নয়াদিল্লি: দেশ জুড়়ে নারী নির্যাতনের ঘটনায় ইতি পড়ার নাম নেই। সেই আবহেই রাজধানীর নামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভয়ঙ্কর অভিযোগ সামনে এল। ক্যাম্পাসের মধ্যে গণধর্ষণের চেষ্টার অভিয়োগ তুললেন বি.টেক পড়ুয়া এক তরুণী। চার জন মিলে তাঁকে গণধর্ষণের চেষ্টা করে, তাঁর জামা-কাপড় ছিঁড়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তিনি। এই ঘটনায় থানায় অভিযোগদ দায়ের হয়েছে। (South Asian University)

Continues below advertisement

দিল্লির সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি-তে (SAU) এই ঘটনা ঘটেছে, যা কি না একটি নামী আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়। আটটি SAARC দেশ, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মলদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কার পারস্পরিক সহযোগিতায় সেটি চলে। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দক্ষিণ দিল্লির ময়দান গরহীতে, ইন্দিরা গাঁধী ন্যাশনাল ওপেন ইউনিভার্সিটির পাশেই স্থায়ী ক্যাম্পাস রয়েছে SAU-এর। (Delhi B.Tech Student Assault Case)

SAU-এর প্রথম বর্ষের বি.টেক ছাত্রী চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অংশে নির্মাণকার্য চলছে। রবিবার সেখানে নিয়ে গিয়ে তাঁকে গণধর্ষণ করার চেষ্টা হয়। তাঁকে অশালীন ভাবে স্পর্শ করা হয়, ছিঁড়ে দেওয়া হয় পরনের জামাকাপড়। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার দুপুর ৩টে নাগাদ ময়দান গরহী থানায় ফোনে অভিযোগ জমা পড়ে। সেই মতো পুলিশের একটি টিম পৌঁছয় SAU-তে। প্রথমে শ্লীলতাহানির মামলা দায়ের করেছিল পুলিশ। পড়ুয়ার বয়ানের ভিত্তিতে পরে গণধর্ষণের চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়। 

Continues below advertisement

কে বা কারা এই ঘটনায় যুক্ত, তা এখনও পর্যন্ত পরিষ্কার নয়। তবে পুলিশ সূত্রে খবর, বেশ কিছু দিন ধরেই ওই তরুণীর কাছে নানা ধরনের ইমেল আসছিল। যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার জন্য মেসেজও পাচ্ছিলেন অজানা নম্বর থেকে। শুধু তাই নয়, AI-এর সাহায্য়ে মেয়েটির ছবি বিকৃত করে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। মেয়েটির এক বন্ধুও পুলিশের সামনে মুখ খুলেছেন। অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নিরাপত্তারক্ষীর নামও আছে বলে জানা যাচ্ছে।

পুলিশ সূত্রে খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্র সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। পড়ুয়ার বয়ানের ভিত্তিতে ওই এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে এমন ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। সোমবার পড়ুয়াদের একাংশ বিক্ষোভ দেখান। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়, 'যৌন হিংসার ঘটনার তীব্র নিন্দা করছে সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি। আমরা পড়ুয়াদের পাশে আছি, তাঁদের সব ধরনের সাহায্য় করা হবে। যৌন হেনস্থার সঙ্গে কোনও রকম আপস করা হবে না, নারী নির্যাতন বরদাস্ত করা হবে না'। তদন্তে পুলিশকে তাঁরা সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছেন বলে জানা গিয়েছে। একটি অভ্যন্তরীণ কমিটিও গঠন করা হয়েছে। মঙ্গলবার ক্লাস বন্ধ রয়েছে সেখানে। মেয়েটির কাউন্সেলিং চলছে বলে জানা গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

এই ঘটনায় নতুন করে দিল্লিতে নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। কারণ একদিন আগেই দিল্লির আদর্শ নগর এলাকায় হোটেলে MBBS পড়ুয়া এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগ সামনে আসে। হরিয়ানার বাসিন্দা ১৮ বছর বয়সি ওই তরুণী ডাক্তারি পড়তে রাজধানীতে আসেন। পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে বেসরকারি কলেজের ডাক্তারি পড়ুয়াকে গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরেও পরিস্থিতি তপ্ত হয়ে রয়েছে।