বাদুড়িয়া: কলকাতা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূর। উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া থানার আরবেলিয়া গ্রাম। এখানেই শৈশব কেটেছে অভিনেতা বিশ্বনাথ বসুর। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় উমপুন তার বিধ্বংসী ছাপ রেখে গিয়েছে এই এলাকায়। একদিনের ভয়াবহতায় তছনছ হয়ে গিয়েছে অভিনেতার স্মৃতিবিজড়িত গ্রাম।




একরাশ উৎকণ্ঠাকে সঙ্গী করে, বিশ্বনাথের সঙ্গেই এবিপি আনন্দ হাজির হয়েছিল তাঁর গ্রামের বাড়ি বসুবাটিতে।

বিশ্বনাথের বাড়িতে বড় করে দুর্গা পুজো হয়। পুজোয় এখানে চলে আসেন তিনি। উমপুনের দাপটে উড়ে গিয়েছে বাড়ির দুর্গাদালানের চাল। চারিদিকে ধ্বংসের ছবি। সেখান থেকে টুকরো টুকরো স্মৃতি হাতানোর চেষ্টা করছেন তিনি। দুর্গাদালান থেকে বেরোলেই বোধন বাগান। এই বাড়ির দুর্গাপুজোর সঙ্গে এই বাগানের ওতোপ্রোত যোগ। সেই বাগানের ওপর যেন কোনও যুদ্ধবিমান বোমা বর্ষণ করেছে।



পথে দেখা হল দুর্গাপুজোর পুরোহিতের সঙ্গেও। বিশ্বনাথ কথা বললেন। অবস্থার খোঁজখবর নিলেন। বাড়ি থেকে বেরিয়ে চারমন্দির পুকুর এলাকা। বিশ্বনাথ বললেন, ‘বাবা গল্প বলত। এই চাঁপা গাছে ব্রহ্মদৈত্য আছে। সম্রাট বাবরের সময় কালের গাছ। সেই গাছ মূল সমেত উপড়ে গেছে।‘ যোগ করলেন, ‘বাড়ির ফটকের পাশে এই জায়গায় দুর্গাপুজোর ভোগ রান্না হয়। সেখানে এখন শুধু ভগ্নাবশেষ।‘



আরবেলিয়া গ্রামে রয়েছে আরেক বসু পরিবার। প্রবল ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত তাঁদের বাড়িও। ভেঙে পড়েছে বহু গাছ। বিশ্বনাথের পৈত্রিক বাড়ির অদূরে কিছুটা এগোলেই বটতলা। এখানে বিশ্বনাথের ছোটবেলার অনেক স্মৃতি জড়িয়ে। আরবেলিয়ার এই বট গাছ প্রায় এক হাজার বছরের পুরনো গাছ। বিধ্বংসী ঝড়ে ভেঙে গেছে।

গ্রামের তিন মন্দির পাড়া। বয়স্ক থেকে ছোট। গ্রামের ছেলেকে কাছে পেয়ে দুঃখের কথা উজাড় করে দিচ্ছে তারা। কেবলওলা মই নিয়ে আসছে। বিশ্বনাথ বলছেন, ‘কারেন্ট তো নেই। কেবল কোথায় দেবে গো?’ বিধ্বংসী ঝড়ের পর কেটে গিয়েছে প্রায় ৪ দিন। কবে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে এই গ্রাম। উদ্বিগ্ন বিশ্বনাথ কবিতা আওড়াচ্ছেন, ‘ভালো মন্দ যাহাই আসুক, সত্যেরে লও সহজে।‘