অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প নিয়ে আইনি লড়াই জারি রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে রাজ্যের বনমন্ত্রীর আশ্বাসে অনেকটাই স্বস্তি পেলেন বক্সার পর্যটন ব্যবসায়ীরা। এর আগে আদালতের নির্দেশে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল পর্যটন ব্যবসার। তবে এবার মন্ত্রীর আশ্বাসে কিছুটা নিশ্চিন্তেই ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, ২০১৫ সালে পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত উত্তরবঙ্গের পরিবেশগত ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে একটি মামলা রুজু করেছিলেন। দীর্ঘ ৭ বছর পর গত ৩০ মে সেই মামলার নিষ্পত্তি হয়। সেখানে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি আলিপুরদুয়ার জেলার অন্তর্গত বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প নিয়ে বেশ কিছু নির্দেশ দেয় আদালত। সেখানে বলা হয় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভেতরে সমস্ত বাণিজ্যিক কাজকর্ম বন্ধ করতে হবে। বনাঞ্চলের ভেতরে কোনও হোটেল, রিসর্ট, রেস্টুরেন্ট রাখা যাবে না। থাকলে তা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। শুধু তাই নয়, সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ১ কিমি এর মধ্যে কোনো প্রতিষ্ঠানই থাকতে পারবে না। এমনটাই নির্দেশ দেয় আদালত।
এই নির্দেশের পরেই নড়ে চড়ে বসে বক্সা বনদফতর। বনদফতরের তরফে সেই নির্দেশ দেওয়া হয় বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভেতরে অবস্থিত বক্সা-জয়ন্তির পর্যটন ব্যবসায়ী-সহ সমস্ত ব্যবসায়িক সাধারণ প্রতিষ্ঠানকেও। যা নিয়ে আশঙ্কায় পড়ে যায় বক্সার পর্যটন ব্যাবসায়ীরা। কারণ জঙ্গল নির্ভর পর্যটনই এই অঞ্চলের মানুষদের একমাত্র রুটি-রোজগার।
আরও পড়ুন, ‘নতুন আরও ৭টি জেলা রাজ্যে’ ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর, বুধবার মন্ত্রিসভার রদবদল
এই অবস্থায় গত ১২ জুলাই তৃণমূলের ধূপগুড়ির জনসভায় আসা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেও সমস্যা সমাধানের আর্জিও জানান এখানকার পর্যটন ব্যবসায়ী মহল। এরপর সে অঞ্চল সফরে আসেন রাজ্যের বনমন্ত্রীর। সেখানেই মন্ত্রী জানান, বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প নিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতের এই রায়ের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে তারা নতুন করে অংশগ্রহণ করতে চলেছেন।
তিনি বলেন, এত মানুষের জীবন জীবিকা নষ্ট করা যাবে না। পাশাপাশি জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশে জঙ্গলের ১ কিমি-এর মধ্যে যে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান না থাকার কথা বলা হয়েছে তার দূরত্ব কমিয়ে আনারও আর্জি করা হবে বলে জানান বনমন্ত্রী। এমনকি বক্সার পর্যটনের প্রয়োজনে ইকো-টুরিজমের জন্য জমি দিতেও তৈরি বনদফতর বলে জানান মন্ত্রী।
অপরদিকে জানা যায়, বনাঞ্চলের ভিতর ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে জাতীয় পরিবেশ আদালতে আর্জি করেছিলেন বক্সার ১৮ জন হোম-স্টে মালিক। সেই আর্জিতে সাড়া দিয়ে ৬ সপ্তাহের স্থগিতাদেশ দিয়েছে আদালত। ফলে এবার রাজ্য সরকারের তরফে এই সমস্যা সমাধানে আইনি লড়াইয়ে এগিয়ে আসার আশ্বাসে অনেকটাই আশার আলো দেখছে জয়ন্তি বক্সার পর্যটন মহল।