ধূপগুড়ি: বহরমপুরে ভাগীরথী দুগ্ধ সমবায় সমিতিতে ঢুকতে গিয়ে বাধার মুখে অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury)।সমবায়ে দুর্নীতির অভিযোগে ডেপুটেশন দিতে গেলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিকে বাধা পুলিশের।  ১৪৪ ধারা জারি, দাবি পুলিশের। বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি পুলিশের।


 প্রসঙ্গত, রাজ্যের একাধিক জেলায় সমবায়ের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি সোনারপুরের লাঙলবেড়িয়া কৃষি সমবায় সমিতিতে দুর্নীতির অভিযোগে অপসারিত করা হয় সরকারি আধিকারিককে। সরানো হয় সমবায় দফতরের স্পেশাল অফিসার সৌগত চক্রবর্তীকে। তাঁর জায়গায় আসেন তিন আধিকারিক। তাঁরাই দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন। পাশাপাশি, ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরতের বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।  


এই কৃষি সমবায়ে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে তুমুল তরজা হয়েছে বেশ কিছুদিন ধরেই। গ্রাহকদের তুমুল বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে। টাকা ফেরতের দাবিতে ব্য়াঙ্কের সামনে রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান গ্রাহকরা। পথ অবরোধ করে আন্দোলন চলে। সেই অবরোধ ঘিরে উত্তপ্ত হয়েছিল এলাকা। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের লাঙলবেড়িয়া এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল। অবরোধের সময় পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কির জেরে কিছুদিন আগে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়, সোনারপুরের লাঙলবেড়িয়া। 


 ২৬ অগাস্ট, টাকা ফেরতের দাবিতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ আছড়ে পড়ে সমবায় সমিতির অফিসের গেটে। আমানতকারীরা কামালগাজি-বারুইপুর বাইপাসে গোবিন্দপুর মোড় অবরোধ করেন। পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।খেটে খাওয়া মানুষের তিলতিল করে জমানো টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সোনারপুর দক্ষিণের লাঙলবেড়িয়া অঞ্চল সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতি লিমিটেডের বিরুদ্ধে।


প্রায় ১০ কোটি টাকা নয়ছয় হয়েছে বলে অভিযোগ। সেই ঘটনায় এবার তৎপর হল সমবায় দফতর। পদক্ষেপ করা হয়েছে সমবায় দফতরের তরফ থেকে। আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরিয়ে দেওয়া হল সমবায় দফতরের স্পেশাল অফিসার সৌগত চক্রবর্তীকে। তাঁর জায়গায় নিয়োগ করা হল ৩ আধিকারিককে। প্রশাস তৎপর হওয়ায় জমানো টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় বুক বাঁধছেন আমানতকারীরা। 


সমবায় সমিতিতে আর্থিক দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছিল ২০২১-এ গঠিত অ্যাডহক কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যানের। প্রশাসনিক তদন্তে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। লাঙলবেড়িয়া সমবায়ের অ্যাডহক কমিটির প্রাক্তন চেয়ারম্যান অজয় দে সরকার বলেন, 'কোনও দুর্নীতি করিনি, টাকা নিইনি। সৌগত অশোক ঘোষ যুক্ত রয়েছে।'


আরও পড়ুন, 'শেষ হাসি আমরাই হাসব, বিজেপি হাসবে..', ধূপগুড়ি উপনির্বাচন নিয়ে দাবি মিতালী রায়ের


সমবায় দফতর সূত্রে খবর, তছরুপের অভিযোগ পাওয়ার পর, ২৮ অগাস্ট সমবায়ের স্পেশাল অফিসার সৌগত চক্রবর্তীকে অপসারণ করা হয়। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মহেশ বসু, শেখর দাস ও সুদীপ্ত চক্রবর্তীকে। এই তিনজন স্পেশাল অফিসার সমবায় দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখবেন। কীভাবে আমানতকাারীদের টাকা ফেরত দেওয়া যায়, সে বিষয়টিও দেখা হবে। লাঙলবেড়িয়া সমবায়ে আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে শেষপর্যন্ত কী হবে, ঘাম ঝরানো পরিশ্রমের টাকা কবে ফেরত পাবেন, গচ্ছিত টাকার পুরোটাই পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে আমানতকারীরা।