শৌভিক মজুমদার, কলকাতা : হাইকোর্টের পর সুপ্রিম কোর্টেও স্বস্তি আর জি কর আন্দোলনের প্রতিবাদী মুখ অনিকেত মাহাতোর। অনিকেত মাহাতোকে ২ সপ্তাহের মধ্যে আর জি কর হাসপাতালে পোস্টিং দিতে হবে। রাজ্য সরকারের আর্জি খারিজ করে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। ৮৭১ জনের মধ্য়ে ৮৬৯ জনের পোস্টিং স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর প্রযোজ্য হলেও অনিকেত মাহাতো সহ ২ চিকিৎসকের ক্ষেত্রে কেন হয়নি তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন বিচারপতি। একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্ন, বাকিদের পোস্টিং মেধাভিত্তিক হলে, অনিকেত মাহাতোর কেন নয়? আর জি কর কাণ্ডের অন্যতম প্রতিবাদী মুখ অনিকেত মাহাতো।
সম্প্রতি তাঁর পোস্টিং নিয়ে দানা বাঁধে বিতর্ক। অনিকেত মাহাতোর অভিযোগছিল, কাউন্সেলিংয়ের সময় ফার্স্ট ইয়ার সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর নাম ছিল আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজে। অথচ তাঁকে নিয়োগ করা হয়নি। তাঁকে পাঠানো হয় রায়গঞ্জ মেডিক্য়াল কলেজে। এরপরই রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্য়ালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান আর জি করের প্রতিবাদী চিকিৎসক। গত ২৪ সেপ্টেম্বর সেই মামলায় বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু নির্দেশ দেন, অনিকেত মাহাতোকে পোস্টিং দিতে হবে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজেই। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য সরকার। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চও গত ৬ নভেম্বর সেই রায় বহাল রাখে। এরপর সেই রায় নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার। সেখানেও রাজ্য সরকারের আবেদন খারিজ হয়ে গেল।
অনিকেত বলছেন, তিনি আশা রাখবেন যে ২ সপ্তাহের মধ্যে নিশ্চয় তাঁকে জয়েন করানো হবে। তবে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে কিছুটা সংশয়েও রয়েছেন তিনি। রাজ্য সরকার আদৌ ২ সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে আর জি করে পোস্টিং দেবে কিনা, তা নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে তাঁর। সুপ্রিম কোর্টে স্বস্তির পর অনিকেত এও অভিযোগ করেছেন যে, রাজ্য সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এই কাজ করেছে। নাহলে এই ধরনের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার প্রয়োজন ছিল না বলেও মনে করছেন অনিকেত মাহাতো। তাঁর কথায়, 'রাজ্য সরকার যে একটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জায়গা থেকে কাজ করছে এটা পরিষ্কার। নাহলে এ ধরনের পোস্টিং মামলা নিয়ে অতীতে কোনও রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছে বলে আমার জানা নেই। আমি নিজেও মনে করি যে, এর জন্য সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কোনও প্রয়োজন ছিল না যেখানে, সিঙ্গল বেঞ্চ এবং ডিভিশন বেঞ্চের রায় খুব স্পষ্ট এবং পরিষ্কার ছিল। আমি আশা রাখব যে রাজ্য সরকার ২ সপ্তাহের মধ্যে জয়েন করাবে। তবে সিঙ্গল বেঞ্চ, ডিভিশন বেঞ্চ মিলিয়ে অতীতের দীর্ঘ ৭ মাসের যে অভিজ্ঞতা, তার থেকে মনে করি না যে রাজ্য সরকার স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে কাজ করবে। তবে প্রতিহিংসার বিরুদ্ধে তো লড়তেই হয়। আমি এবং ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফোরাম আমরা যেমন ভাবে করছি, সেভাবেই এগিয়ে নিয়ে যাব।'