সত্য়জিৎ বৈদ্য়, হিন্দোল দে ও সুদীপ্ত আচার্য, কলকাতা: চাকরির দাবিতে কালীঘাটে (Kalighat) ফের বিক্ষোভ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ২০০৯-এর প্রাথমিক চাকরি প্রার্থীদের (TET Primary Agitation)। গতকাল, শনিবার পুলিশ নবান্ন অভিযান আটকে দেওয়ার পর আজ মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির উদ্দেশে যাওয়ার চেষ্টা চাকরিপ্রার্থীদের। যতীন দাস পার্ক মেট্রো স্টেশনের বাইরে আটকে দিলে পুলিশের সঙ্গে চাকরিপ্রার্থীদের ধস্তাধস্তি। তোলা হল প্রিজন ভ্যানে।


কী ছবি?
শনিবার নবান্ন অভিযান করেছিলেন চাকরিপ্রার্থীরা। আর রবিবার, মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করলেন তাঁরা।  ২০০৯-এর টেট উত্তীর্ণ, দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাকরিপ্রার্থীদের নবান্ন অভিযান ঘিরে শনিবার, উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল পরিস্থিতি। রবিবার তাঁদেরই কালীঘাটে মুখ্য়মন্ত্রীর বাড়ি যাওয়ার চেষ্টার ঘটনায় বাড়ল আরও উত্তেজনা। হাজরা মোড়ে জমায়েত, পুলিশের ধরপাকড়, ব্য়াপক ধস্তাধস্তির পর বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থীকে আটক করে পুলিশ। দেবাশিস বিশ্বাস নামে এক চাকরিপ্রার্থী বললেন, 'কাল আমরা গেছিলাম, থাকতে দেয়নি...তাই আজ মুখ্য়মন্ত্রীর বাড়ি যেতে চেয়েছিলাম...।' ২০০৯ সালে দুই ২৪ পরগনা, মালদা ও হাওড়া, এই ৪ জেলায়, শিক্ষক নিয়োগের জন্য পরীক্ষা নেয় জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। কিন্তু ২০১১-তে নতুন সরকার আসার পর বাতিল হয়ে যায় নিয়োগ প্রক্রিয়া। পরবর্তীকালে, মেধাতালিকা অনুযায়ী ৩ জেলার চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি হয়। কিন্তু বাদ পড়েন দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাকরিপ্রার্থীরা। দীর্ঘদিন ধরে আদালতে মামলা চলার পর, ২০২২-এর ১৫ নভেম্বর, ২০০৯-এর প্রাথমিকের দক্ষিণ ২৪ পরগনার চাকরিপ্রার্থীদের ১ হাজার ৫০৬ জনের নামের প্যানেল প্রকাশ করে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, ২০০৯-এর প্রাথমিকের দক্ষিণ ২৪ পরগনায় শূন্য পদ ছিল ১ হাজার ৮৩৪টি। ১ হাজার ৫০৬ জনের নামের প্যানেল প্রকাশিত হওয়ায় বাকি রয়েছে এখনও ৩২৮টি শূন্যপদ। চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, এই ৩২৮ এবং মোট শূন্যপদের পাঁচ শতাংশ অর্থাৎ আরও ৯২ জন মিলে মোট ৪২০ জনের প্যানেল এখনও প্রকাশ করেনি DPSC। ১০ অগাস্ট, হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশের পর ১ হাজার ৫০৬ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলেও, এখনও বিশ বাঁও জলে বাকিদের ভবিষ্যৎ!!! এই প্রেক্ষাপটে, শনিবার নবান্ন অভিযানের ডাক দেন চাকরিপ্রার্থীদের একাংশ। আর রবিবার, ছুটির দিন মুখ্য়মন্ত্রী বাড়িতে থাকতে পারেন, সেই ভেবে, কালীঘাটের উদ্দেশে রওনা দেন ২০-২৫ জন চাকরিপ্রার্থী। কিন্তু যতীন দাস পার্ক মেট্রো থেকে বেরিয়ে, হাজরা মোড়ে জড়ো হতেই চাকরিপ্রার্থীদের আটকে দেয় পুলিশ। শুরু হয় ধস্তাধস্তি।

যা হল...
শেষমেষ ১৪৪ ধারার কারণ দেখিয়ে, চাকরিপ্রার্থীদের আটক করে পুলিশ। তবে গোটা পর্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। ছেড়ে দেয়নি সিপিএমও। পাল্টা দিয়েছে তৃণমূল। অন্য়দিকে, হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে, তিনদিন ধরে, গান্ধীমূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ-আন্দোলনে বসছেন ২০০৯-এর প্রাথমিকের দক্ষিণ ২৪ পরগনায় চাকরিপ্রার্থীদের অপর এক অংশ। রবিবার ছিল অবস্থান-বিক্ষোভের তৃতীয় দিন। কিন্তু, শনিবারের ঘটনার পর, আইন-শৃঙ্খলার কারণ দেখিয়ে, এদিন আন্দোলনকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ। এনিয়ে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান আন্দোলনকারীরা। তাঁদের বক্তব্য, বিকেল ৫টা পর্যন্ত বসার অনুমতি থাকলেও পুলিশ তাঁদের দুপুর ২টোর বেশি বসতে দিতে বাধা দেয়। শেষমেষ, বিকেল ৫টা পর্যন্তই অবস্থান-বিক্ষোভ করেন চাকরিপ্রার্থীরা।


আরও পড়ুন:কাশ্মীর-অরুণাচলে G20 বৈঠকে পাকিস্তান-চিনের আপত্তি ? কড়া বার্তা প্রধানমন্ত্রীর : সূত্র PTI