কলকাতা: দূষণ কমাতে হবে। তার জন্য এড়াতে হবে জীবাশ্ম জ্বালানি। তার জন্য ভরসা প্রায় দূষণহীন বা খুব দূষণ করবে এমন ইঞ্জিন। এবার সেই পথ দেখাতেই ঝাড়খণ্ড সরকারের সঙ্গে মউ চুক্তি সেরে ফেলল টাটার সংস্থা TCPL Green Energy Solutions (TCPLGES)। এই সংস্থাটি Tata Cummins Private Limited (TCPL)-এর একটি wholly owned সাবসিডিয়ারি। টাটা মোটরস প্রাইভেট লিমিটেড (Tata Motors Limited) এবং Cummins Inc. USA- এর ৫০-৫০ যৌথ উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এই সংস্থাটি। প্রায় দূষণহীন ইঞ্জিন মোটর উৎপাদনের কারখানা তৈরি জন্য  TCPL Green Energy Solutions ঝাড়খণ্ড সরকারের সঙ্গে মউ (MoU) চুক্তি করেছে।


আগামী কয়েক বছর ধরে ৩৫০ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগ করবে TCPL Green Energy Solutions (TCPLGES)। কেন এই বিনিয়োগ? Fuel-agnostic powertrain solutions তৈরির জন্য়। এটি ইঞ্জিন তৈরির একটি বিশেষ কৌশল, বিভিন্ন ধরনের জ্বালানি ব্যবহার করে চলতে পারে এই ইঞ্জিন। এরই অধীনে পড়ে  hydrogen Internal Combustion Engine (H-ICE), ব্যাটারি ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল সিস্টেম, ফুয়েল সেল ইলেকট্রিক ভেহিক্যাল সিস্টেম। H-ICE- আদতে এমন ধরনের ইঞ্জিন যা Internal Combustion Engine এর মাধ্য়মে হাইড্রোজেন পুড়িয়ে শক্তি উৎপাদন করে। ফুয়েল সেল হাইড্রোজেন -আদতে হাইড্রোজেন থেকে বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদন করে, যা একেবারেই দূষণহীন শক্তি উৎপাদনে সক্ষম। 


কবে থেকে শুরু উৎপাদন:
২০২৪ সাল থেকে এই কারখানায় ধাপে ধাপে উৎপাদন শুরু হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, প্রথমে H-ICE উৎপাদন শুরু হবে। তারপরে ব্যাটারি ইলেকট্রিক কম্পোন্যান্টস এবং ফুয়েল ডেলিভারি সিস্টেম সংক্রান্ত উৎপাদন শুরু হবে।


ঝাড়খণ্ড সরকারের শিল্প সংক্রান্ত দফতর এবং কামিন্স গ্রুপ অফ ইন্ডিয়ার CFO-এর মধ্যে এই মউ সাক্ষর হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, টাটা মোটরসের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর গিরিশ ওয়াগ এবং কামিন্স ইন্ডিয়ার ইঞ্জিন ব্যবসার ভিপি নীতিন জিরাফে।


ভারতে কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমানোর লক্ষ্যে নানা স্তরে কাজ শুরু হয়েছে। ঝাড়খণ্ড ভারতের অন্যতম প্রথম সারির একটি রাজ্য যেটি বাণিজ্যিক যানবাহনে ব্যবহারের জন্য় আধুনিক পরিকাঠামো তৈরির উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। এই বিনিয়োগের ফলে দূষণহীন যানবাহন তৈরির কাজকে আরও একধাপ এগিয়ে দেবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি, এই বিনিয়োগের ফলে বহু চাকরির সুযোগ তৈরি হবে। 


ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন বলেন, 'জলবায়ু বদলের সমস্যা মোকাবিলার জন্য ভারত লড়াই করছে। ২০৭০ সালের মধ্যে ভারতে কার্বন ফুটপ্রিন্ট শূন্য করার যে লক্ষ্য তাতে এটাই ঝাড়খণ্ডের একটা অবদান হতে চলেছে। নতুন পরিকাঠামো ও প্রযুক্তি তৈরির পীঠস্থান হতে চলেছে ঝাড়খণ্ড।'


টাটা মোটরসের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর গিরিশ ওয়াগ বলেন, '২০৪৫ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন শূন্যে নামিয়ে আনতে চায় টাটা মোটরস। কারখানা স্থাপনের জন্য আমরা ঝাড়খণ্ড সরকারের সঙ্গে মউ সাক্ষর করেছি। আমরা হাইড্রোজেন ইন্টারনাল কমব্যাসন ইঞ্জিন দিয়ে উৎপাদন শুরু করব।'


আরও পড়ুন: নতুন Karizma XMR নিয়ে আসছে হিরো,প্রকাশ্যে এল টিজার