অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা: DA-আন্দোলন ঘিরে হুঁশিয়ারি, রাজনৈতিক বাগযুদ্ধে জোরাল হচ্ছে সংঘাত। এরই মধ্যে ৬৪ দিনে পড়ল শহিদ মিনারে রাজ্য সরকারি (State Government Employee) কর্মীদের ধর্না-অবস্থান। DA-আন্দোলনকারীদের চোর-ডাকাত বলে আক্রমণ করায়, গতকাল মহা সমাবেশের মিছিল থেকে পাল্টা চোর চোর বলে কটাক্ষ করেন সরকারি কর্মীরা। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদে ৬ এপ্রিল ফের কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। ১০ ও ১১ এপ্রিল দিল্লির যন্তর-মন্তরে ধর্নায় বসবেন DA-আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনে অনড় রাজ্য সরকারি কর্মীরা: মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারির পরেও, বকেয়া আদায়ের দাবিতে আন্দোলনে অনড় রাজ্য সরকারি কর্মীরা। গতকাল মেয়ো রোডে ধর্নায় বসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর ধর্নামঞ্চ থেকে ৬০০ মিটার দূরে শহিদ মিনার চত্বরে কালই মহা সমাবেশের ডাক দেয় সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। শিয়ালদা ও হাওড়া থেকে মিছিল করে আসেন অধ্যাপক, শিক্ষক, নার্স-সহ রাজ্য সরকারি কর্মীরা। শহিদ মিনারের সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী ও বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচী। DA-সমাবেশে যোগ দেওয়ার কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরও।
মুখ্যমন্ত্রীর আক্রমণ: বুধবার চোর-ডাকাত বলেছিলেন। এরপর গতকাল ধর্নামঞ্চ ডিএ আন্দোলনকারীদের হুঁঁশিয়ারি দেন মুখ্য়মন্ত্রী। বলেন, টাকা নিচ্ছে, পেনশন নিচ্ছে, আরও চাই! সব ডিপার্টমেন্টকে বলেছি, ফাইল খুঁজে বের করুন'। পাল্টা সুর চড়িয়েছেন আন্দোলনকারীরাও। তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে রেড রোডে দুদিন ধর্না দিয়েছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। আর তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে ডিএ নিয়ে বঞ্চনার অভিযোগে দুমাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন সরকারি কর্মীদের একাংশ। তৃণমূলের ধর্নামঞ্চ থেকে মাত্র ৬০০ মিটার দূরে বসে থাকা সেই ডিএ-আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বৃহস্পতিবার চড়া সুরে হুঁশিয়ারি দিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়!
কী বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী: মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, আমি সব ডিপার্টমেন্টকে বলেছি, সব ফাইল খুঁজে বের করুন, খুঁজতে খুঁজতে দেখছেন তো কত বেরচ্ছে... টাকা নিচ্ছে, পেনশন নিচ্ছে, আরও চাই!... সব চাকরি চিরকুটে হয়েছে। সব ফাইল খুঁজে বার করতে বলেছি। যাঁরা আন্দোলনে বসেছেন তাঁদের বেশিরভাগের চিরকুটে চাকরি। হুঁশিয়ারিতে অবশ্য় ডিএ আন্দোলনকারীরা চুপ করতে নারাজ! পাল্টা জবাব দিয়েছেন তাঁরাও।
বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা ৪২ শতাংশ হারে ডিএ পান। এরাজ্য়ের সরকারি কর্মীরা ডিএ পান ৬ শতাংশ হারে। অর্থাৎ কেন্দ্র এবং রাজ্য়ের মধ্য়ে ডিএ-র ফারাক ৩৬ শতাংশ।
বকেয়া ডিএ নিয়ে মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে। অন্য়দিকে, হুঁশিয়ারি, রাজনৈতিক বাগযুদ্ধে জোরাল হচ্ছে সংঘাত।