মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায়, বোলপুর: গরুপাচার মামলায় বীরভূমে ফের সিবিআই (CBI) তত্পরতা। অনুব্রত-কন্যার সংস্থা, শিবশম্ভু রাইস মিলের পর, এবার অনুব্রতর আত্মীয় রাজা ঘোষকে নোটিস দিল সিবিআই। নোটিস পেয়ে রতনকুঠিতে সিবিআই অস্থায়ী ক্যাম্পে রাজা ঘোষ। একসময় বীরভূম (Birbhum) জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান ছিলেন রাজা। অনুব্রতর আত্মীয় রাজা ঘোষ চালকলেরও মালিক। নোটিস পাঠিয়ে তলব বীরভূম জেলার চালকল মালিক সংগঠনের সভাপতি ভরত ঘোষকেও। গতকাল সাঁইথিয়ার যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সঞ্জীব মজুমদারকে ৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই। 


গরুপাচার মামলায় (Cow Smuggling Case ) এবার সিবিআইয়ের (CBI) নজরে অনুব্রত মণ্ডলের আত্মীয়দের সম্পত্তি। সূত্রের খবর, অনুব্রতর আত্মীয়ের নামে থাকা বোলপুরের (Bolpur)  শিবশম্ভু রাইস মিলের মালিকানা সংক্রান্ত নথি ও ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট চাওয়া হয়। সূত্রের খবর, বোলপুরের জমি রেজিস্ট্রি অফিসের কাছে অনুব্রতর পৈতৃক গ্রাম হাটসেরান্দিতে দুটি জমির মালিকানা সংক্রান্ত নথিও চায় সিবিআই। ২ শতক ও ৪১ শতকের ওই দুটি জমির নথি এদিন সিবিআইয়ের (CBI) অস্থায়ী ক্যাম্পে জমা দেন জমি রেজিস্ট্রি অফিসের এক কর্মী।


সিবিআইয়ের নজরে অনুব্রত মণ্ডলের আত্মীয়দের সম্পত্তি: এদিন বোলপুরে সিবিআইয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পে ডেকে পাঠানো হয় জমি রেজিস্ট্রি অফিসের এক কর্মীকে। অনুব্রত মণ্ডলের পৈতৃক বাড়ির কাছে যে জমি সেই জমি সংক্রান্ত নথি চেয়ে পাঠানো হয়। একজন সিবিআই আধিকারিক যান শিবশম্ভু রাইস মিলে। চাওয়া হয়েছে ওই রাইস মিলের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট। গরুপাচার মামলায় অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের সংস্থার নামে এবার নোটিস জারি করল সিবিআই। সূত্রের খবর, ANM অ্যাগ্রোকেম ফুড প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই সংস্থার আধিকারিকদের সোমবারের মধ্যে ডেকে আয়-ব্যয় সংক্রান্ত তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। ANM অ্যাগ্রোকেম ফুড প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই সংস্থার ডিরেক্টর পদে রয়েছেন অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা মণ্ডল ও অনুব্রত ঘনিষ্ঠ বিদ্যুত্‍বরণ গায়েন। 


গরু পাচার মামলার চার্জশিটে বিস্ফোরক দাবি করেছে সিবিআই। কেউ অনুব্রত মণ্ডলের বাড়ির পরিচারক। কেউ রাঁধুনি। কিন্তু, তাঁদের নামে খোলা অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই লক্ষ লক্ষ টাকার লেনদেন হয়েছে। এই অভিযোগের স্বপক্ষে গরু পাচার মামলার চার্জশিটে এনিয়ে বিস্ফোরক দাবি করল সিবিআই। তাদের দাবি, এই বিপুল টাকা অনুব্রত মণ্ডলের কাছে আসত গরু পাচারকারীদের থেকে। তারপর সেই টাকা দিয়ে পরিচারক রাঁধুনিদের নামে বেনামি সম্পত্তি কিনতেন বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি। চার্জশিটের ৭ নম্বর পাতায় দাবি করা হয়েছে, অনুব্রত মণ্ডল বাড়ির কর্মীদের নামে অ্যাকাউন্ট খুলতেন। তারপর তাঁদের সই করা চেক দিয়ে সেই অ্যাকাউন্টে গরু পাচারের টাকা জমা করতেন। বাড়ির কর্মীদের নামে অনুব্রত দামী দামী গাড়িও কিনতেন বলে চার্জশিটে দাবি করেছে সিবিআই। চার্জশিটের ৮ নম্বর পাতায় বিদ্যুৎবরণ গায়েনের উল্লেখ করা হয়েছে।