কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) তলব। আগামী ৩ অক্টোবর অভিষেককে তলব করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। আগামী ৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টায় সিজিও কমপ্লেক্সে তলব ইডি-র। নথি নিয়ে যেতে বলা হয়েছে তাঁকে। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে দিল্লিতে তৃণমূলের ধর্না কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন অভিষেককে তলব ইডি-র। এর আগে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ED.
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার বিরুদ্ধে দিল্লিতে তৃণমূলের কর্মসূচি রয়েছে। ২ এবং ৩ অক্টোবর সেখানে বিক্ষোভ দেখানো হবে। ৩ তারিখই মূল কর্মসূচি, যন্ত্র মন্তরে ধর্না এবং কৃষি ও গ্রামোন্নয়ন বিভাগের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা। অনেক দিন আগেই এর ঘোষণা হয়। আর সেই ৩ অক্টোবরই তলব করা হল অভিষেককে। এর আগে দিল্লিতে I.N.D.I.A জোটের সমন্বয় বৈঠকের দিনই অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। নবজোয়ার কর্মসূচি চলাকালীনও তাঁকে ডেকে পাঠায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI). তাই বেছে বেছে গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলিতেই অভিষেককে ডাকা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছে তৃণমূল।
দিল্লিতে তৃণমূলের কর্মসূচির ঘোষণা হয়েছিল ঢের আগেই। তার পরেও কর্মসূচির দিনেি কেন ডাকা হল অভিষেককে, নতুন করে প্রশ্ন উঠছে। এখনও পর্যন্ত দিল্লির কর্মসূচিতেই অভিষেক থাকবেন বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু সমন পেয়ে সিদ্ধান্ত বদল করবেন কিনা, সেই নিয়ে কিছু জানা যায়নি। তবে বেছে বেছে রাজনৈতিক ভাবে গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলিতেই বার বার অভিষেককে ডেকে পাঠানোয় ফের তদন্তকারীদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক অবস্থানের অভিযোগ তুলছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee: বেছে বেছে দিল্লি কর্মসূচির দিনই তলব! 'ওরা ভীত, সন্ত্রস্ত', ED-র সমনে বললেন অভিষেক
রাজনৈতিক ভাবে লড়াই করতে না পেরে ED এবং CBI-এর মতো সংগঠনগুলিকে বিজেপি ব্যবহার করছেন বলেও অভিযোগ করেন অভিষেক। সমস্ত নথি দেওয়া সত্ত্বেও হেনস্থা করা হচ্ছে, তিনি এবং তাঁর স্ত্রী মোট ন'বার হাজিরা দিয়েছেন, সমস্ত সম্পত্তির খতিয়ান দিয়েছেন, তার পরও বার বার ডেকে পাঠিয়ে, ঘণ্টার পর ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে হেনস্থা কার হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক।
যদিও বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "একদম সঠিক কাজ হয়েছে। কারণ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেরা করা দরকার। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সব কাজগপত্র খুঁটিয়ে দেখা উচিত। কাল থেকেই দেখবেন নানা ভাবে আদালতের চক্কর কাটবেন অভিষেক, যাতে তি তারিখ হাজিরা দিতে না হয় বা হাজিরা দিতে হলেও যেন কোনও পদক্ষেপ করা না যায়। অর্থাৎ দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে তিনি। তাই ডাক পড়লেই আদালতে ছোটেন। সাহস থাকলে, কোনও কালিমা না থাকলে, সরাসরি গিয়ে ED-র সঙ্গে দেখা করতে পারতেন, সব কাগজ দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা পারবেন না। কারণ রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি। আশাকরি ৩ তারিখ অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।"
যদিও তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকলেও, তাঁকে ডেকে পাঠানো সংস্কৃতি হয়ে উঠেছে ED-র। আসলে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাজনৈতিক ভাবে উত্যক্ত করাই কাজ বিজেপি-র। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে সেই কাজে ব্যবহার করছে ওরা। এর আগে, I.N.D.I.A জোটের বৈঠকের দিন ডেকে পাঠানো হয়। বৈঠকে না গিয়ে অভিষেক হাজিরা দেন। আবার দেখুন রাজধানীর বুকে যখন কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিহিংসা, বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামছেন, সেই সময়ই ৩ তারিখ সমন পাঠানো হল। এতে প্রমাণ হয় যে, অভিষেকের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হচ্ছে।"
এর আগে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস সংস্থার সম্পত্তির খতিয়ান নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহার কাছে তিরস্কৃত হয় ED. যে ঠিকানা থেকে সংস্থার যাত্রা শুরু, সেই সংক্রান্ত তথ্য় নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়েন তদন্তাকরীরা। আগামী কাল ফের সেই মামলার শুনানি রয়েছে। তার আগে অভিষেককে তলব করে ED-র তরফে একটি পদক্ষেপ করা হল বলে মনে করছেন আইনজীবীরা।