কলকাতা: ২০২৪-এর ৯ই অগাস্ট থেকে ২০২৫-এর ৯ই অগাস্ট আর জি কর কাণ্ডের বিচারের দাবিতে, গত ১ বছরে আন্দোলনের নজিরবিহীন চেহারা দেখেছে এই রাজ্য। তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুন কাণ্ডের ১ বছর পূর্তির দিনও ফের রাত দখল হয়েছিল। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে মেয়ো রোডের মঞ্চ থেকে ফের সুর চড়ালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বক্তব্যে উঠে এল অপরাজিতা বিলের প্রসঙ্গও।                     

তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'আর জি করকাণ্ডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশ যে তদন্ত করেছে, এক দিনের মধ্যে দোষীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অথচ মোদির সিবিআই তা একবছরেও করতে ব্যর্থ হয়েছে'। এরপরই অভিষেক বলেন,  'আর জি করের মত অপরাধ ঠেকাতে অপরাজিতা বিল পাঠানো হয়েছিল। আমাদের বিধানসভায় এই বিল পাস হলেও এখনও সেই বিল অনুমোদন পায়নি। সিপিএম, কংগ্রেস কেন অপরাজিতা বিল পাশের জন্য সরব হয়নি? কেন রাজ্যপাল এই বিল নিয়ে ফেরত পাঠালেন?'                 

প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের আপত্তির প্রসঙ্গ তুলে বিল ফেরত পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রে খবর, এই বিলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ২০২৩-এর কয়েকটি সংশোধনী সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ রাজভবনকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অপরাজিতা বিলের প্রস্তাবিত সংশোধন অনুযায়ী, ধর্ষণের শাস্তি বাড়িয়ে, ন্যূনতম ১০ বছরের জেলের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। রাজভবনের তরফে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই পরিবর্তনকে অত্যন্ত কঠোর ও সামঞ্জস্যহীন বলে মনে করেছে।

আরেকটি সংশোধনীতে BNS-এর ৬৫ ধারা বাতিল করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। যার ফলে, ১৬ ও ১২ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ধর্ষণের ক্ষেত্রে, শাস্তির ফারাক মুছে যাবে। রাজভবন সূত্রে দাবি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক মনে করছে, এমনটা হলে, শাস্তির সমানুপাতিক হার থাকবে না।

আর জি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়ার পর, এই আলাদা বিল আনার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর, বিধানসভায় 'অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিনাল লজ় অ্য়ামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৪' পেশ করে রাজ্য সরকার।  বিল পাশের জন্যে পাঠানো হয় রাজভবনে। রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে, অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল ২০২৪, রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য সংরক্ষিত রেখেছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।