সমীরণ পাল, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও সন্দীপ সমাদ্দার, উত্তর ২৪ পরগনা: পঞ্চায়েত ভোটের আগে জেলায় জেলায় অস্ত্র উদ্ধার। এবার উত্তর ২৪ পরগনার বারাসাতের শাসনে তৃণমূল নেতার বাড়িতে বিপুল অস্ত্রভাণ্ডারের হদিশ। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে গতকাল রাত দেড়টা নাগাদ শাসনের খামার রামেশ্বরপুর এলাকায় হানা দেয় পুলিশ। সুকুর আলি নামে ওই তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র।
এসটিএফ সূত্রে খবর, ধৃতের ভেড়ি ও মাটির কারবার রয়েছে। তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সদস্য সুকুর আলির। যদিও এর পিছনে বিরোধীদের ষড়যন্ত্র দেখছে তৃণমূল। তৃণমূল সরকারের সাফল্য শুধু বেআইনি অস্ত্র কারবারে, কটাক্ষ বিজেপির। এর আগে মুর্শিদাবাদের ডোমকলে মিষ্টি ব্যবসার আড়ালে পর্দাফাঁস হয় অস্ত্র কারবারের। এবার উত্তর ২৪ পরগনার শাসনে উদ্ধার হল বিপুল পরিমাণ অস্ত্র। রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের জালে শাসকদলের নেতা। সব ঠিক থাকলে সামনের বছরেই পঞ্চায়েত ভোট হবে। এদিকে যত ভোট এগিয়ে আসছে, তত জেলায় জেলায় অস্ত্র উদ্ধারের ছবি ধরা পড়ছে।
কীভাবে উদ্ধার:
মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ, শাসনের দেউপুকুর এলাকা। গভীর রাতে তৃণমূল নেতা সুকুর আলির বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায় কয়েকটি গাড়ি। গাড়ি থেকে নেমে তৃণমূল নেতার বাড়িতে সোজা ঢুকে পড়েন এসটিএফ-এর অফিসাররা। বেশ কিছুক্ষণ ধরে তল্লাশি চলে, তারপরেই বেআইনি অস্ত্রের পর্দাফাঁস।
কী কী উদ্ধার:
১টি লং রাইফেল, ২টি ওয়ান শটার, ১টি ৭এমএম পিস্তল, টুয়েলভ বোরের পিস্তল ১টি, ৪০ রাউন্ড গুলি, সাড়ে ৮ কেজি বোমা তৈরির মশলা
তৃণমূলের বিক্ষোভ:
এদিন দুপুরে দেউপুকুরে তুমুল বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীদের একাংশ। রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে দীর্ঘক্ষণ চলে অবরোধ। পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলে তৃণমূল নেতাকে ফাঁসানোর অভিযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। দেউপুকুরের স্থানীয় বাসিন্দা মণিরুল ইসলাম বলেন, 'আইসি বিজেপির কাছ থেকে টাকা খেয়ে এসে এসব করছে।' বিরোধীরদের চক্রান্তের অভিযোগ করেছেন ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বও। বারাসত ২ নম্বর ব্লকের সভাপতি শম্ভু ঘোষ বলেন, 'আমার যেটা দৃঢ় ধারণা, বিরোধীরা চক্রান্ত করে আমাদের দলটাকে দমন করার জন্য এটা করেছে, এটা আমাদের দৃঢ় ধারণা, এটাই আমরা বলছি।'
কয়েকদিন আগে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশীপুর স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের জালে ধরা পড়ে এক অস্ত্র ব্যবসায়ী! সেই ঘটনার একদিন পরই মুর্শিদাবাদের ডোমকলে মিষ্টি ব্যবসায়ীর অস্ত্র কারবারের পর্দাফাঁস করে এসটিএফ। এবার সেই এসটিএফ-এরই জালে উত্তর ২৪ পরগনার শাসনে তৃণমূল নেতা।
বিজেপির কটাক্ষ:
বিজেপির সাংসদ এবং রাজ্যে সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে এরা রক্ত দিয়ে ভোট চায়, এরা খুন দিয়ে ভোট চায়, এরা বন্দুক দিয়ে ভোট চায়। মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে এরা পঞ্চায়েত ভোট মানুষের কাছ থেকে নেবে বলে এবং পঞ্চায়েত ভোটে কাউকে নমিনেশন জমা দিতে দেবে না কোনও পার্টিকে। এই জন্যই এরা এরকম করছে।'
প্রশংসা সৌগতর:
ভাল কাজ করেছে এসটিএফ। কেউ গুলি-বোমা রেখে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মন্তব্য সৌগত রায়ের।
আরও পড়ুন: সিবিআই স্ক্যানারে অনুব্রতর লটারি-জয়, কে কিনেছেন টিকিট? চলছে খোঁজ