কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, সমীরণ পাল ও সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতা : পানিহাটি, টিটাগড় থেকে হুগলির ডানকুনি, SIR আবহে একের পর এক মৃত্যু ঘিরে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এবার মৃতদের পরিবারকে সাহায্য করতে টিম তৈরি করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিরোধীরা।

Continues below advertisement

SIR-NRC আতঙ্কে একের পর এক মৃত্যুর অভিযোগকে হাতিয়ার করে ইতিমধ্য়েই সরব হয়েছে তৃণমূল। বিধানসভা ভোটের কয়েকমাস আগে, এই ইস্য়ুতে এবার আরও শান দিচ্ছে তারা। মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে টিম তৈরি করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁরা মৃতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন। মৃতদের পরিবারকে প্রয়োজনীয় সহায়তাও করবেন।

পানিহাটিতে SIR-এর আতঙ্কে আত্মহত্য়ার অভিযোগ ওঠার পরই নিহত প্রদীপ করের বাড়িতে পৌঁছে গেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে গিয়ে তিনি বলেন, "আমি করজোড়ে অনুরোধ করছি, আপনারা ভয় পাবেন না। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার থাকতে, আমরা থাকতে এত সোজা না। যাদের বাবা-দাদু-ঠাকুর্দা একের পর এক প্রজন্ম বাংলায় রয়েছে, তাঁদের বাংলাদেশি বলে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে এত সোজা নয়। আমরা বুকের রক্ত দিয়ে রক্ষা করব। বিশেষ করে কলোনি এলাকায় যাঁরা থাকেন, তাঁরা নির্ভয়ে নিশ্চিন্তে থাকুন।"

Continues below advertisement

SIR-এর প্রতিবাদে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়-অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়রা যেদিন পথে নামেন সেদিন, মৃতদের নামের তালিকা দিয়ে শহিদ বেদি করা হয়েছিল। সেখানে মাল্যদানও করেছিলেন তৃণমূলেন নেতা-নেত্রীরা। এবার মৃতদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে টিম তৈরি করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মতো শনিবার পানিহাটিতে নিহত প্রদীপ করেন বাড়িতে যান তৃণমূল সাংসদ পার্থ ভৌমিক এবং সামিরুল ইসলাম। টিটাগড়ে নিহত কাকলি সরকারের বাড়িতে যান নারী ও শিশু কল্যাণমন্ত্রী শশী পাঁজা এবং TMCP-র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য।

শশী পাঁজা বলেন, "সমস্ত কাগজ তাঁর হাতে রয়েছে। যে কাগজ আপনার-আমার সাধারণভাবে সকলের কাছে আছে, কিন্তু এত আতঙ্ক...বিজেপির এই সমস্ত জ্বালানি বক্তব্য...একে বাদ দেব, তাকে বাদ দেব...এই করতে গিয়ে...ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে কাকলি এরকম একটা পদক্ষেপ নিল।"

গত রবিবার হুগলির ডানকুনিতে SIR আতঙ্কে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে এক মহিলার মৃত্যুর অভিযোগ ওঠে। শনিবার তাঁর বাড়িতে যান অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও তৃণমূলের মুখপাত্র সুদীপ রাহা। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে শেওড়াফুলিতে মৃত এক মহিলার বাড়িতে যান জয়া দত্ত। হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় মৃত জাহির মালের বাড়িতে যান পূর্তমন্ত্রী পুলক রায় ও তৃণমূলের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী। তৃণমূলের এই টিম নিয়ে অবশ্য় কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিরোধীরা।

বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা বলেন, "এসআইআর নিয়ে আতঙ্কিত না হলে, যারা মারা গেছে তাদের জন্য ইউনিট তৈরি করছে তৃণমূল ? কোথায় তৃণমূলের ইউনিট তৈরি করার কথা যাতে মানুষ আর আত্মহত্যা না করে। আর তৃণমূলের অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইউনিট তৈরি করেছেন...আত্মহত্যা ইউনিট, মৃত্যু ইউনিট।" 

এখনও পর্যন্ত উত্তর ২৪ পরগনার পানিহাটি, টিটাগড়, বীরভূমের ইলামবাজার, সাঁইথিয়া, হাওড়ার উলুবেড়িয়া, পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর, মুর্শিদাবাদের কান্দি, বহরমপুর, হুগলির শেওড়াফুলি, জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড় এবং কুলপিতে SIR-আতঙ্কে মৃত্য়ুর অভিযোগ উঠেছে।