কলকাতা: ভারত উদারনীতির জন্য পরিচিত, সেই ঐতিহ্য হারানো চলবে না, দেশের ঐক্য, সংহতি ধরে রাখতে হবে বলে আগেও একাধিক বার মন্তব্য করেছেন তিনি। আনন্দবাজার পত্রিকার শতবর্ষ পূর্তির অনুষ্ঠানেও সেই ভাবনাই তুলে ধরলেন নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেন (Amartya Sen)। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সমাজে সুচিন্তার ধারা ধরে রাখার ক্ষেত্রে আনন্দবাজার পত্রিকার ভূমিকারও ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।
আনন্দবাজার পত্রিকার শতবর্ষ উদ্যাপনে শামিল হলেন অমর্ত্যসেন
শনিবার আনন্দবাজার পত্রিকার শতবর্ষ পূর্তি উদযাপনে নিউটাউনের বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে বিশেষ আনন্দযজ্ঞের আয়োজন হয়। সেখানে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বক্তৃতা করেন অমর্ত্য সেন। বলেন, "আনন্দবাজার চিরকালই সাহসী ও ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে।’’ আজ যখন সুচিন্তিত সমাজের বিশেষ প্রয়োজন, সেই সময় আনন্দবাজার পত্রিকার ভূমিকা মনে আশা জাগায় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এক নজরে অমর্ত্য-বার্তা
- ‘স্বাধীনতার সময় যে আশা ছিল, তার অনেকটাই হয়ত পূর্ণ হয়েছে, কিন্তু অপ্রাপ্তির পরিমাণও নেহাত কম নয়’
- ‘ স্বাধীনতার পর এত বছর কেটে গেলেও, বিনা অপরাধে রাজনৈতিক কারাবাসের রেওয়াজ এখনও চলছে’
- ‘আনন্দবাজার পত্রিকা এই সাহসিকতাকে স্থান দিয়েছে তাদের কাগজে’
- ‘আমাদের গরিব দেশে মেয়েদের অবস্থা অনেক সময়ই দুঃখ জাগায়’
- ‘এ ক্ষেত্রে আনন্দবাজারের ভূমিকা ইতিবাচক এবং উল্লেখযোগ্য’
- ‘সাম্প্রদায়িক এবং বিভাজনের রাজনীতি দেশের মানুষকে নানাভাবে বিব্রত করছে’
- ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে আনন্দবাজারের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য’
- ‘শক্তিমান ও সুচিন্তিত চিন্তাধারর উপর থেকে আমাদের জোর কমানো চলবে না’
- ‘আনন্দবাজার যে আমাদের এই বড় সত্যের দিকে নজর টানার চেষ্টা করছে, তার জন্য ধন্যবাদ জানানোর প্রয়োজন নিশ্চয়ই আছে’
এ দিন আনন্দবাজার পত্রিকার শতবর্ষ পূর্তি অনুষ্ঠানের শুরুতে সঙ্গীত পরিবেশন করেন গায়িকা সমদীপ্তা মুখোপাধ্যায়। সংবর্ধিত করা হয় সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, দেবাশিস ভট্টাচার্য, অপূর্ব সেনগুপ্ত, অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়, দীপঙ্কর দাস পুরকায়স্থ সহ আরও অনেককেই। সঙ্গীত পরিবেশনা করেন প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী মোহন সিংহ খাঙ্গুরা।
শনিবার এই শতবর্ষের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবিপি প্রাইভেট লিমিটেডের চিফ এডিটর অ্যান্ড পাবলিশার অতিদেব সরকার। তিনি বলেন, ‘‘অগ্নিকাণ্ডও আনন্দবাজারকে দমাতে পারেনি, অগ্নিকাণ্ড মাথায় নিয়েও আমরা কাগজ ছাপিয়েছিলাম। তাতে লেখা হয়েছিল, পুড়িয়াও যাহা পোড়ে না। কোনও দুর্ঘটনাই আনন্দবাজারকে আটকাতে পারেনি। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মধ্যেও আমাদের সাংবাদিক নায়করা কাজ করে গিয়েছেন। করোনা দেশের অর্থনীতিকে বিধ্বস্ত করে দিয়েছে। সামাজিক বিভাজন ক্রমশ বাড়ছে। আমরা মনে করি, অর্থনৈতিক সংস্কারের কাজ শুরু হওয়া উচিত। ব্যক্তি স্বাধীনতার গুরুত্ব সবসময়ই থাকবে। সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখা খুবই জরুরি। সরকারের উচিত দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের প্রতি জোর দেওয়া। এবিপি ক্ষমতা নয়, মানুষের পাশে রয়েছে।’’