সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: মোমিনপুরকাণ্ডে পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ হাইকোর্টের ( Calcutta High Court)। এনআইএ (NIA) আইনের ৬ নম্বর ধারা কার্যকর করেছে পুলিশ? জানতে চাইল আদালত। ঘটনার পর স্থানীয় থানা কি রাজ্যকে রিপোর্ট পাঠিয়েছে? প্রশ্ন আদালতের। পাঠালে সেই রিপোর্ট কি কেন্দ্রকে পাঠিয়েছে রাজ্য? জানতে চাইল আদালত। নাহলে দুপুর দু’টোর মধ্যে রিপোর্ট পাঠানোর প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ। কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে এবিষয়ে জানানোর নির্দেশ বিচারপতির। নির্দেশ কার্যকর না হলে ডেকে পাঠানো হতে পারে পুলিশ কমিশনারকে, জানাল হাইকোর্ট।
শনিবার রাতে ঘটনার সূত্রপাত মোমিনপুরে। ময়ূরভঞ্জ রোডে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষের জেরে শুরু হয় বোতল ছোড়াছুড়ি। দু’পক্ষের মধ্যে ইটবৃষ্টিও হয়। শনিবার রাতের পর, গতকাল দুপুরে ফের উত্তেজনা ছড়ায় ওয়াটগঞ্জ ও একবালপুর থানা এলাকায়। একবালপুর থানা ঘেরাও করে উত্তেজিত জনতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। ঘটনায় কলকাতা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিক-সহ বেশ কয়েকজন আহত হন। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। নামানো হয় র্যাফ। মোমিনপুরে অশান্তির ঘটনায় আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন আইনজীবী। আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্তর আবেদনের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করার অনুমতি দেয় বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ। মোমিনপুরের ঘটনায়, কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে চিঠি দিয়েছিলেন নবেন্দুকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি। চিঠিতে তিনি আবেদন করেন, অশান্তি আটকাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করুক কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি সেনা বা আধা সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হোক। চিঠিটিকে জনস্বার্থ মামলা হিসাবে গ্রহণ করার পাশাপাশি বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে দ্রুত শুনানির আর্জি জানানো হয়েছে।
মোমিনপুরের ঘটনায় সিট গঠন এদিন করল হাইকোর্ট। রাজ্য পুলিশের ডিজি এবং কলকাতার পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে সিট গঠন আদালতের। অপরাধীদের চিহ্নিত করা, তাঁদের উদ্দেশ্য জানা এবং এলাকার শান্তি বজায় রাখতে পদক্ষেপ করবে সিট। অন্যদিকে, ঘটনায় ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক লড়াই তুঙ্গে উঠছে। মোমিনপুরে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও রাজ্যপালকে দিনদুয়েক চিঠি দেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেছে, বলেও চিঠিতে অভিযোগ করেন তিনি। এই দাবিতেই বিধানসভা থেকে মিছিল করে, রাজভবনেও যান বিজেপি বিধায়করা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, অবিলম্বে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হবে। রাজ্যপাল মুখ্যসচিবকে অ্যাডভাইস করুক কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার জন্য। বিস্ফোরণের ঘটনার এনআইএ তদন্ত।ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণ বা আর্থিক সাহায্য।