আবির দত্ত, সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : আর জি কর মেডিক্যালসের সেই নারকীয় ঘটনার পর পেরিয়ে গিয়েছে ৪ টি মাস। ক্রমেই থিতিয়েছে রাজপথে নেমে বিক্ষোভ। উই ওয়ান্ট জাস্টিস - স্লোগানও হয়েছে মৃদু। প্রতিবাদী মানুষ ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন নিজ নিজ কাজে। এখনও মেলেনি বিচার। অধরা বহু প্রশ্নের উত্তর। একের পর এক শুনানি হচ্ছে শীর্ষ আদালতে। এরই মধ্যে বদল হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি। নতুন প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চে মঙ্গলবারের শুনানির পর, সুপ্রিম কোর্ট এই মামলার পরবর্তী তারিখ দিয়েছে মার্চ মাসে। এর মধ্য়ে এবার এই মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন নিহত চিকিৎসকের পরিবারের আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার।


এর মধ্যেই বারবার নির্যাতিতার পরিবার নিজেদের হতাশা ব্যক্ত করেছেন। এখনও মেয়ের মৃত্যুর পিছনে আসল দোষীদের নাম জানা গেল না, জানতেই পারলেন না ঠিক কী ঘটেছিল সেদিন তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে। সবকিছুর পিছনে কি একা সঞ্জয় রাই? নাকি জড়িয়ে রয়েছে আরও অনেকে? উত্তরগুলো আজও অজানা। এর মধ্যেই মামলা থেকে সরে দাঁড়ালেন আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার।


বুধবার তাঁর অফিস থেকে জানানো হয়েছে, এই মামলা থেকে তিনি সরে যাচ্ছেন। আইনজীবীর অফিসের তরফে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এখনও পর্যন্ত ৪৩ জনের বয়ান নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্তের জামিনের জোরালো বিরোধিতা করা হয়েছে। এখনও তারা জামিন পায়নি কেউ।  একজন আইনজীবী হিসাবে তিনি তাঁর পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন। সেই সঙ্গে আরও বলা হয়েছে, এই পর্যায়ে, হস্তক্ষেপের কারণে, বৃন্দা গ্রোভার মামলা থেকে সরে আসছেন। 


প্রথমে নির্যাতিতার পরিবারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করছিলেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। সেপ্টেম্বর মাসে আইনজীবী বদল হয়। নির্যাতিতার পরিবারের তরফে আইনজীবী হয়ে দাঁড়ান বৃন্দা গ্রোভার। শুধু সুপ্রিম কোর্টে নয় নির্যাতিতার বাবা-মায়ের তরফে শিয়ালদহ আদালতেও আরজি কর মামলার শুনানিতে  উপস্থিত ছিলেন বৃন্দা গ্রোভারের টিমের আইনজীবীরা। শিয়ালদা হাইকোর্টে যেদিন ট্রায়াল শুরু হয়,  সেদিন বৃন্দা নিজেও উপস্থিত ছিলেন শিয়ালদহ আদালতে। তার পরের শুনানির  দিনগুলিতেও তাঁর টিমের আইনজীবীরা ছিলেন আদালতে। তাহলে ঠিক কী কারণে তিনি মামলা ছাড়লেন, ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে। 


এই পরিস্থিতিতে কে আইনি লড়াই করবে নির্যাতিতার পরিবারের হয়ে ? জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স-এর সদস্য কৌশিক চাকি জানালেন, একদিনও যাতে নির্যাতিতার বাবা-মা বিচারহীন না থাকেন, সে কারণেই নতুন আইনজীবী দেওয়া হয়েছে।  নির্যাতিতার পরিবারের হয়ে আপাতত লড়বেন আইনজীবী রাজদীপ হালদার, আইনজীবী অমর্ত্য দে এবং আইনজীবী  তড়িৎ ওঝা ।  সেই সঙ্গে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স এর তরফে জানানো হয়েছে,  হঠাৎ করেই আইনজীবীর সরে যাওয়ার বিষয়টি ঠিকভাবে দেখছে না তারা।  কেন আইনজীবী মাঝপথে এমনভাবে ছেড়ে গেলেন, তার কারণ অজানা।  অন্য আইনজীবীর সাহায্য নেওয়া হবে। 


বৃহস্পতিবার শিয়ালদা কোর্টে পেশ করা হয় খুন ধর্ষণকাণ্ডে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। নিহত তরুণী চিকিৎসকের মা-বাবার উপস্থিতিতে চলে সাক্ষ্যগ্রহণ পর্ব।  


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।