কলকাতা: কয়লাকাণ্ডে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাঁকেও। সেই নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলেছিলেন আগেই। এ বার ফের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর দাবি, সারদাকাণ্ডে (Saradha Scam) মদন মিত্র (Madan Mitra) এবং কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) হেফাজতে থাকাকালীন, তাঁর নাম নিতে দু'জনকে চাপ দেওয়া হয়েছিল। 


বরাবর তাঁকে নিশানা করা হয়েছে বলে দাবি অভিষেকের


বুধবার শহিদ মিনার চত্বরে সভা করেন অভিষেক। সেখানেই এই দাবি করেন তিনি। তাঁকে বরাবর নিশানা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। অভিষেক বলেন, "যবে থেকে সারদা হয়েছিল আনার দিকে আক্রমণ ছিল। মদন মিত্র, কুণাল ঘোষ দীর্ঘ দিন হেফাজতে ছিলেন। সেই সময় ওঁদের চাপ দেওয়া হয়েছিল। বলেছিল, আমার নাম বললেই ছেড়ে দেবে। সারদা থেকে নারদ, সব ক্ষেত্রেই আমাকে টার্গেট করা হয়েছে।"


অভিষেকের পাশাপাশি, তাঁর স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে। তা নিয়ে অভিষেকের দাবি, নির্বাচনী ক্ষেত্রে পেরে না উঠে, তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এ দিনও সেই অভিযোগ করেন অভিষেক। তাঁর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগও প্রমাণিত হলে নিজে থেকে ফাঁসির দড়ি গলায় পরবেন বলে জানিয়েছিলেন। এ দিনও অভিষেক বলেন, "আমি বলছি, সবার জন্য আইন আলাদা হলেও, আমার জন্য তা হওয়ার দরকার নেই। সারদা হোক, নারদ হোক, নিয়োগ দুর্নীতি হোক, কয়লা হোক, আমার বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রমাণ করতে পারে, তাহলে শহিদ মিনারেই মৃত্যুবরণ করব আমি। "


আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: 'চিরকুটে চাকরি পেয়েছেন যাঁরা, তাঁরাই DA আন্দোলনে বসে রয়েছেন', ধর্নামঞ্চ থেকে বললেন মমতা


অভিষেকের দাবি নিয়ে কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছে বিজেপি। দলের নেতা প্রণয় রায়ের প্রশ্ন, "কুণালকে দেখিয়ে বলেছেন, অভিষেকের নাম বললে ছেড়ে দেওয়া হবে। কার নির্দেশে এই কাজ করেছিল পুলিশ? আমাদের প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্যের পুলিশ মন্ত্রীর কাছে। কুণাল কিন্তু পুলিশের হাতে ছিলেন। জোর করে পুলিশ যখন নিয়ে যেত, সেই সময় কুণাল বলতেন, মুখ্যমন্ত্রী সবচেয়ে বড় সুবিধাভোগী। তাই এই প্রশ্ন অত্যন্ত গুরুতর। কে তাঁকে অভিষেকের নাম বলতে বলেছিল, জবাব দিতে হবে কুণালকে।"


কেন্দ্রীয় সংস্থা আগেই তাঁকে ডেকেছিল, জানালেন কুণাল


এ নিয়ে যদিও প্রণয়কেই পাল্টা নিশানা করেন কুণাল। তিনি বলেন, "আজ বুঝতে পারছি প্রণয়বাবুকে কেন চিকিট দেয়নি। এত অর্বাচীনের মতো কথা বললে, তাকে কোনও রাজনৈতিক দল টিকিট দিতে পারে? ঠিক করেছে। ২০১৩ সালে আমাকে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। সেটা আলাদা অধ্যায়। কিন্তু গোটা পৃথিবীর সকলে জানেন, তা হল, আমাকে কিন্তু কেন্দ্রীয় সংস্থা গ্রেফতারির আগেও ডেকে পাঠায়। আমাকেই প্রথম ডেকে পাঠায়। দু'দিন তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হই। দিল্লি থেকেও অফিসাররা এসেছিলেন। তাই প্রণয় যে পুলিশের কথা বলছেন, সেই সময় কেন্দ্রীয় সংস্থাও তো আমায় ডাকে! সস্তার রাজনীতি করতে যাঁরা করেন, তাঁরা এসব জানেন না। আমি গ্রেফতার হই নভেম্বরে, অক্টোবরে ইডি অফিসের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হই। দেখুন আর্কাইভ খুলে!" সবমিলিয়ে ফের তুঙ্গে রাজনৈতিক তরজা।