কলকাতা:

  প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির সব মামলা সরল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের (Abhijit Ganguly) এজলাস থেকে, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের, মত আইনজীবীদের একাংশের। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতির সব মামলা অন্য বিচারপতিকে দেওয়ার নির্দেশ। কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের। নিয়োগ-দুর্নীতির সব মামলা সরল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস থেকে, মত আইনজীবীদের অন্য অংশের। ওয়েবসাইটে আপলোড হওয়ার পরেই জানা যাবে সুপ্রিম কোর্টের বিস্তারিত নির্দেশ। তবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে স্বাগত জানালেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন তিনি।


এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'আমি আগেও বলেছি হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের যে কোনও রায় আমাদের কাছে শিরোধার্য। সম্পূর্ণ আস্থা, ভরসা, বিশ্বাস ভারতবর্ষের বিচার ব্যবস্থার উপর রাখি। যেহেতু এটা সাবজুডিস ম্যাটার তাই, আমি এই নিয়ে কোনও মন্তদব্য করতে চাই না। মহামান্য বিচারপতি যে রায় দিয়েছেন, আমরা সেই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি।'


প্রসঙ্গত, রাজ্যের এতদিন ধরে চলে দুর্নীতির মামলারগুলির মধ্যে অন্যতম নিয়োগ দুর্নীতির মামলা।  একের পর এক শাসকদলের হেভিওয়েট নাম জড়িয়েছে। এই মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের নির্দেশে চাকরি গিয়েছে, রাজ্যের খোদ শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারীর মেয়ের। এই মামলার জেরেই চাপ বেড়েছে শাসকদলের অন্দরে। এতদিন ধরে চলে আসা নিয়োগ দুর্নীতির মামলা বেগ পায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে।  


সুপ্রিম কোর্টে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের (Abhishek Banerjee) মামলায় উঠে এসেছে এবিপি আনন্দকে দেওয়া কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ। তাঁর নির্দেশের ওপর স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়িয়েছে সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ। বিচারপতির সাক্ষাৎকার নিয়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে হলফনামা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।


এসবের ২৪ ঘণ্টার মধ্য়ে এনিয়ে মুখ খোলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়। মঙ্গলবার এজলাসে এসে তিনি আচমকা বলেন, কে রটাচ্ছে আমি পদত্যাগ করছি? আমি পদত্যাগ করছি না। এরপর আইনজীবীদের উদ্দেশে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, যে লড়াই শুরু হয়েছে , সে লড়াই চলবে। বিভিন্নভাবে লড়াই চলবে। আমি তো চিরকাল এখানে থাকব না, কিন্তু লড়াই চলবে।


গত ১৩ এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় মন্তব্য় করেন, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায় এবং কুন্তল ঘোষকে খুব দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত CBI, ED-র। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন অভিষেক। যার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দেয় সর্বোচ্চ আদালত।


গত সোমবার সেই মামলার শুনানিতে এবিপি আনন্দকে দেওয়া বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ টানেন অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের আইনজীবী অভিষেক মনুসিঙ্ঘভি। আবেদনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারের অনুবাদও জমা দেন তাঁরা। এরপর প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি পি এস নরসিম্হার বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে কথা বলে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে জানাতে হবে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় ওই সাক্ষাৎকারে কী বলেছিলেন। বৃহস্পতি বারের মধ্য়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে হলফনামা দিতে হবে।


এদিকে মঙ্গলবার এজলাসে এসে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। আমাকেই এর ব্যাখ্যা দিতে হবে। আমি ইন্টারভিউ দিয়েছি, আমাকেই ব্যাখ্যা দিতে হবে। যা বলিনি, সেটা নিয়েই অভিযোগ করা হচ্ছে।আজ ছিল এই মামলার পরবর্তী শুনানি। সেখানেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া সাক্ষাৎকারের তর্জমার সত্যতা বিচার করে মামলা সরানোর নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। তাঁর এজলাসের মামলা অন্য বিচারপতিকে দিতে বলা হয়েছে।


আরও পড়ুন, তাজা নাকি ফ্রিজের সবজি ? কোনটা উপকারী ?


আরও পড়ুন, আম খেলে ওজন বাড়ে কি ? কী দাবি বিশেষজ্ঞদের ?