কলকাতা: বিদেশযাত্রার অনুমতি চেয়ে এবার আগাম হাইকোর্টের (Kolkata High Court) দ্বারস্থ হলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকা মেনকা গম্ভীর। মায়ের অসুস্থতার কারণে ব্যাঙ্ককে যেতে চান বলে আবেদনে উল্লেখ। এর আগে অভিষেক-শ্যালিকার বিদেশযাত্রায় বাধা দেয় ইডি। বিমানবন্দরে মেনকাকে হেনস্থার অভিযোগেরও উল্লেখ রয়েছে আবেদনপত্রে। বুধবার হাইকোর্টে মেনকার বিদেশযাত্রা-মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
অবমাননার মামলা খারিজ: মেনকা গম্ভীরের (Menoka Gambhir) দায়ের করা আদালত অবমাননার মামলা খারিজ করে দেয় কলকাতা হাইকোর্ট (calcutta high court)। বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য জানালেন, ইচ্ছাকৃতভাবে আদালত অবমাননা (contempt of court) হয়, এমন কোনও কাজ করেনি ইডি (ED) ও অভিবাসন দফতর (immigration department)। সঙ্গে সংযোজন, চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে গেলে আলাদা করে মামলা করতে হবে। 'অবমাননার মামলায় নতুন করে কোনও আবেদন জানানো যায় না’, আরও বলেন বিচারপতি।
গত ৩০ অগাস্ট বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য নির্দেশ দিয়েছিলেন, মেনকা গম্ভীরকে কলকাতায় জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে। তাঁর বিরুদ্ধে কোনও কড়া পদক্ষেপও করা যাবে না। কিন্তু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকার দাবি, তিনি যখন মায়ের চিকিৎসার জন্য ব্যাঙ্কক যাচ্ছিলেন তখন তাঁকে বিমানবন্দরে আটকানো হয়। মেনকার তরফে অভিযোগ, এতে আদালত অবমাননা হয়েছে কারণ হাইকোর্ট কোনও কড়া পদক্ষেপ করতে বারণ করেছিল। সেই নির্দেশের পরও কী ভাবে তাঁকে কলকাতা বিমানবন্দরে আটকানো হল, এই প্রশ্ন নিয়েই তিনি ফের আদালতের দ্বারস্থ হন। কিন্তু তাতে বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, এটে হেনস্থার অভিযোগ উঠলেও অবমাননার অভিযোগ ওঠে কী ভাবে? সাধারণত কড়া পদক্ষেপ বলতে গ্রেফতারির কথা বোঝানো হয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে মেনকাকে বিমানবন্দরে আটকানোর বিষয়টি কী ভাবে কড়া পদক্ষেপ হচ্ছে, সেই প্রশ্ন তাঁর আইনজীবীকে বার বার করা হয়। আইনজীবীদের যুক্তি ছিল, কড়া পদক্ষেপের আলাদা কোনও সংজ্ঞা নেই। অভিষেকের শ্যালিকাকে যে হেনস্থা করা হয়েছিল, সেটাও কড়া পদক্ষেপের মধ্যে পড়ে, দাবি করেন তাঁরা। সবের প্রেক্ষিতে ইডি ও অভিবাসন দফতরের তরফে রিপোর্ট তলব করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। তার পরেই আজ ওই আবেদন খারিজের সিদ্ধান্ত।
ঘটনার প্রেক্ষাপট: সম্প্রতি কয়লাকাণ্ডে মেনকা-কে ইডির প্রথম তলব ঘিরে প্রশ্ন তোলে বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার-সহ শাসকদল। মূলত মধ্যরাতে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকা। মেনকা গম্ভীরের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, ১২ সেপ্টেম্বর ‘টুয়েলভ থার্টি AM’-এ তাঁর মক্কেল মেনকা গম্ভীরকে কয়লাকাণ্ডেে তলব করেছিল ইডি। নির্ধারিত সময়ের ১০ মিনিট আগেই তাঁরা পৌঁছে যান সিজিওয়। কিন্তু, এসে দেখেন, সিজিওয় ঢোকার মেন গেট তালাবন্ধ। কর্তব্যরত এক জওয়ানকে তাঁরা বলেন, আমাদের ডেকেছে, তাই এসেছি। তারপর জওয়ান দরজা খুলে দিতেই তাঁরা হেঁটে ভিতরে ঢোকেন। লিফটে করে পৌঁছে যান ইডির অফিসে। পাঁচ মিনিট অপেক্ষা করার পর নিচে নেমে আসেন। আর এখানেই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। কী করে একজন মহিলাকে রাত সাড়ে বারোটার সময় তলব করা হয় ? এটা কি আইন অনুযায়ী হয়েছে ? প্রশ্ন তোলে শাসকদল। পরে অবশ্য ইডির তরফে সময় বিভ্রাটের বিষয়টি মেনে নেওয়া হয়।