারে বেড়েছে। এরপরে ২০২৭-২৮ অর্থবর্ষের মধ্যে ভারতের গয়না বাজারের ১৪৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে পারে বলে অনুমান বিশেষজ্ঞদের।
এই দিকে তাকিয়েই বিনিয়োগ বিশেষজ্ঞরা ইঙ্গিত দিচ্ছেন স্বর্ণগয়না প্রস্তুতকারী সংস্থার স্টক লাভ দিতে পারে। ব্রোকারেজ হাউস মতিলাল ওসওয়ালের গবেষক-বিশ্লেষক নবীন ত্রিবেদী, প্রতীক প্রজাপতি এবং তনু জিন্দাল দেশের গয়না বাজার নিয়ে একটি সমীক্ষা করেছেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উপরি উল্লিখিত কারণ এবং আরও কিছু কারণে বাজারে তালিকাভুক্ত তিনটি শেয়ারে তেজি আসতে পারে। মতিলাল ওসওয়াল বিনিয়োগকারীদের কল্যাণ জুয়েলার্স এবং সেনকো গোল্ডের স্টক কেনার পরামর্শ দিয়েছেন। ব্রোকারেজ হাউস তার প্রতিবেদনে কল্যাণ জুয়েলার্সের স্টকের জন্য ৫২৫ টাকা লক্ষ্য মূল্য দিয়েছে। যেখানে সেনকো গোল্ডের জন্য ১৩০০ টাকা টার্গেট মূল্য দেওয়া হয়েছে। ব্রোকারেজ হাউসটি ৪১৫০ টাকার লক্ষ্য মূল্যের সঙ্গে টাইটানের শেয়ার কিনতেও বলেছে, এটি তানিষ্ক ব্র্যান্ডের অধীনে খুচরো গয়না বিক্রেতা।
কল্যাণ জুয়েলার্সের স্টক এখন ১.৭৬ শতাংশ বৃদ্ধির সঙ্গে ৪৩১.৪৫ টাকায় ট্রেড করছে, সেনকো গোল্ড ০.১৭ শতাংশ বৃদ্ধির সঙ্গে ১০৩১ টাকায় লেনদেন করছে এবং টাইটানের স্টক ৩.২৯ শতাংশ পতনের সাথে ৩৪৭১ টাকায় লেনদেন করছে৷
ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ভারতের খুচরো গয়না খাতে উচ্চবৃদ্ধির অনেক কারণ রয়েছে। ভারতীয়দের নিষ্পত্তিযোগ্য আয় (Disposable income) ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং মাথাপিছু আয়ে ভাল রকমের বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও, অনেকে এখন প্রতিদিন পরার জন্য হালকা এবং নতুন ডিজাইনের সোনা এবং হিরের গয়না কিনতে পছন্দ করছে। হলমার্ক জুয়েলারির কারণে মানুষের আস্থা বেড়েছে। অন্যদিকে এই সেক্টরে নানা অফার কেনাকাটাকে প্রভাবিত করছে। সারা দেশে সংগঠিত গয়না খুচরো খাতের বাজারের অংশ বেড়েছে ৩৬-৩৮ শতাংশ।
এত কিছুর পরেও, খুচরো গয়না বিক্রির সেক্টরে অসংগঠিতদের আধিপত্য বজায় রয়েছে। একটি হিসেব অনুযায়ী, দেশে প্রায় ৫ লক্ষ স্বর্ণকার এবং জুয়েলার্স রয়েছেন যাঁরা অসংগঠিত বাজারের সঙ্গে যুক্ত। ভারতে মোট সোনার ব্যবহারে গয়নার অবদান ৬৬ শতাংশ এবং বার ও কয়েনের অবদান ৩৪ শতাংশ৷ ভারতে সোনার ব্যবহার আমদানির মাধ্যমে পূরণ করা হয়।
জুয়েলারি সেগমেন্টে সংগঠিত সেক্টরের আধিপত্য বাড়ছে
ভারতে গয়না কেনার প্রধান কারণ হল বিয়ে এবং উৎসব। ব্রাইডাল জুয়েলারির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। মোট গহনার চাহিদায় এর অংশ ৫৫ শতাংশ। প্রতিদিনের পরার মতো গয়নার চাহিদা প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ।
ব্রোকারেজ হাউস মনে করছে, গ্রাহকদের কেনাকাটায় বড় ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গয়না কেনার জন্য লোকেরা অসংগঠিত থেকে সংগঠিত ক্ষেত্রের দিকে মুখ ফেরাচ্ছে। এর ফলে ওই সেক্টরে ব্র্যান্ডগুলি নিজেদের আরও শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে। ক্যারেটোমিটার এবং জুয়েলারি এক্সচেঞ্জ স্কিম, প্রামাণিকতার শংসাপত্র, বাইব্যাক স্কিমের সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। সূত্র: এবিপি নিউজ
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।
আরও পড়ুন: একাধিক ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি! তালিকায় ধানও, লাভ হবে বাংলার?