কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে হেনস্থার ঘটনায় এবার একটি ভাইরাল অডিও ক্লিপ সামনে আনল বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। সেখানে পুলিশকে পদক্ষেপ না করার জন্য আগে থেকে বলা রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। এই ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। তবে উপাচার্যের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, ঘটনার সময় পুলিশকে বলা হলেও কেউ আসেনি।


ভাইরাল অডিও: বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে উপচার্যকে হেনস্থা। অশ্রাব্য গালিগালাজ, ভাইরাল হওয়া এই ভিডিও ঘিরে রাজ্য জুড়ে যখন নিন্দার ঝড় উঠেছে, তখন এই ঘটনায় আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের প্রকাশ করা একটি ভাইরাল অডিও ক্লিপ শোরগোল ফেলে দিয়েছে। যদিও পড়ুয়াদের দেওয়া এই অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। কিন্তু কী রয়েছে এই অডিও ক্লিপে?


কণ্ঠ ১: টেকনোসিটি থানার IC অনিন্দ্য রায়কে ফোন করে বলে দেওয়া হয়েছে, আলিয়াতে বিক্ষোভ হবে। আপনি নাক গলাবেন না।


কণ্ঠ ২: না, ওরা টেকনোসিটি না। ওরা হচ্ছে নিউটাউন থানা।


কণ্ঠ ১: না, টেকনোসিটি এটা। আলিয়া ইউনিভার্সিটি এখন টেকনোসিটি হয়ে গেছে।


কণ্ঠ ২: তাই?


কণ্ঠ ১: হুঁ হুঁ। অনিন্দ্য রায় আছে।


কণ্ঠ ২: টেকনোসিটি থানাটা তাহলে কোথায়?


কণ্ঠ ১: ওদের জিজ্ঞেস করে নাও না, ওখানে এরা আছে।


কণ্ঠ ২: না, আমাদের কিন্তু আগে নারকেল (NEW) বাগানের পাশে...


কণ্ঠ ১: না, আগে ছিল। এখন টেকনোসিটি হয়ে গেছে।


কণ্ঠ ২: ও, তাহলে এখন মানে পুলিশ স্টেশন চেঞ্জ হয়েছে?


কণ্ঠ ১: ওটা একদম সর্বোচ্চ মহল থেকে এসেছে। ইনফর্মেশন। আমি কালকে বলে এসেছিলাম। ততক্ষণ পর্যন্ত তোমরা যাবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না সমস্ত... রেডি হচ্ছে। পুলিশের সঙ্গে কথা হচ্ছে। ওরা ৯টা থেকে ফোন করছিল। আমি বললাম এখনও কথা হয়নি। এখনও কথা হয়নি। তার পরে যখন কথা হল আমি বললাম, পুলিশের সঙ্গে এবার কথা হয়ে গেছে উপর মহলের। এবার পুলিশ খালি বলেছে...অনুরোধ করেছে...বাইরে যাতে মারামারি না করে, গেটের বাইরে। আমি বলেছি, মারামারি হবে না। আর বাইরে মারামারি করতে বারণ করেছে।


কণ্ঠ ২: না, না, সেটা তো অবশ্যই। প্রতিষ্ঠানের ভিতরে হলে সেটা...বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্তিয়ার। বাইরে হলে...রাস্তায় হলে সেটা অবশ্যই পুলিশ অ্যাকশন নেবে।


কণ্ঠ ১: তো, গেটের বাইরে মারামারি করতে বারণ করেছে।


উপাচার্যকে ঘিরে হেনস্থা: সূত্রের খবর, শুক্রবার এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে উপাচার্যকে ঘিরে হেনস্থার ঘটনা ঘটে। তাত্‍পর্যভাবে উপাচার্যর অভিযোগ, ঘটনার সময় তিনি পুলিশকে খবর দিলেও, কেউ আসেনি। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহম্মদ আলি বলেন, আমি অসহায় বোধ করছিলাম। ছেলেগুলো এরকম আমাকে করছে। কেন করছে জানি না। গালাগাল করছি। বাধ্য হয়ে টেকনোসিটি থানার আইসিকে ফোন করি। তিনি বললেন দেখছি দেখছি। কিন্তু তারপর আর পুলিশ আসেনি।’’


এরপরেই প্রশ্ন উঠছে,  তাহলে কি পরিকল্পনা করেই উপাচার্যকে হেনস্থা করা হয়েছিল?  আগে থেকেই পুলিশকে কোনও পদক্ষেপ না করার জন্য বলা ছিল? উপাচার্যকে হেনস্থায় ইন্ধন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকেও? জল্পনা উস্কে দিয়েছেন আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েরই তৃণমূলপন্থী অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপা-র এক নেতার মন্তব্য। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে ওয়েবকুপার সভাপতি মুখলেসুর রহমান বলেন, “এটা পূর্ব পরিকল্পিত। এটা প্ল্যান্ড, এর বেশি নয়। বাইরের লোকের ইন্ধন ছিল।‘’ পড়ুয়াদের দেওয়া ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপের একটি কণ্ঠস্বর নিজের বলে দাবি করেছেন তৃণমূল ঘনিষ্ঠ জিম নওয়াজ। যদিও তাঁর দাবি, ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপের কথোপকথন অনেক আগেকার।


আরও পড়ুন: North 24 Parganas: কর্মিসভায় পরিচয়পত্র দেওয়া নিয়ে মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক, কাঠগড়ায় তৃণমূল নেতা