বেঙ্গালুরু: তেলঙ্গনার ওয়ারাঙ্গলে কুয়োয় ৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্য উদ্ঘাটন পুলিশের। উল্লেখ্য, ওয়ারাঙ্গলে গত ২১ ও ২২ মে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা সামনে আসে। একটি কারখানার পাশে কুয়ো থেকে মোট নয়টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনা ঘিরে সমগ্র এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে ওয়ারাঙ্গল রুরালে।

এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের কিণারা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ। এক মহিলাকে খুনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে বিহারের এক যুবক খাবারে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে নয়জনকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ।
এই ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্জয়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের জেরায় জানা গিয়েছে, নয়জনকে নয়, দশজনকে খুন করেছে অভিযুক্ত। এক ব্যক্তির ১০ জনকে খুনের এই ঘটনায় সবাই শিউরে উঠেছেন। ওয়ারাঙ্গলের পুলিশ কমিশনার বলেছেন, এই ঘটনার তদন্তের জন্য পুলিশের ছয়টি দল গঠন করা হয়েছিল। জানা গেছে, গিসুকোন্ডা থানার গোরেকুন্ঠায় বস্তা তৈরির কারখানায় কাজ করত মকসুদ আলম নামে এক ব্যক্তির পরিবার। তাঁর স্ত্রীর দিদির মেয়ে রফিকাও পশ্চিমবঙ্গ থেকেই এসেছিলেন। তিনি প্রথমে অর্থ রোজগারের জন্য সঞ্জয়ের রান্নার কাজ করতেন। পরে তিনিও বস্তা তৈরির কারখানায় কাজ করতেন। মকসুদের বন্ধু সঞ্জয়ের সঙ্গে রফিকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছিল। রফিকা বিয়ের জন্য চাপ দেন। সঞ্জয় তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
সঞ্জয় কুমার যাদব নামে অভিযুক্ত রফিকাকে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে গিয়েছিল এবং রফিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেও বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু ফেরার সময় পানীয়তে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে দিয়েছিল। এরপর রফিকা সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়লে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর রেললাইনে দেহ ফেলে দিয়েছিল সঞ্জয়। এরপর অন্য ট্রেনে করে ফিরে আসে। যদিও এই ঘটনার আরও তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।

মকসুদের পরিবার সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে রফিকাকে হত্যার অভিযোগ তুলেছিল। রফিকা কোথায় গেল, তা নিয়ে সঞ্জয়কে জিজ্ঞাসাবাদও করছিল। সেইসঙ্গে পুলিশকে এই ঘটনার কথা জানানোর কথাও বলেছিল মকসুদের পরিবার। পুরো ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে মকসুদ গত ১৮ মে ওষুধ দোকান থেকে প্রচুর ঘুমের ওষুধ সংগ্রহ করে এবং ২০ মার্চ মকসুদের বাড়িতে এসে খাবারে সেই ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিল। সঞ্জয় তার প্রতিবেশী শ্রীরাম ও শ্যামের খাবারেও ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিল। এরপর সবাই বেহুঁশ হয়ে গেলে তাঁদের দেহগুলি বস্তায় ভরে কুয়োতে ফেলে দেয় সে। জলে ডুবে সবার মৃত্যু হয়। এভাবে একটি হত্যা ধামাচাপা দিতে সঞ্জয় আর নয়জনকে খুন করে। পুলিশ সঞ্জয়কে গ্রেফতার করেছে। ময়নাতদন্তে সকলের জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।