সন্দীপ সরকার, কলকাতা : অ্যাডিনো-আতঙ্কের ( Adenovirus  )  মধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতালে বাড়ছে শিশু মৃত্যু। ১ মার্চ পর্যন্ত ৪২ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। এর মধ্যে মেডিক্যাল কলেজে এখনও পর্যন্ত ১৫ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।



  • বি সি রায় শিশু হাসপাতালে ( Dr. B C Roy Memorial Hospital For Children )  এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের।

  • এছাড়াও, পার্ক সার্কাসের ইনস্টিটিউট ( Institute of Child Health ) অফ চাইল্ড হেলথে ৫

  • পিয়ারলেস হাসপাতালে ( Peerless Hospital  ) ২

  • বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ( Burdwan edical College) হাসপাতালে ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। 

    অ্যাডিনো-আতঙ্কের মধ্যে বাড়ছে শিশুমৃত্যু। বি সি রায় শিশু হাসপাতালে গেলেন স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্য ও হাসপাতালের রোগী কল্য়াণ সমিচির সদস্য স্বপন সমাদ্দার। স্বপন সমাদ্দারের কাছে হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে নানান অভিযোগ করেন শিশুর আত্মীয়-পরিজনেরা। রোগী কল্যাণ সমিতির সদস্যের দাবি, ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা আক্রান্তদের দেরিতে হাসপাতালে পাঠাচ্ছেন, সেই কারণেই এই ঘটনা। হাসপাতাল কর্মীদের দুর্ব্যবহারের অভিযোগ নিয়ে শিশুর আত্মীয়-পরিজনেদের আশ্বস্ত করেন স্বপন সমাদ্দার।  

    কলকাতার দুটি সরকারি হাসপাতালে ৪ শিশুর মৃত্যু


    মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকালের মধ্যে কলকাতার দুটি সরকারি হাসপাতালে ৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বি সি রায় শিশু হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে ২ শিশুর।

    উত্তর ২৪ পরগনার গোবরডাঙার ৪ বছরের শিশুর জ্বর,  শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায়, প্রথমে হাবড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি বি সি রায় হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পর ভেন্টিলেশনে রাখা হয় শিশুকে। সেখান থেকে বের করার পর, আজ ভোর ৪টে ৫৫ মিনিটে ওই শিশুর মৃত্যু হয়। নিউমোনিয়ার জেরে মৃত্যু বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দিদিকে ভালবাসি, হাসপাতাল হয়েছে, কিন্তু কাজের কাজ হচ্ছে না। ব্যবহার অত্যন্ত খারাপ, দাবি গোবরডাঙার মৃত শিশুর বাবার। অন্যদিকে, রবিবার বারাসাত হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেন বারাসাত পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের নবপল্লির বাসিন্দা এক মহিলা। জন্মের পরই অসুস্থ হয়ে পড়ে সদ্যোজাত। ওইদিনই ফুলবাগানের বি সি রায় হাসপাতালে এনে ভেন্টিলেশনে রাখা হয় নবজাতককে। বুধবার সকালে তার মৃত্যু হয়। 


    কলকাতা মেডিক্যাল কলেজেও ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। চুঁচুড়ার হামিদপুরের ৭ মাসের শিশুর জ্বর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায় ১৯ ফেব্রুয়ারি, চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়। বুধবার ভোরে মৃত্যু হয় একরত্তির। ওই শিশুর জন্মগত হার্টের সমস্যা ছিল। শরীরে অ্য়াডিনো ভাইরাস মেলে। হাসপাতালের দাবি, অ্যাডিনোর জেরে নিউমোনিয়া সংক্রমণ মিটলেও, হার্টের সমস্যার কারণেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। কলকাতা মেডিক্যালে মৃত দ্বিতীয় শিশুর বয়স ২২ দিন। হাওড়ার বাগনানের বাসিন্দা। জ্বর-শ্বাসকষ্ট থাকায়, ১৬ ফেব্রুয়ারি উলুবেড়িয়া হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয়। অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ মেলে। গতকাল রাতে ওই শিশুর মৃত্যু হয়। 


    বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও সোমবার ২ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এদের একজনের বয়স একমাস, আরেকজন ৪ মাসের। হাসপাতালের দাবি, দুই শিশুর মৃত্যুর কারণ অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইলনেস। বর্ধমান মেডিক্যালের তরফে জানানো হয়েছে, শিশু বিভাগে ১২০টির ওপর বেড রয়েছে। বর্তমানে ভর্তি রয়েছে ৯৯ জন শিশু। সূত্রের খবর, এদের অনেকেরই জ্বর, শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রতিদিন গড়ে ১৯-২০ জন শিশু ভর্তি হচ্ছে। পরিস্থিতি বিচার করে আরও ৩০-৪০টি বেডের ব্যবস্থা করা হবে।


     


    এবার বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে দুই শিশুর মৃত্যু হল। একমাস ও ৫ মাস বয়সী দুই শিশুরই অ্যাডিনো ভাইরাসের উপসর্গ ছিল বলে জানিয়েছেন মেডিক্যাল কলেজের সুপার।