কলকাতা : পানিহাটিতে NRC আতঙ্কে আত্মহত্যার অভিযোগে এখন উত্তপ্ত রাজনীতি। বাংলায় SIR শুরু হতেই প্রদীপের মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছে তরজা । NRC নিয়ে আতঙ্কে ভুগছিলেন আত্মঘাতী প্রদীপ। সুইসাইড নোটে সেকথা লিখে আত্মঘাতী হন বলে জানা যায়। এই ঘটনার পরই আগরপাড়ায় পৌঁছান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি কথা বলেন মৃত প্রদীপের পরিবারের সঙ্গে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, 'এর বদলা তৃণমূল কংগ্রেস নিয়ে ছাড়বে'। রীতিমতো হুমকি দিয়ে বলেন, বিজেপি নেতারা প্রচার করতে এলে পোস্টে বেঁধে রেখে দেবেন। 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেঁচে থাকতে একটা প্রাণও আমরা অকালে যেতে দেব না'।
'গাছে বেঁধে রাখবেন'
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, SIR ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এই আত্মহত্যার খবর আসে। তারপরই তিনি প্রদীপের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি স্পষ্ট করেই বলেন এই ঘটনার জন্য দেশের চিফ ইলেকশন কমিশনার, অমিত শাহ দায়ী। এই ঘটনার জন্য কার্যত বিজেপি নেতাদেরই দায়ী করেন অভিষেক। বিজেপি নেতাদের গাছে বেঁধে রাখার হুঙ্কারও ছাড়েন তিনি। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও একই বন্ধনীতে রেখে হুঁশিয়ারি দেন তিনি। প্রশ্ন তোলেন,'জ্ঞানেশ কুমারের বাবার নাম আছে ভোটার লিস্টে?, দেখাতে পারবেন? রেলমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী দেখাতে পারবেন বাবা ঠাকুর্দার জন্মের সার্টিফিকেট?' এরপর অভিষেক বলেন, এখানে এলে বাবা-ঠাকুর্দার সার্টিফিকেট চাইবেন, না হলে বেঁধে রাখবেন। গায়ে হাত তুলবেন না। বলবেন বাবা-ঠাকুর্দা-দিদিমার সার্টিফিকেট চাইবেন। গাছে বেঁধে রাখবেন। সেই সঙ্গে আশ্বাস দেন, '৪ তারিখ থেকে SIR শুরু হবে, আমিও রাস্তায় থাকব, চিন্তা করবেন না'। বলেন, 'একটা প্রাণ আমাদের কাছে মণিমুক্তোর মতো। কোনও বৈধ ভোটারের নাম বাদ গেলে ১ লক্ষ লোক নিয়ে যাব। লিখে দিয়ে গেছেন NRC-র ভয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি, তারপরেও রাজনীতি?'
'সারা বাংলার একটাই স্বর, জাস্টিস ফর প্রদীপ কর'
অভিষেকের দাবি, আত্মঘাতী প্রদীপই বাড়ির একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন। এখন ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবার। শুধু পানিহাটি হয়, দিনহাটায় আরও একজন ভয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। এই প্রসঙ্গে টেনে অভিষেক বলেন, 'যারা হিন্দুদের ধারক-বাহক বলে দাবি করে, একবারও খোঁজ নিয়েছে? এরা ঠিক করবে কে বাংলাদেশি?' অভিষেকের হুঙ্কার, প্রদীপ করের মৃত্যুর ইস্যুকে সামনে রেখে মিছিল করবে তৃণমূল কংগ্রেস। স্লোগান হবে, 'সারা বাংলার একটাই স্বর, জাস্টিস ফর প্রদীপ কর'।
নিহত ব্যক্তির পরিবারের দাবি, প্রদীপও খালি NRC-র কথা বলতেন। বলতেন, 'ধরে নিয়ে যাবে আমাদের। আগে থেকেই NRC-র কথা বলত।' এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন বঙ্গ রাজনীতি কোনদিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার।