নয়াদিল্লি: বছর  দুয়েক আগে টাটা অলট্রোজ (Tata Altroz) মডেল দেখেছিলাম আমরা। তখনই আমরা বলেছিলাম এই গাড়িতে অটোমেটিক গিয়ারবক্সের ভ্যারিয়েন্ট প্রয়োজন। কারণ এত দাম দিয়ে কেনা প্রিমিয়াম হ্যাচব্যাক (hatchback) সেগমেন্ট ক্রেতাদের কাছে শুধুমাত্র স্টাইলিং (styling) বা মাইলেজ (milage) বা জায়গার (space) জন্য় গুরুত্ব পায় এমন না। তার সঙ্গেই ফিচার এবং আনুষাঙ্গিক সুবিধে কতটা সেটাও গুরুত্ব পায়। ডিজাইন, সুরক্ষার বিষয় (safety rating)-এর জন্য টাটা অলট্রোজ (Tata Altroz) ইতিমধ্যেই ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। এখন অটোমেটিক গিয়ারবক্সের (automatic gearbox)-এর কল্যাণে সেই চাহিদা আরও বাড়বে। এটা চালিয়ে কেমন লাগবে সেটা বলার আগে দেখে নেওয়া যাক কী কী সুবিধে (Specification) রয়েছে নয়া এই মডেলে।




এক নজরে:
অলট্রোজ ডিসিএ (Altroz DCA)-এ রয়েছে ডুয়াল ক্লাচ অটোমেটিক (dual clutch automatic)। যদিও একটি ইঞ্জিন ভ্যারিয়েন্টেই এই সুবিধে রয়েছে। ৮৬ বিএইচপি ১.২১ পেট্রোল ইঞ্জিন (1.21 petrol)-এর মডেলে অটোমেটিক গিয়ারবক্সের অপশন মিলবে। টার্বো বা ডিজেল ইঞ্জিন ভ্যারিয়েন্টে এই অপশন নেই।  সংস্থার সূত্রে জানা গিয়েছে, টার্বো ইঞ্জিন ও ডিজেলে এই গিয়ার অপশন দিলে দাম অনেক বেড়ে যেত। যা প্রাইস সেগমেন্টের বাইরে যেতে পারত, সেই ভেবেই এই সিদ্ধান্ত। এই মডেলে এই গিয়ার অপশন রাখা যুক্তিযুক্ত হয়েছে কারণ প্রিমিয়াম (premium) রেঞ্জের গাড়িতেই একমাত্র এটি থাকে। এই দামের সেগমেন্টে সাধারণত স্ট্যান্ডার্ড টর্ক কনভার্টর (standard torque converter) বা CVT বা AMT গিয়ার অপশন দেয়।


DCT কী?
DCT-তে দুটি ক্লাচ (clutch) থাকে। একটি জোড় সংখ্য়ার গিয়ারের জন্য অন্যটি বিজোড় সংখ্যার গিয়ারের জন্য। এই প্রযুক্তি অন্য অটোমেটিক অপশনের চেয়ে বেশি মাইলেজ পাওয়া যায় এবং গিয়ার শিফটিংও ভাল হয়।  




কত দাম:
Altroz DCA সবচেয়ে সস্তা ডুয়াল ক্লাচ অটোমেটিক গাড়ি, কারণ এর সবচেয়ে দামি ভ্যারিয়েন্টের দামও দশ লক্ষের নীচে। প্রস্তুতকারক সংস্থা টাটার তরফে দাবি করা হয়েছে, ভারতের রাস্তার জন্য এবং ভারতীয় আবহাওয়ায় চালানোর জন্য উপযুক্ত করেই এটি আনা হয়েছে। অ্য়াকটিভ কুলিং, মেশিন লার্নিং (machine learning) এবং shift by wire-এর মতো উচ্চপ্রযুক্তির ব্যবহার রয়েছে এতে। 


খুঁটিনাটি:
দামের দিক থেকে এটি পছন্দ হবেই। কিন্তু চালিয়ে বোঝা যাবে এটা ঠিক কীরকম। শহরের ভারী ট্রাফিক এবং হাইওয়ের চালানোর পর গাড়িটির দক্ষতা সম্পর্কে মোটামুটি আন্দাজ পাওয়া যায়। শহরের ব্যস্ত রাস্তায় খুব ভাল গিয়ার শিফট (Gear Shift) হয়, কোনও ঝাঁকুনি (jerk) বা আটকায় (lag) না। গাড়ির অল্প গতি থাকার অত্যন্ত ভাল কাজ করে এই গিয়ার প্রযুক্তি। বিশেষ করে শহরের যানজটে চালানোর জন্য অত্যন্ত উপযোগী এটি। ডুয়াল ক্লাচ গিয়ার প্রযুক্তি গাড়ি চালানো অনেকটাই আরামের করে দেয়। হঠাৎ করে গতি বাড়িয়ে ওভারটেক করার ক্ষেত্রেও সমস্যা হয় না।  সবমিলিয়ে শহরের রাস্তায় চালানোর জন্য উপযুক্ত গাড়ি এটি। প্য়াডল শিফটার (paddle shifter) না থাকলেও ম্য়ানুয়াল শিফটারের মাধ্যমে সহজেই কাজ চলে যায়। বিশেষ করে হাইওয়েতে গাড়ি চালানোর জন্য বিশেষভাবে উপযুক্ত এটি। হাইওয়ের ক্ষেত্রে এই গাড়ি চালিয়ে আরাম পাবেন চালক। 




মাইলেজ:
ম্যানুয়ালের থেকে খুব বেশি পার্থক্য নয় DCA-এর। লিটারে ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার আশা করা যায়। Altrox DCA-তে ওয়েট ক্লাচ (wet clutch) ব্যবহার করা হয়েছে। যার ফলে গরম হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি কম এবং অনেক বেশি ভরসাযোগ্য। দিনের সবচেয়ে গরম সময়ে যানজটের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ চালিয়েও এই গাড়িতে সমস্যা হয়নি। ফলে ভারতের রাস্তা ও আবহাওয়ার জন্য এটি পর্যাপ্ত বলেই আপাতত মনে করাই যায়।


আরও সুবিধা:
এই মডেলে রয়েছে অটো পার্ক মোড (auto park mode)। গাড়িটি পার্ক মোডে না দিয়ে গাড়ি থেকে চালক নেমে পড়লে এই মডেল নিজে থেকেই ওই মোডে নিয়ে যাবে। নতুন অপেরা ব্লু (Opera Blue) রং বেশ ভাল হয়েছে। 




একাধিক ভ্যারিয়েন্ট:
XM+, XT, XZ অ্যান্ড XZ+ এই কয়েকটি ভ্যারিয়েন্ট থাকছে এই মডেলে। ম্যানুয়ালের চেয়ে Altroz DCA-এর দাম মোটামুটি কমবেশি এক লক্ষ টাকার মতো বেশি। গাড়ি চালানোর আরাম এবং আরও কিছু সুবিধার দিকে তাকিয়ে এই টাকাটা খুব বেশি নয়। অটোমেটিক গাড়ি কেনার লক্ষ্য থাকলে আপনার জন্য অত্যন্ত ভাল অপশন হয়ে পারে Tata Altroz DCA.


শেষকথা:
গিয়ার শিফটিং (gear shifting), দামের সেগমেন্ট এবং ডিজাইনের দিক থেকে ভাল। তবে টার্বো ইঞ্জিন ভার্সনে DCA-এর অপশন না থাকাটা ভাল নয়। 



আরও পড়ুন: এই নিয়ে তিনবার! ফের ইলেকট্রিক স্কুটারে আগুন, সুরক্ষা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন