আসানসোল: আসানসোলে বিজেপির কম্বল প্রদান অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে ৩ জনের মৃত্যুর ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, আটক হওয়া প্রত্যেকেই ওই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা। বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির বিরুদ্ধেও অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। বুধবার সন্ধেয় আসানসোলের রামকৃষ্ণ ডাঙায় বিজেপির কম্বল-বিলির সভায় হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হয়ে এক নাবালিকা সহ তিনজনের মৃত্যু হয়। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সভাস্থল ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই ওই দুর্ঘটনা ঘটে।
অনুষ্ঠানের উদ্য়োক্তা ছিলেন আসানসোল পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর ও বিরোধী দলনেত্রী চৈতালি তিওয়ারি। তাঁর স্বামী বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারিও সভায় উপস্থিত ছিলেন। পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় চরম অব্যবস্থার অভিযোগ তুলে একে অপরকে কাঠগড়ায় তুলেছে পুলিশ ও বিজেপি। পুলিশের দাবি, কম্বল বিতরণ সভার জন্য কোনও অনুমতি দেওয়া হয়নি বিজেপিকে। আর বিজেপির অভিযোগ, অনুষ্ঠানের কথা জানানো সত্ত্বেও উপযুক্ত ব্যস্থা নেয়নি পুলিশ। বুধবারের মর্মান্তিক ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠন করেছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। আটক হলেন ৫ উদ্যোক্তা।
আসানসোলে শুভেন্দু অধিকারীর কম্বল বিলি অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে এক বালিকা-সহ ৩ জনের। মৃত ঝালি বাউড়ি আসানসোলের কাল্লার বাসিন্দা, চাঁদমণি দেবী ও ১২ বছরের প্রীতি সিংয়ের বাড়ি রামকৃষ্ণডাঙায়। পদপিষ্টের ঘটনায় ৮ জন আহত হন। এদের মধ্যে ৫ জন আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। বাকি ৩ জন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে ঝালি বাউড়ির। অনুষ্ঠানস্থল থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে আসানসোলের কাল্লায় বাড়ি ওই মহিলার। গুমটি দোকান চালাতেন পঞ্চাশোর্ধ্ব ঝালি। ছেলে দিনমজুর, বৌমা পরিচারিকার কাজ করেন। এই পরিস্থিতিতে উদ্যোক্তারা আর্থিক সাহায্য না করলে মৃতদেহ নেবেন না বলে জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে আসানসোলের রামকৃষ্ণডাঙার দুই বাসিন্দা চাঁদমণি দেবী ও ১২ বছরের প্রীতি সিংয়ের। আর্থিক সাহায্যের দাবিতে এদিন প্রীতির বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। অন্যদিকে, মৃত চাঁদমণি দেবীর পরিবার দাবি করেছে, শুভেন্দুর জন্যই ভিড় হয়েছিল। পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।
ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করল আসানসোল -দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। কমিটিতে রয়েছেন DC ও ACP পদমর্যাদার অফিসাররা। এই তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়বে পুলিশ কমিশনার ও জেলাশাসকের কাছে। এরপরই শুভেন্দুর অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।