সৌভিক মজুমদার, বিজেন্দ্র সিংহ, নয়াদিল্লি :  সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করল সর্বোচ্চ আদালত। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং কুন্তল ঘোষকে খুব দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত বলে নির্দেশ দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়। সিবিআই ও ইডি-র দু'জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।


অভিষেকের ২৯ মার্চের সভায় রাখা বক্তব্যের সঙ্গে কুন্তল ঘোষের বয়ানের সাযুজ্য আছে বলেও জানিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। 


২৯ মার্চ, শহিদ মিনারের সভা থেকে কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। TMC র সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বলেন, ' যবে থেকে সারদা হয়েছিল, আক্রমণ ছিল আমার দিকে। মদন মিত্র বসে আছে, কুণাল ঘোষ দীর্ঘদিন কাস্টাডিতে ছিল, কী বলেছেন জানেন এদেরকে? অভিষেকের নাম নাও, ছেড়ে দেব। কি বলেছিল না? ' 

এর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সাংবাদিকদের সামনে অভিষেকের সুরে একই অভিযোগ তুলেছিলেন নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত, বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ। ধৃত বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা বলেন, ' এজেন্সিরা বিভিন্নভাবে ভয় দেখিয়ে আমাদের কাছ থেকে নেতাদের নাম বার করার চেষ্টা করছেন .... আমাদের যত নেতা আছে, তাঁদের নাম বলানোর চেষ্টা করছে, তার জন্য তারা বলপূর্বক চেষ্টা করছে' 

সাংবাদিক তখন প্রশ্ন করেন, অভিষেকের ? তিনি উত্তর দেন অবশ্যই। 

গত বৃহস্পতিবার, কলকাতা হাইকোর্টে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলাকালীন এই প্রসঙ্গটি তোলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, গত ২৯ মার্চ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় একটি সভায় যে বক্তব্য রেখেছিলেন, তার সঙ্গে কুন্তল ঘোষের বয়ানের সাযুজ্য আছে। কুন্তল ঘোষ সেখান থেকেই এই অভিযোগের বয়ান লেখার সূত্র পেয়েছিলেন কি না, তার জন্য তদন্ত করা প্রয়োজন।

এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে স্পেশাল লিভ পিটিশন দাখিল করেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেখানে তিনি দাবি করেছেন,  হাইকোর্টের ওই নির্দেশ পিটিশনারের পক্ষে যেমন ক্ষতিকর, তেমনি আইনেও এরকম নির্দেশের উল্লেখ নেই। শুধুমাত্র এর প্রেক্ষিতেই হাইকোর্টের একপেশে নির্দেশ বাতিল করা উচিত।

একই যুক্তিতে, এদিন হাইকোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশের দাবি জানান, অভিষেকের আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তাঁর আর্জির প্রেক্ষিতে এদিন প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে,  ২৪ এপ্রিল, মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। ততদিন পর্যন্ত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সমস্তরকম পদক্ষেপের উপরে স্থগিতাদেশ জারি থাকবে। 

সোমবার, সকাল সাড়ে ১০টায় হাইকোর্টের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।