অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: প্রজননের পর প্রকৃতির বুক্তে ছেড়ে দেওয়া হল ১০টি হোয়াইট ব্য়াকড (white backed) প্রজাতির শকুন (vulture)। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের অন্তর্গত 'রাজাভাতখাওয়া ভালচার কনসার্ভেশন ব্রিডিং সেন্টার' (rajabhatkhawa vulture conservation breeding centre) থেকে এদের প্রকৃতির কোলে ফিরিয়ে দিতে পেরে অনেকটাই নিশ্চিন্ত বন দফতর। ২০০৬ সালে বম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটি (bombay natural history society) এবং পশ্চিমবঙ্গ বন দফতরের উদ্যোগে রাজভাতখাওয়ায় এই শকুন প্রজনন কেন্দ্র চালু হয়েছিল। ক্রমে হারিয়ে যেতে থাকা শকুনের বংশবৃদ্ধি ও প্রকৃতিকে ফের তাদের বাসযোগ্য করে তোলাই লক্ষ্য ছিল এই ব্রিডিং সেন্টারের। 


কী হল? 


এদিন রাজাভাতখাওয়ার ২২ মাইল ওয়াচ টাওয়ার এলাকার 'রিলিজ অ্যাভিয়ারি' থেকে ১০ টি হোয়াইট ব্যাকড প্রজাতির শকুন খোলা আকাশে ছেড়ে দেওয়া হয়। 'অ্যাভিয়ারি'-র দরজা খোলার সময় সেখানে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা অপূর্ব সেন-সহ বন দফতরের অন্যান্য কর্তা হাজির ছিলেন। আসেন বম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির মুখ বিজ্ঞানী বিভু প্রকাশ। সকলের উপস্থিতিতে শরীরে ট্রান্সমিটার বসানো শকুনগুলিকে উড়িয়ে দেওয়া হয়। বন দফতর সূত্রে খবর, রাজাভাতখাওয়ার প্রজনন কেন্দ্রে এই মুহূর্তে ১৪৬টি তিন প্রজাতির শকুন রয়েছে। যার মধ্যে হোয়াই ব্যাকড-র সংখ্যা ৯৩ টি। সূত্রের খবর, ক্রমশ শকুনের সংখ্যা বাড়তে থাকায় এই প্রজনন কেন্দ্রে শকুনের জন্য আরও দুটো খাঁচা বসানো হচ্ছে। তবে রাজাভাতখাওয়ার প্রজনন কেন্দ্রের বাইরে অন্যত্রও এখন একাধিক শকুন দেখা যাচ্ছে বলে বন দফতর সূত্রের খবর। এই ভাবে শকুনের সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়ে অনেকটাই খুশি বন দফতর। 
উল্লেখ্য, হরিয়ানার পিঞ্জরের পর ২০১৯ সালের ১৭ ডিসেম্বর রাজাভাতখাওয়ার প্রজনন কেন্দ্র থেকেই প্রথম শকুন উড়িয়ে দেশের মধ্যে নজির গড়েছিলেন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনকর্মীরা। সেই সময় বক্সার এই প্রজনন কেন্দ্র থেকে ছটি 'হিমালয়ান গ্রিফন' প্রজাতির শকুন ছাড়া হয়। এর পর ২০২১ সালের ৯ জানুয়ারি বক্সার জঙ্গলের ২২মাইল ওয়াচ টাওয়ারের কাছে তৈরি ‘রিলিজ অ্যাভিয়ারি’থেকে মুক্ত করা হয়েছিল আটটি শকুন। যার মধ্যে ছয়টিই ছিল 'হিমালয়ান গ্রিফন' প্রজাতির। বাকি দুটি 'হোয়াইট ব্যাকড' প্রজাতির।


সেই ট্রেন্ডই চলছে..


কার্যত একই ঘটনা ঘটল এদিন। এই উপলক্ষ্যে রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের ভূমিকার ধন্যবাদ জানান  বিএনএইচএস-র ডিরেক্টর বিভাস পাণ্ডব। শকুন রক্ষার্থে এবং ক্ষতিকারক 'ডাইকোফ্লিনাক ড্রাগস' নিষিদ্ধ করার যে ভূমিকা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার নিয়েছে, তারই প্রশংসা করেন  বিএনএইচএস-র ডিরেক্টর। প্রতিবেশি বাংলাদেশ এবং নেপালের ভূমিকাও যে ভাবে শকুন রক্ষায় এগিয়ে এসেছে, তারও প্রশংসনা করেন বিভাস।


আরও পড়ুন:এসএমএস পড়ে ফেলে, টাকা কেটে নেয় ! অবিলম্বে মোবাইল থেকে সরান এই অ্যাপগুলি