কলকাতা: অ্যাডিনো ভাইরাসের (Adenovirus) মোকাবিলায় পুরসভার তরফেও শুরু হয়েছে সচেতনতামূলক প্রচার। শারীরিক কোনও সমস্যা হলে যাতে শিশুকে যত দ্রুত সম্ভব পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় সেবিষয়েই জানানো হচ্ছে এলাকার মানুষজনকে। এই বিষয়ে নির্দেশিকাও জারি করেছে পুরসভা। 


বাড়ছে অ্যাডিনো আতঙ্ক: সেই উদ্বেগ। সেই হাহাকার। সেই স্বজনহারানোর যন্ত্রনার ছবি অ্য়াডিনো-আতঙ্ক, যেন ফিরিয়ে আনছে করোনাকালের স্মৃতি।ভয় আরও কয়েকগুণ বাড়িয়ে, ২৪ ঘণ্টায় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও বিসি রায় হাসপাতালে মৃত্যু হল আরও ৫ শিশুর। বি সি রায় শিশু হাসপাতালেও যে ৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে, প্রত্য়েকেই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিল, বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর। এদিকে, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাবে যে দুই শিশু ভর্তি ছিল, হাসপাতাল সূত্রে খবর, দু'জনেরই নিউমোনিয়া হয়েছিল।এদের মধ্যে মধ্যমগ্রামের ৬ মাসের শিশুর অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ থাকায় ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার সকাল ৮টা নাগাদ মৃত্যু হয় ওই শিশুর। অন্যদিকে, হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরের ১ বছর ৮ মাসের শিশুকে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, গায়ে র‍্যাশ ছিল। ওই শিশুকে উদয়নারায়ণপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে কলকাতা মেডিক্যালে রেফার করা হয়। এদিন সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ মৃত্যু হয় ভেন্টিলেটরে থাকা ওই শিশুর।

একজনের ক্ষেত্রে যে অ্যাডিনো সংক্রমণ ছিল, তা মেনে নিয়েছেন, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল। গত দুমাসে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে,বি সি রায় হাসপাতালে ১৫ জনের মৃত্য়ুর খবর সামনে এসেছে। মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয়েছে ১৩ জন শিশুর। ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত, ইন্সটিটিউট অফ চাইল্ড হেলথে মৃত্যু হয়েছে ৫ জন শিশুর। পিয়ারলেসে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন নবান্ন। মঙ্গলবার স্বাস্থ্য়সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্য়মন্ত্রী। বৈঠকে মুখ্য়সচিবও ছিলেন। অ্যাডিনো ভাইরাসের মোকাবিলায় পুরসভার তরফেও শুরু হয়েছে সচেতনতামূলক প্রচার। এই বিষয়ে নির্দেশিকাও জারি করেছে কলকাতা পুরসভা।


অ্যাডিনো আতঙ্কে শিশুদের নতুন ওয়ার্ড: করোনার ভয়ঙ্কর স্মৃতি উসকে দিচ্ছে অ্য়াডিনো। একের পর এক হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও অ্য়াডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের মৃত্য়ু মিছিল। কলকাতার সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে, শিশু ভর্তির সংখ্য়াটা হাজারেরও বেশি। এই পরিস্থিতিতে গতকাল স্বাস্থ্যভবনে জরুরি বৈঠক হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, 



  •  বেলেঘাটা আইডিতে শিশুদের নতুন ওয়ার্ড করা হবে।

  •  বিসি রায় হাসপাতালের চাপ কমাতে বেলেঘাটা আইডিতে ৫০ বেডের ওয়ার্ড।

  • শিশু বিভাগ থাকা হাসপাতালগুলিকে আরও ২ সপ্তাহ সতর্ক থাকার পরামর্শ।

  • ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন সরবরাহ নজরদারিতে রাখার নির্দেশ স্বাস্থ্যদফতরের।

  • জেলা থেকে অপ্রয়োজনীয় রেফার বন্ধের নির্দেশ স্বাস্থ্য দফতরের।

  •  করোনার মতোই কলকাতার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের জেলায় প্রশিক্ষণ দেওয়ার নির্দেশ।

  • শুধু তাই নয় কোনও শিশুর মৃত্য়ু হলে, মৃত্য়ুর কারণ পর্যালোচনা করতে হবে।


আরও পড়ুন: Bankura News: রোগ নিরাময়ের সুলুক সন্ধান, দুয়ারে চিকিৎসক পরিষেবা বাঁকুড়ায়