ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: যত দিন যাচ্ছে, ততই যেন ছোট হয়ে আসছে খেলার মাঠের জায়গা। চাপ বাড়ছে পড়াশোনার। তৈরি হচ্ছে মোবাইল ফোনের অভ্যাস। এর মধ্য়ে কোভিডের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল স্কুল। ক্রমশ কমে এসেছে স্বাভাবিক ভাবে খেলাধূলার সুযোগ। সেই আবহে আরও জেঁকে বসেছে এই অভ্য়াস। 


এর মধ্যেই শিশুদের মধ্যে বাড়ছে স্থূলতার সমস্যা। ফলে শরীরে বাসা বাঁধছে বিভিন্ন জটিল রোগ। 'চাইল্ডহুড ওবেসিটি' সম্পর্কে অভিভাবকদের সচেতন করতে ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস-এ খোলা হল বিশেষ ক্লিনিক। শিশুদের নিয়মিত শরীরচর্চা থেকে সঠিক খাদ্যাভাস-সহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিভাবকদের পরামর্শ দেবেন বিশেষজ্ঞরা।


সমস্যা কোথায়?
শারীরিক কসরৎ ক্রমশ কমতে থাকায় ছোটদের মধ্যে বাড়ছে ওজন বৃদ্ধির প্রবণতা। আধুনিক সময়ে শিশুদের স্বাভাবিক জীবনে কাঁটা হয়ে দাঁড়াচ্ছে 'চাইল্ডহুড ওবেসিটি'। যা ডেকে আনছে হাইপার টেনশন থেকে হৃদরোগের সমস্যা। এই সব সমস্যার বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন করতে শনিবার ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেস-এ খোলা হয়েছে বিশেষ ক্লিনিক। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিকর্তা থেকে বিশিষ্ট চিকিৎসকরা।


কী বলছেন চিকিৎসকরা?
স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য বলেন, 'ক্লিনিক থেকে শিশুদের অভিভাবকদের সচেতন করা হবে।' কীভাবে কাজ করবে এই ক্লিনিক? শিশুদের নিয়মিত শরীরচর্চা থেকে সঠিক খাদ্যাভাস-সহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিভাবকদের পরামর্শ দেবেন বিশেষজ্ঞরা। ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেসের চেয়ারম্যান আর পি সেনগুপ্তও ছিলেন অনুষ্ঠানে।


শুধু শারীরিক সমস্য়া নয়, ওবেসিটি বা স্থূলতা গ্রাস করলে ছোটদের মানসিক নানা সমস্য়াও দেখা যেতে পারে। এই বিষয়ে এদিন সতর্ক করেন ইন্সটিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সের চিকিৎসকরাও। তাঁদের পরামর্শ, অভিভাবকরা সন্তানের স্থূলতা নিয়ে আগেভাগে সচেতন হলে সুস্থ জীবন পাবে শিশুরা।

কী কী সচেতনতা জরুরি?
১. বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, শিশুদের মধ্যে ওবেসিটির সমস্যা প্রতিরোধ করতে সবার আগে নজর দেওয়া দরকার খাদ্যাভ্যাসে। ছোট বয়সে জাঙ্ক ফুড খাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। ওবেসিটি প্রতিরোধ করতে খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে জাঙ্ক ফুড।
২. বিশেষজ্ঞদের মতে, জাঙ্ক ফুডের পরিবর্তে শিশুদের খাদ্য তালিকায় রাখুন প্রচুর পরিমাণে টাটকা ফল ও সবুজ শাক সব্জি। ছোট বয়স থেকেই শরীরে পুষ্টিকর খাবার জরুরি। টাটকা ফল ও সব্জি শিশুদের স্বাস্থ্যের নানা ঘাটতি পূরণ করে।
৩. মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে শিশুদের মধ্যে। লজেন্স এবং আরও নানা শর্করাজাতীয় খাবার স্থুলতা বৃদ্ধি করে। এই সমস্ত খাবারের অভ্যাস ত্যাগ করানো প্রয়োজন শিশুদের।
৪. শর্করাজাতীয় খাবারের পরিবর্তে শিশুদের খাদ্য তালিকায় রাখুন ড্রাই ফ্রুটস। কাজু বাদাম, আমন্ড বাদাম, কিশমিশের উপকারিতা অনেক। হালকা খিদেতেও ওদের হাতে তুলে দিন এগুলো। উপকারও হবে আবার খিদেও মিটবে।


আরও পড়ুন: প্রকল্প হয়নি, টাকাও 'লোপাট', মালদায় ১০০ দিনের প্রকল্পে নয়া অভিযোগ