কলকাতা: দফায় দফায় বৈঠক করেছেন দুপুর থেকে। মধ্যস্থতা করে বার করেছেন সমাধানসূত্র। তার পর নিজে দাঁড়িয়ে থেকেই অর্জুন সিংহকে (Arjun Singh) দলে যোগদান করিয়েছেন। ব্যারাকপুরের সাংসদের প্রত্যাবর্তনে টুইটও করলেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। বিজেপি-র (BJP) 'বিভাজনের রাজনীতি' প্রত্যাখ্যান করে 'ঘরওয়াপসি'-তে উষ্ণ অভিনন্দন জানালেন তিনি।
অর্জুনকে দলে স্বাগত অভিষেকের
রবিবার সকাল থেকে দফায় দফায় বৈঠক, ডামাডোলের পর সন্ধেয় তৃণমূলে যোগদান করেছেন অর্জুন। এই গোটা পর্বেই প্রধান ভূমিকায় ছিলেন অভিষেক। অর্জুনকে নিয়ে উত্তর ২৪ পরগনার নেতাদের মধ্যে কোনও রকম অসন্তোষ বা ওজর-আপত্তি রয়েছে কিনা জানতে প্রথমে সমন্বয় বৈঠক করেন তিনি। এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সেই বৈঠকের পর অর্জুকেও ডেকে পাঠান। প্রায় এক ঘণ্টার সেই বৈঠকে দু'পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা নেন তিনি।
এর পরই, জোড়াফুলের উত্তরীয় গলায় ফের তৃণমূলে যোগদান করেন অর্জুন। তাঁকে স্বাগত জানিয়ে অভিষেক টুইটে লেখেন, 'বিজেপি-র বিভাজনের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন অর্জুন। দেশ জুড়ে মানুষ হয়রানির শিকার। দেশের মানুষ আমাদের ভীষণ ভাবে চাইছেন। আসুন লড়াই চালিয়ে যাই।'
অভিষেকের টুইটটি রিটুইট করেন অর্জুনও। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তৃণমূলে যোগদানের পর তিনি নিজেও সোশ্যাল মিডিয়ায় রাজনৈতিক পরিচয় পাল্টে ফেলেছেন। ফেসবুক এবং টুইটার, দুই জায়গাতেই প্রোফাইল ছবি পাল্টে ফেলেন। তৃণমূলের পতাকা গলায় ঝোলানো ছবি পোস্ট করেন। তাঁর প্রোফাইলে এই মুহূর্তে গেরুয়া সংযোগের কোনও উল্লেখই নেই। পরিচয়ের জায়গায় শুধু ব্যারাকপুরের সাংসদ লেখা রয়েছে।
২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ব্যারাকপুরে থেকে টিকিট পাওয়া নিয়ে তৃণমূল নেত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে মতান্তর দেখা দেয় অর্জুনের। জন্মলগ্ন থেকে যে দলের সঙ্গে যুক্ত, যে দলের জন্য 'বাহুবলী' ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া তাঁর, তাদের কাছ থেকে 'প্রাপ্য' সম্মান না পেয়ে কার্যতই আঁতে ঘা লাগে অর্জুনের। তাই কোও রকম সাধাসাধিতে না গিয়ে বিজেপি-তে গিয়ে ওঠেন। গেরুয়া দাপটের জোর তো ছিলই, নিজের প্রতাপও কিছু কম ছিল না অর্জুনের। ফলে একরকম হেসেখেলেই ব্যারাকপুর থেকে জয়ী হন তিনি।
বিজেপি থেকে তৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন
কিন্তু কাঁচা পাটের দামের ঊর্ধ্বসীমা নিয়ে সম্প্রতি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সরব হতে শুরু করেন অর্জুন। দিল্লিতে গিয়ে সেই নিয়ে বৈঠকের পরও সুর নরম করেননি অর্জুন। এর পর শনিবার রাতেই ইঙ্গিতপূর্ণ টুইট করেন তিনি। তার পর রবিবার সকাল থেকে শুরু হয় তৃণমূলে যোগদান ঘিরে তৎপরতা। রাজনীতিতে সব সম্ভব, শেষ কিছু নেই বলে জানিয়ে দেন তিনি।