কলকাতা: '৬ বছর চাকরি করেই ৩৬ লক্ষ টাকার গয়না!' গরুপাচারকাণ্ডে ধৃত সায়গলের মামলায় বিস্মিত বিচারক। '২০১৪-র টেটে পরীক্ষা দিয়ে স্কুলে চাকরি করেন সায়গলের স্ত্রী'। সায়গলের কাছে বাজেয়াপ্ত গয়নার উৎস নিয়ে সওয়াল আইনজীবীর। জামিনের ব্যবস্থা করুন, আসানসোলের সিবিআই আদালতে সওয়াল কেষ্টর। তিহাড় জেল থেকেই ভার্চুয়াল শুনািতে জামিনের আবেদন অনুব্রতর । 'হাইকোর্ট আবেদন খারিজ করেছে, আগে ওখানে জামিন পান'। ভার্চুয়াল শুনানিতে কেষ্টকে জানিয়ে দিলেন বিচারক । ফের তিহাড়ে অনুব্রত ও সায়গলকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় সিবিআই। ২জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়েছে? নথি পড়তে গিয়ে জানতে চান বিচারক। চেষ্টা করেও মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা সম্ভব হয়নি, জানান তদন্তকারী অফিসার। 


৬ বছর চাকরি করে কি ৩৬ লক্ষ টাকার গয়না কেনা সম্ভব? গরুপাচারকাণ্ডে ধৃত সায়গল হোসেনের মামলার শুনানিতে বিস্মিত আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক। গোটা শরীরে যন্ত্রণা, শরীরে ব্যালেন্স পাচ্ছি না- জামিনের আর্জি জানিয়ে আদালতে বললেন অনুব্রত। তিহাড়ে গিয়ে অনুব্রত-সায়গলকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় সিবিআই।


৬ বছরে ৩৬ লক্ষ টাকা মূল্য়ের গয়না! সায়গল হোসেনের স্কুল শিক্ষিখা স্ত্রীর কেনা গয়নার পরিমাণ নিয়ে বিস্মিত আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক। গরু পাচারকাণ্ডের তদন্তে সায়গল হোসেনের কাছ থেকে ৩৬ লক্ষ ৬৭ হাজার ৭০৯ টাকার সোনা ও রুপোর গয়না বাজেয়াপ্ত করেছিল সিবিআই। সায়গলের স্ত্রী দাবি করেন বেশ কিছু গয়না তাঁর। 


এদিন আদালতে সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক জানান, ৭০ হাজার টাকা মূল্য়ের সোনার ও ১৭ হাজার টাকা মূল্য়ের রুপোর গয়না গরু পাচারের আগে কেনা হয়। সেগুলির রসিদ পাওয়া গিয়েছে। বাকি গয়নার রসিদ পাওয়া গেলেও তা তাঁদের দোকানের নয় বলে জানিয়েছেন গয়নার দোকানের মালিকরা।


সায়গলের আইনজীবী শেখর কুণ্ডু আদালতে বলেন, তাঁর মক্কেলের স্ত্রী প্রাথমিক স্কুলে চাকরি করেন। তখন বিচারক জানতে চান তাঁর বেতন কত যে তিনি ৬ বছরে ৩৬ লক্ষ টাকা মূল্য়ের গয়না কিনবেন?   



গরু পাচার মামলায় ইতিমধ্যেই তিহাড় জেলে গিয়ে অনুব্রত মণ্ডল ও সায়গল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। এবার তিহাড়ে অনুব্রত ও তাঁর প্রাক্তন দেহরক্ষীকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। বুধবার আসানসোল সিবিআই আদালতে গরু পাচার মামলার শুনানিতে সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক একথা জানিয়েছেন। এদিন মামলার শুনানি শুরু হওয়ার পর অনুব্রত ও সায়গলকে জেরা করে যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে তা আদালতে পেশ করে সিবিআই। 


বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী জানতে চান ২ জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হয়েছে কি? জবাবে সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক আদালতে জানান, গত মে মাসের শেষে ২ জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা সম্ভব হয়নি। সায়গল হোসেন প্রথমে জেরার সম্মুখীন হন। পরে অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করা হয়।


এরপর ই তদন্তকারী অফিসার জানান, তাঁরা তিহাড়ে গিয়ে দু'জনকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চান।  সূত্রের খবর, এবিষয়ে দ্রুত আদালতে আবেদন করবে সিবিআই। এদিনের শুনানিতে ভার্চুয়ালি যোগ দেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি ও তাঁর প্রাক্তন দেহরক্ষী। 


অনুব্রতর কাছে বিচারক জানতে চান, তাঁরর কিছু বলার আছে কি না? জবাবে অনুব্রত মণ্ডল বলেন, শরীর ভাল যাচ্ছে না। গোটা শরীরে যন্ত্রণা, শরীরে ব্যালেন্স পাচ্ছি না। বিচারক জানতে চান, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কিনা অনুব্রত বলেন, হ্যাঁ নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।এরপরই বিচারকের কাছে জামিনের ব্যবস্থা করুর আর্জি জানান বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি। বিচারক বলেন, কলকাতা হাইকোর্ট আপনার জামিনের আবেদন খারিজ করেছেন। আগে ওখানে জামিন পান। তারপর দু'পক্ষের বক্তব্য় শুনে সিদ্ধান্ত নেব। 


সওয়াল জবাব পর্বে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থাকলেও কোনও উত্তর দেননি সায়গল হোসেন। এদিকে, সিবিআই আদালতে জানিয়েছে গরু পাচারের আগে কেনা গয়না ফিরিয়ে দেওয়া হবে। তাতে সম্মতি জানিয়েছে আদালত। ৩০ জুন এই মামলার পরবর্তী শুনানি।