কলকাতা: সব টাকা ভাইপোর কাছে যেত, যারা ধরা পড়ছে, সবাই কালেক্টর। যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের গ্রেফতারির আবহেই নাম না করে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়কে নিশানা করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিন তিনি বলেন, 'নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ৩ হাজার কোটি টাকা তোলা হয়েছে, ভাইপো নিয়েছে ২ হাজার কোটি। নিয়োগ-দুর্নীতিকাণ্ডে সবচেয়ে বেশি লাভবান ভাইপোই। ভাইপোর আপ্ত সহায়ককে ধরলে সব বেরিয়ে আসবে'। 


৫০, ১০০ বা হাজার কোটি নয়! সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে তোলা হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা!! নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের গ্রেফতারির পরে বিস্ফোরক এই অভিযোগ করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এই ইস্যুতে, নাম না করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছেন তিনি। 



নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত যুব তৃণমূল নেতাকে আদালতে তুলে ইডি দাবি করে, কুন্তল ঘোষ জেরায় জানিয়েছেন, নিয়োগের নামে যে টাকা উঠত, তা ঢুকত অন্যদের পকেটে। তিনি শুধু ১০ শতাংশ কমিশন নিতেন! নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে, ১০ শতাংশ কমিশন বাদে বাকি টাকা কাদের পকেটে ঢুকত? কুন্তলের মাথায় কি প্রভাবশালীদের হাত ছিল?


সেই প্রভাবশালীদের কাছেই কি যেত নিয়োগের নামে তোলা টাকা? এই প্রেক্ষাপটেই নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের সুবিধাভোগী বলে আক্রমণ করেছেন শুভেন্দু।



বিরোধী দলনেতা  শুভেন্দু অধিকারী বলছেন, এ ভাইপোকে টাকা দিয়েছে। ভাইপোকে টাকা দিয়েছে। ভাইপোর পিএ মিস্টার রায়কে ধরলেই বেরিয়ে যাবে। বিনয় মিশ্র ছোট। রায় হচ্ছে মেন। ওরা টাকা তুলে সব ৭৫ পার্সেন্ট, ৮০ পার্সেন্ট টাকা ভাইপোকে দিয়েছে। আমরা সব জানি। ওই আপনার হুগলির শান্তনু আছে। এখানে ব্যারাকপুরের একটা আছে। এখানে সাউথ চব্বিশ পরগনায় একাধিক লোককে পাবেন। ওরা হচ্ছে ভাইপোর কালেক্টর। এরা ছোটখাটো, ভিখারি পার্টি। ২-৫ কোটি, ১০ কোটি করে নিয়েছে। মেন বেনিফিসিয়ারি হচ্ছে ভাইপো।


নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তের গোড়া থেকেই কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ উঠছিল। প্রায় ৫০ কোটি টাকার হদিশ মিলেছিল পার্থ চট্টোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে। জেলবন্দি তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল দাবি করেছিলেন, খেলা হয়েছিল প্রায় ১০০ কোটি টাকার!


আর যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষকে গ্রেফতার করে, ৩০ কোটি টাকা তোলার দাবি করছে ইডি। এই প্রেক্ষাপটেই বিরোধী দলনেতার ৩ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ শিহরণ ফেলে দিয়েছে রাজ্য-রাজনীতিতে। এই ইস্যুতেই নাম না করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করতে গিয়ে 


রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও টেনেছেন শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, আমাকে শ্যাম মুখার্জি বলেছে। বিষ্ণুপুরের প্রাক্তন চেয়ারম্যান, প্রাক্তন মন্ত্রী। ১২ কোটি টাকা তুলে দিয়েছিলাম। আমি টাকা ফেরত দিতে পারিনি, চাকরিও দিতে পারিনি। তাই '১৬ সালে হেরে গিয়েছিলাম। এই ইস্যুতে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে তৃণমূলও। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বিপুল পরিমাণ টাকা তোলার অভিযোগ কি প্রমাণ করতে পারবে কেন্দ্রীয় এজেন্সি? সেটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।