সুনীত হালদার, হাওড়া: মুখ্যমন্ত্রীর (CM) কড়া বার্তার পর নড়েচড়ে বসল হাওড়া (Howrah) জেলা প্রশাসন। রাতারাতি রাস্তায় নেমে সমস্যা খতিয়ে দেখলেন পুলিশ (police), প্রশাসন (administration) ও পুর আধিকারিকরা। আজ রাস্তা (road) ধোয়ার (clearance) জন্য সকাল থেকেই নেমে পড়েছিলেন দমকল কর্মী (fire officials) ও পুরকর্মীরা (municipal workers)। ড্রেনেজ ক্যানাল রোডে দমকল ও পুর কর্মীরা জল দিয়ে রাস্তা ধোয়ার পাশাপাশি গাছেও জল দিয়েছেন। সব মিলিয়ে গত কালের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ জানানোর পর থেকেই সরব তৎপর প্রশাসনিক আধিকারিকরা।


কী হল?
এদিন দুপুর একটা নাগাদ ডুমুরজলা হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডের অফিসে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়। তাতে হাজির ছিলেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য, হাওড়া সিটি পুলিশের কমিশনার প্রবীণ কুমার ত্রিপাঠী, পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী-সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। সুজয়  জানান, শহরের উন্নয়নের জন্য সবরকম প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। রাস্তা ধোয়ার জন্য চারটি নতুন গাড়ি আজ থেকে রাস্তায় নামানো হয়েছে। তবে আগুন নেভানো ছেড়ে দমকল কর্মীদের কেন রাস্তা ধোয়াতে নামানো হল সে প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান চেয়ারম্যান। এ নিয়ে বিজেপি কটাক্ষ করেছে প্রশাসনকে। 


কী বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী?
গতকাল নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক থেকে হাওড়ার রাস্তা ও আলো নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, 'হাওড়ার দিক থেকে একবার নবান্নের দিকে এসো! রাস্তার অবস্থা দেখো! একদিনও জল দিয়ে ধোয়ায় না? জল দিয়ে ধোয়ালেও দেওয়ালগুলি পরিষ্কার হয়। কেন আমাকে দেখতে হবে? কেন যাঁরা ওখান দিয়ে যাতায়াত করেন তাঁরা দেখবেন না?' তাঁর দাবি, আগে এই ধোয়ানোর প্রক্রিয়া চালু থাকলেও হঠাৎ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এতেই শেষ নয়। আরও একাধিক বিষয় নিয়ে রীতিমতো উত্তেজিত শোনায় তাঁকে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়,'হুজ ডিউটি ইজ দিস? ইজ দিস মাই ডিউটি? ডিএম, এসপি আছেন। অন্যান্য অফিসাররা রয়েছেন। অথচ আমাকে যেতে যেতে বলতে হবে এই ট্রাইডেন্ট আলোটি খারাপ হয়েছে? আমার এটি ভালো লাগে না। যেই মন্ত্রীর এটা দায়িত্ব, যে বিভাগের এটা দায়িত্ব তার সচিবকেই এগুলির দেখভাল করতে হবে।' এতেই শেষ নয়। কার্যত ধমকের সুরে সমস্যা সমাধানের নির্দেশও দেন তিনি। এরপরই নড়েচড়ে বসে জেলা প্রশাসন। বৈঠকের পরই শহরের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন তারা। প্রসঙ্গত, আরও একাধিক প্রসঙ্গে গত কাল কড়া বার্তা দিতে শোনা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে 'রেফার-রোগ' সারাতে বলেন, 'রেফারের জন্য মৃত্যু হলে, যে রেফার করবেন দায়িত্ব তাঁর।' সঙ্গে মনে করান, 'চিকিৎসায় গাফিলতি যেন না হয়, এটা অপরাধ।' সারপ্রাইজ-ভিজিটের পরামর্শও দেন মুখ্যমন্ত্রী। নাম না করে রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যসচিবের উদাহরণ টেনে বলেন, 'শুনেছি আমাদের এক  স্বাস্থ্যসচিব ছদ্মবেশ নিয়ে জনগণের লাইনে দাঁড়িয়ে পড়তেন। ...শীতকাল আসছে। একটা চাদর, টুপি মুড়ি দিয়ে আপনিও লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লেন।' মমতার বক্তব্য একটাই, খবর দিয়ে পরিদর্শনে গেলে আসল পরিস্থিতি জানা যাবে না। তাই হঠাৎ যাওয়া জরুরি। 


আরও পড়ুন:গঙ্গার ঘাটের অবস্থা দেখে ক্ষোভপ্রকাশ মমতার, মেরামতি করতে তড়িঘড়ি তৎপর পুরসভা!