সমীরণ পাল, শ্যামনগর: একবছর আগে পরিবারের সদস্যের মৃত্যুতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাসে, সেই খুনের তদন্তে নেমে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। কিন্তু, অর্জুন সিং তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর, একই পথে পা বাড়ালেন স্বজনহারা সেই পরিবারের এক সদস্য। সোমবার অভিষেকের সভাতেও দেখা গেল তাঁকে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক টানাপোড়েন।
অর্জুন সিং দল বদলাতেই কি ব্যারাকপুরে বিজেপিতে ভাঙন? ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাসে স্বজনহারা বিজেপি পরিবারের সদস্যকে দেখা গেল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায়। গতবছরের দোসরা মে, বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণার দিন শ্যামনগরে বিজেপির বুথ সভাপতি কমল মণ্ডলের বাড়িতে চড়াও হয় দুষ্কৃতীরা। বিজেপি নেতাকে না পেয়ে, তাঁর বয়স্ক মা শোভারানি মণ্ডলকে মারধর করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় তাঁর। এই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ তোলে মৃতার পরিবার। ভোট-পরবর্তী সন্ত্রাসে খুনের তদন্তে নেমে, এই ঘটনায় ১১ জনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ভাটপাড়ার পুরভোটে নিহত শোভারানি মণ্ডলের এক ছেলের স্ত্রী সুমিত্রা মণ্ডলকে প্রার্থী করে বিজেপি। গত রবিবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর, সেই বাড়িতে যান অর্জুন সিং। এরপরই সোমবার শ্যামনগরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় দেখা গেল সেই সুমিত্রা মণ্ডলকে। ভোট-সন্ত্রাসে নিহতের পুত্রবধূ সুমিত্রা মণ্ডল বলেন, “অভিষেকের সভায় গেছি। দাদা যা করবে তাই। দাদা তৃণমূল করলে আমরাও তৃণমূল করব।’’
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের গলায়, এনিয়ে শোনা গেছে কার্যত অসন্তোষের সুর। আর বিজেপি এখন এই বিষয়টিকে গুরুত্বহীন হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে। জগদ্দল তৃণমূল বিধায়ক সোমনাথ শ্যাম বলেন, “আমি জানি না। এভাবে আমাদের দলে কিছু হয় না। ওনার জন্য, আমাদের কর্মীরা সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছে।’’ ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “কমল মণ্ডল পার্টির সদস্য। ভোটে পরিবারের সদস্যদের কাউকে প্রার্থী করতে হবে বলে টিকিট দেওয়া হয়। উনি কোনও দিন বিজেপির ছিলেন না। কিছু যায় আসে না।’’ অন্যদিকে, সুমিত্রা মণ্ডলের জা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁরা এখনও বিজেপির সঙ্গেই আছেন। অর্জুন সিং তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর, আগামীদিনে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বিজেপিতে ভাঙন ধরে কি না, তার উত্তর দেবে সময়।
আরও পড়ুন: SSC: হার না মানা লড়াই, শারীরিক অসুস্থতা অগ্রাহ্য করে অবস্থান মঞ্চে এসএসসি চাকরিপ্রার্থী