কলকাতা : জল্পনা সত্যি করে মঙ্গলবার অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ( Abhijit Gangopadhyay ) ঘোষণা করে দিলেন, তিনি বিজেপিতেই ( BJP ) যাচ্ছেন। এবিপি আনন্দে আগেই বলা হয়েছিল, বড় অঘটন না ঘটলে, তিনি বিজেপিতেই যাবেন। সেই মতো হল ঘোষণা। তিনি বিজেপিতেই যাবেন। আর ঘোষণার পর থেকেই ক্ষুরধার ও লাগাতার আক্রমণ করে গেলেন রাজ্যের শাসকদলকে। প্রথমেই বললেন, 'তৃণমূলের সংস্কৃতিই হল বিচারপতিকে আক্রমণ করা। রায় সম্বন্ধে কোনও আপত্তি থাকলে তা জানানোর আলাদা পথ আছে।  আমার মনে হয় এদের পরিবার এবং শিক্ষা-দীক্ষায় সমস্যা আছে' 


শুধু সামগ্রিকভাবে তৃণমূল দলকে নয়, আলাদা করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও নিশানা করলেন তিনি। তবে একবারও নিলেন না তাঁর নাম। সাংবাদিক বৈঠকে মঙ্গলবার তাঁর মুখে উঠে এল একটাই শব্দবন্ধ ... ' তালপাতার সেপাই ' । কে এই ' তালপাতার সেপাই ' ? তিনি বললেন, 'একজন তালপাতার সেপাই তৃণমূলের সিনিয়র নেতাদের বিপদে ফেলার জন্য নারদকাণ্ডে চক্রান্ত করেছিল। '
নাম না করে এভাবেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। আরও চাঁচাছোলা ভাবে তিনি বললেন,  তালপাতার সেপাইকে সেনাপতি করে কোনও যুদ্ধে জিতেছে তৃণমূল ? ডায়মন্ডহারবারে দাঁড়ালে লক্ষ লক্ষ ভোটে  হারাব'


অতীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে প্রশংসা করলেও এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে তিনি বলেন, ' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, তার থেকে আলাদা কিছু নয়' । 


তৃণমূলের উদ্দেশে তাঁর কড়া আক্রমণ ,  'তাদের এই ধরনের মন্তব্যই আমাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছে। আমার ধারণা ২০০৯-এ সিপিএম -এর যে অবস্থা হয়েছিল ২০২৪-এ তৃণমূলের সেই অবস্থা হবে। ২০২৬ পর্যন্ত তৃণমূল দলটা টিকবে না'।  


অতীতেও বিভিন্ন সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপক্ষে তিনি মুখ খুলেছিলেন। প্রশ্ন তুলেছিলেন তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ নিয়েও। 'একজন নেতা অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়, তাঁর এত সম্পত্তি কোথা থেকে আসে? তিনি কি একটা সম্পত্তির হলফনামা দিয়ে, হলফনামা তৈরি করে, সোশাল মিডিয়াতে কি পোস্ট করবেন, যে তাঁর সম্পত্তি কত? সেটা করতে পারবেন? যদি তিনি করেন, আমি তাহলে অন্য়ান্য় সমতুল নেতা যাঁরা আছেন, যেমন ধরুন মীনাক্ষী মুখোপাধ্য়ায় বা অন্য় যাঁরা আছেন, তাঁদের কাছেও একই অনুরোধ রাখব। ' অভিষেকও আবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতিদের মন্তব্য নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন । রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্য রাখার জন্য বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পদক্ষেপ নেন, বিচারপতি অমৃতা সিন্হা যেন কোনও বিরূপ মন্তব্য না করেন , এই মর্মে নির্দেশ দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানান অভিষেক। 

এই তরজা যখন চলছিল তখন বিচারপতির পদে ছিলেন অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এখন সেই পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে পুরদস্তুর রাজনীতিতে যোগ দিতে চলেছেন। তাই এবার কি আক্রমণ আরও ক্ষুরধার হবে ? উত্তর দেবে সময় ।  


আরও পড়ুন :


ভোটপর্ব যাতে নির্বিঘ্নে হয়, সেই দায়িত্ব নিতে হবে রাজ্যকেই, একের পর এক কড়া বার্তা কমিশনের