আবির দত্ত, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jadavpur University) ছাত্রের মৃত্যুতে ধৃত ৬ জনের ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল আলিপুর আদালত। ধৃত ৬ জনের মধ্যে ৩ জন বর্তমান ও ৩ জন প্রাক্তন পড়ুয়া। ধৃত ৬ জনের মধ্যে একজনকে জম্মু থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে, আদালতে জানায় পুলিশ। তল্লাশি চালিয়ে ৬টি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি প্রথমে ধৃতদের জেরা করে মেলে ৬ জনের নাম। আর কেউ জড়িত কি না, খুঁজে বের করতে হবে, বলে জানিয়েছে পুলিশ। 


ধৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯: যাদবপুরের পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে ৩ পড়ুয়া ছাড়াও রয়েছেন ৩ জন প্রাক্তনী। এই নিয়ে যাদবপুরকাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ৯। এদের মধ্যে ৪ প্রাক্তনী ও ৫ জন পড়ুয়া রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পর থেকে জিজ্ঞাসাবাদে একই বয়ান দিচ্ছিলেন পড়ুয়ারা। বয়ানের বাঁধা গৎ প্রাক্তনীদের শেখানো বুলি বলেই মনে করেছিলেন তদন্তকারীরা। এর পরই টানা জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে আরও কয়েকজনের নাম। ঘটনার পরেই কয়েকজন তড়িঘড়ি হস্টেল ছাড়ায় সন্দেহ বাড়ে পুলিশের। গতকাল রাতে অভিযান চালিয়ে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় আরও ৬ জনকে।                                                                                                


কারা এই ধৃত পড়ুয়া?  যাদবপুরকাণ্ডে (Jadavpur University) নতুন যে ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁদের মধ্যে রয়েছেন তিন প্রাক্তনী অসিত সর্দার, সপ্তক কামিল্যা ও সুমন নস্কর। দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলির বাসিন্দা অসিত সংস্কৃত বিভাগের চলতি বছরের পাস আউট। আরেক সদ্য প্রাক্তনী সুমন মন্দিরবাজার ও পূর্ব মেদিনীপুরের এগরার বাসিন্দা সপ্তক এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স বিভাগের প্রাক্তনী। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন ৩ পড়ুয়া। এদের মধ্যে রাজারহাটের নারায়ণপুরের বাসিন্দা অঙ্কন সর্দার ও জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দা মহম্মদ আরিফ সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং তৃতীয় বর্ষ এবং আসানসোলের বাসিন্দা আসিফ আজমল ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়া। ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় এঁরা কোনও না কোনওভাবে যুক্ত ছিলেন বলে মনে করছে পুলিশ।


সেই রাতে ঠিক কী হয়েছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্য়ালয়ে? গত ১০ অগাস্টেই ওলটপালট হয়ে যায় সব। এদিন মধ্যরাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের  পড়ুয়ার রহস্যমৃত্যু হয়। গভীর রাতে তিন তলার বারান্দা থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখম হয় সে। পরে হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয়। স্বাভাবিক মৃত্যু নয় বলে প্রথমেই অভিযোগ করেছিল তাঁর সহপাঠীর। সুস্থ স্বাভাবিক এক ছাত্রের কী করে মৃত্যু হল? প্রশ্ন তোলে পরিবার। শুরু হয় তদন্ত। তার পরেই প্রকাশ্যে আসে যাবতীয় তথ্য। খুনের মামলা দায়ের করেন মৃত ছাত্রের বাবা। পাশাপাশি জোরাল হয় যাদবপুরের ব়্যাগিং-এর অভিযোগও। ইতিমধ্যেই ছাত্রমৃত্যুতে গ্রেফতার করা হয়েছে ৯জনকে। তদন্তকারীদের আতসকাঁচের তলায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে রেজিস্টার, ডিন, সুপারকে। যদিও প্রশ্ন উঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। সেদিন রাতে আরও একটু তৎপর হলেই কি বেঁচে যেত একটা প্রাণ? এই অপরাধের শিকড় কোথায়? এ কি হিমশৈলের চূড়ামাত্র? সব মিলিয়ে হাজারও প্রশ্ন তুলেছে একটা মৃত্যুর ঘটনা।



আরও পড়ুন: JU Student Death:রাত ৮টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত প্রবেশে পরিচয়পত্র বাধ্যতামূলক, ঘোষণা যাদবপুরের রেজিস্ট্রারের