করুণাময় সিংহ, মালদা: সামনেই আলু চাষের সময়। তার আগে, মালদায় সারের কালোবাজারির অভিযোগ। সরকার (WB Govt) নির্ধারিত দামের থেকে বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ কৃষকদের (Farmers) একাংশের। সারের কালোবাজারি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান মহিষবাথানি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের কৃষকরা। আর, এনিয়েই শুরু হয়েছে রাজনীতি। সারের কালোবাজারির নেপথ্যে তৃণমূলের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বিজেপি (BJP) বিধায়ক। পাল্টা, বিজেপির বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ব্লক কৃষি সহ-অধিকর্তা।
বছর ঘুরতে না ঘুরতেই ফের সারের কালোবাজারির অভিযোগ। শীতের শুরুতে আলু চাষে প্রয়োজন অধিক পরিমাণে রাসায়নিক সার। আর গত বছরের রেস কাটতে না কাটতে এ বছরও রাসায়নিক সার নিয়ে উঠছে কালোবাজারির অভিযোগ। যার ফলে সমস্যা পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। মালদা জেলার পুরাতন মালদা ব্লকে হেক্টরের পর হেক্টর জমিতে আলু উৎপাদন হয়ে থাকে।
এদিকে কৃষকদের অভিযোগ, আলু চাষে সার হিসেবে NPK সারের চাহিদা বেশি যার ফলে সরকারি নির্ধারিত দাম থেকেও বেশি নেওয়া হচ্ছে। যেখানে সরকারি নির্দেশিকা রয়েছে প্রিন্ট রেট অর্থাৎ সারের বস্তায় লেখা থাকা যে দাম রয়েছে সে দামেই বিক্রি করতে হবে সার। তবে একশ্রেণীর অসাধু সার ব্যবসায়ীরা কারোর যোগসাজশে NPK সারের প্রিন্ট রেট ১,৪৭০ টাকা থেকে ৪০০- ৫০০ টাকা চড়া দামে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ। যার কারণে লাভবান হচ্ছে এক শ্রেণীর অসাধু সার ব্যবসায়ীরা। ফলে বাধ্য হয়ে চড়া দামে কেনা ছাড়া গতি নেই কৃষকদের।তবে এই কালোবাজারির পিছনে কৃষি দফতর জড়িত থাকার অভিযোগও উঠছে।
এদিকে রাসায়নিক সারের কালোবাজারির অভিযোগ তুলে,পুরাতন মালদা ব্লকের মহিষবাথানি গ্ৰাম পঞ্চায়েতের কৃষকেরা একত্রিত হয়ে কালোবাজারির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে নামলেন। এদিন আদিনা হাট খোলা এলাকায় সারের কালোবাজারির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালেন। তবে কৃষকদের আরও গুরুতর অভিযোগ রাসায়নিক দোকানে সার কিনতে গেলে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে এবং পাকা রসিদ দেওয়া হচ্ছে না।
যদিও সার ব্যবসায়ীর একাংশের দাবী, 'বাজারে যে সারের চাহিদা রয়েছে সেই সারের যোগান খুবই কম। ডিলারদের কাছ থেকে সঠিক দামে পাচ্ছিনা। যার ফলে বেশি দামে কিনে বিক্রি করতে হচ্ছে কৃষকদের কাছে।' তবে রাসায়নিক সারের কালোবাজারি নিয়ে সরাসরি ব্লক কৃষি সহ-অধিকর্তা সৌমজিৎ মজুমদার জানান,যে সমস্ত অসাধু ব্যবসায়ীরা এই কালোবাজারির সাথে যুক্ত তা প্রমান হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনত করা পদক্ষেপ নেওয়া হবে এবং লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
মালদা বিধান সভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক গোপাল চন্দ্র সাহা বলেন,কৃষকদের দাবি সঠিক। সারের কালোবাজারি হচ্ছে।এর সঙ্গে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সহ আধিকারিকেরা যুক্ত রয়েছে। এর পেছনে তৃণমূলের মদত রয়েছে।কৃষি মন্ত্রী পর্যন্ত বিষয়টি জানেন। সেই কারণে কৃষকরা আন্দোলন করছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানায়।
মালদা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি দুলাল সরকার এই বিষয়ে বলেন, বেশ কিছু অভিযোগ ওই এলাকা থেকে পাওয়া যাচ্ছে। বিজেপির মধ্যে ওই এলাকায় সারের কালোবাজারি চলছে। প্রশাসনকে বলব বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে।