বিধায়ককে গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিধানসভাকে জানানোই বিধি। বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে গ্রেফতারের পর ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও জানানো হয়নি বিধানসভাকে।বিধায়ককে গ্রেফতারির পর এ বিষয়ে না জানানোয় ক্ষুব্ধ অধ্যক্ষ। কেন জানানো হয়নি? প্রশ্ন তুলে পাল্টা সিবিআইকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। চিঠির সঠিক জবাব না পেলে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি।  


নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আরও বিপাকে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক। জীবনকৃষ্ণ সাহার ৮টি ব্য়াঙ্ক অ্য়াকাউন্ট ফ্রিজ করে দিল সিবিআই। এর মধ্য়ে ৫টি বেসরকারি ও ৩টি সরকারি ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্ট রয়েছে। ব্যাঙ্কে চিঠি পাঠিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হল লেনদেন। সিবিআই সূত্রে খবর, ৫টি বেসরকারি অ্য়াকাউন্টের মধ্য়ে ৪টি অ্য়াকাউন্ট মুর্শিদাবাদ ও একটি বীরভূমের সাঁইথিয়া ব্রাঞ্চের। এছাড়া জীবনকৃষ্ণের কোথায়, কি সম্পত্তি রয়েছে জানতে রেজিস্ট্রি অফিসেও চিঠি পাঠাচ্ছে সিবিআই। 


গত ১৪ এপ্রিল নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে, মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে হানা দেয় সিবিআই। এদিন দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ, বড়ঞার আন্দিতে, বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে যায় সিবিআইয়ের টিম। চলে তল্লাশি। সূত্রের খবর, জীবনকৃষ্ণ সাহাকে অফিসে বসিয়ে, দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করেন CBI আধিকারিকরা। বাইরে মোতায়েন ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনী। CBI সূত্রে খবর, নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে বিভিন্ন জনের মুখে উঠে এসেছে, বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের নাম। অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন তিনি। শুধু তাই নয়, চাকরিপ্রার্থীদের নাম সুপারিশ করতেন বলেও জীবনকৃষ্ণ সাহার বিরুদ্ধে অভিযোগ। 


বাড়িতেই তৃণমূল বিধায়ককে নজরবন্দি করে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ। সঙ্গে ম্যারাথন তল্লাশি! গভীর রাতে পুকুরে জল ছেঁচে বিধায়কের মোবাইল ফোনের খোঁজ! নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বড়ঞার তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে সিবিআইয়ের তল্লাশি অভিযান ঘিরে চূড়ান্ত নাটকীয় পরিস্থিতি! যে ঘটনা রীতিমতো তোলপাড় ফেলে দিয়েছে রাজ্য-রাজনীতিতে। 


দীর্ঘ সময় ধরে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার আন্দির বাড়িতে সিবিআইয়ের তল্লাশি অভিযান চলে। বাড়িতেই নজরবন্দি করা হয় বিধায়ককে। চলে ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ। সিবিআই সূত্রে খবর, প্রথমে তদন্তে অসহযোগিতা করলেও, পরদিন সকাল থেকে মুখ খুলেছেন জীবনকৃষ্ণ। তাঁর কথা মতো এদিন বিধায়কের বাড়ি লাগোয়া ঝোপে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় ৬টি ব্যাগ। সিবিআই সূত্রে দাবি, প্রতিটি ব্যাগই নতুন। ব্যাগগুলি গতকাল অথবা দিনদুয়েক আগে ঝোপের মধ্যে ফেলা হয়েছিল বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অনুমান। ব্যাগে মিলেছে নিয়োগ সংক্রান্ত বহু নথি, ফাইল।  রাইস মিলের পারিবারিক ব্যবসা রয়েছে তৃণমূল বিধায়কের। বেলা পৌনে ১টা নাগাদ বিধায়কের বাড়ি লাগোয়া সেই রাইস মিলেও যান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।  


সিবিআই সূত্রে খবর মেলে,  জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন বিকেল ৫টা নাগাদ নিজের দুটি মোবাইল ফোন ছুড়ে বাড়ির পুকুরে ফেলে দেন জীবনকৃষ্ণ। শ্যালো পাম্প এনে রাত সাড়ে ১০টা থেকে পুকুর ছেঁচে জোড়া ফোনের খোঁজে শুরু হয় তল্লাশি। সকালে আরও দুটি পাম্প এনে জল তোলার কাজ শুরু হয়। ফোনের হদিশ পেতে সকাল সোয়া ৮টা নাগাদ আনা হয় কমপ্যাক্ট স্ক্যান ডিভাইস। এরপর সকাল সোয়া ৯টা নাগাদ পুকুরে নেমে তল্লাশি শুরু করেন পাম্প কর্মীরা। এরপর প্রায় বিকেল নাগাদ দুটি ফোন উদ্ধার হয়। পাশাপাশি গ্রেফতারও হন জীবনকৃষ্ণ।