কলকাতা: 'অপরাজিতা বিল' ফেরত পাঠাল রাজভবন। বিলে মৃত্যুদণ্ডের সংস্থান নিয়ে আপত্তি তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রের আপত্তির প্রসঙ্গ তুলে বিল ফেরত, খবর রাজভবন সূত্রে। অপরাজিতা বিলে BNS-র ৬৪ ধারার থেকেও কড়া শাস্তির প্রস্তাব। ১০ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রস্তাবে আপত্তি কেন্দ্রের। বিলে প্রস্তাবিত শাস্তিকে নিষ্ঠুর এবং সামঞ্জস্যহীন বলে মনে করছে কেন্দ্র, অপরাজিতা বিল ফেরত পাঠিয়ে এমনই দাবি রাজভবনের।
উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনকড়ের আচমকা পদত্য়াগ ঘিরে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। এই জগদীপ ধনকড়ের সময়েই রাজভবন এবং নবান্নর সংঘাত নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছোয়। সেই সংঘাতের আঁচ কিছুটা থেকে গেছে বর্তমান রাজ্য়পাল সি ভি আনন্দ বোসের জমানাতেও। এবার ফের কি সেই সংঘাতের পারদ চড়তে পারে? প্রশ্নটা উঠছে, কারণ, এবার রাজ্য়ের অপরাজিতা বিল ফেরত পাঠালেন রাজ্য়পাল সি ভি আনন্দ বোস। কেন্দ্রের আপত্তির প্রসঙ্গ তুলে বিল ফেরত পাঠিয়েছেন তিনি।
রাজভবন সূত্রে আরও খবর, এই বিলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ২০২৩-এর কয়েকটি সংশোধনী সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণ রাজভবনকে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। অপরাজিতা বিলের প্রস্তাবিত সংশোধন অনুযায়ী, ধর্ষণের শাস্তি বাড়িয়ে, ন্যূনতম ১০ বছরের জেলের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। রাজভবনের তরফে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই পরিবর্তনকে অত্যন্ত কঠোর ও সামঞ্জস্য়হীন বলে মনে করেছে। আরেকটি সংশোধনীতে BNS-এর ৬৫ ধারা বাতিল করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। যার ফলে, ১৬ ও ১২ বছরের কম বয়সী মেয়েদের ধর্ষণের ক্ষেত্রে, শাস্তির ফারাক মুছে যাবে। রাজভবন সূত্রে দাবি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক মনে করছে, এমনটা হলে, শাস্তির সমানুপাতিক হার থাকবে না।
আর জি কর কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় আছড়ে পড়ার পর, এই আলাদা বিল আনার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর, বিধানসভায় 'অপরাজিতা উইমেন অ্যান্ড চাইল্ড (ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্রিমিনাল লজ় অ্য়ামেন্ডমেন্ট) বিল ২০২৪' পেশ করে রাজ্য সরকার। বিল পাশের জন্য় পাঠানো হয় রাজভবনে। সূত্রের খবর, সে ব্য়াপারেই, রাজভবন জানিয়েছেন, নির্যাতিতার মৃত্যু হলে বা সে কোমায় গেলে, ফাঁসির সাজা বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এই বিলে। কিন্তু, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এই বাধ্য়তামূলক মৃত্য়ুদণ্ডের প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে।
রাজভবনের তরফে বলা হয়েছে, এসব পর্যবেক্ষণ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করে, উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য, বিলটি সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে। রাজভবনের তরফে জানানো হয়েছে, অপরাজিতা নারী ও শিশু বিল ২০২৪, রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য় সংরক্ষিত রেখেছেন রাজ্য়পাল সিভি আনন্দ বোস।