গোসাবা: ফের বাঘের হানায় (Tiger Attack) জখম হলেন মৎস্যজীবী (Fisherman)। শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের (Sundarban) হলদিবাড়ি (Haldibari) জঙ্গল লাগোয়া খোলাপাতা জঙ্গল এলাকায়। জানা গিয়েছে, জখম মৎস্যজীবীর নাম গৌরহরি মাইতি। গোসাবার (Gosaba) সোনাগাঁয়ের (Sonagaon) বাসিন্দা তিনি।
গত রবিবার চার সঙ্গীর সাথে মাছ, কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন গৌরহরি। এদিন যখন নৌকায় বসে মাছ ধরছিলেন, ঠিক তখনই একটি বাঘ পিছন থেকে সাঁতরে এসে নৌকায় বসে থাকা গৌরহরির মুখে থাবা বসায়। কোনও মতে বাঘকে ঠেলে নৌকা থেকে ফেলে দেন তিনি। এরপর সঙ্গীরাই বাঘের সঙ্গে লড়াই করে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন।
গুরুতর জখম অবস্থায় বন দফতরের সাহায্যে প্রথমে তাঁকে গোসাবা ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে (Gosaba Block Gramin hospital) নিয়ে আসা হয় চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কলকাতার চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (Calcutta National Medical College) স্থানান্তরিত করা হয়। তাঁর মাথায় ও ঘাড়ে গুরুতর চোট লেগেছে।
এর আগেও একাধিকবার বাঘের কবলে পড়েছে মৎসজীবীরা। চলতি মাসের শুরুর দিকে বাঘের হানায় গুরুতর জখম হন এক মৎসজীবী। জখম মৎসজীবির নাম গৌড় মিস্ত্রি। এদিন সকালে গোসাবার সাতজেলিয়া গ্রাম পঞ্চায়েত এর এমলী বাড়ি থেকে তিনজন মাছ ধরতে যান। আজ দুপুরে যখন পিরখালী জঙ্গলের কাছে মাছ ধরছিল তখন একটি বাঘ আচমকা পীর খালির জঙ্গল থেকে বেরিয়ে এসে গৌর এর উপর আক্রমণ করে। গৌড়ের সঙ্গে থাকা দুই সঙ্গী বাঘের সঙ্গে লড়াই করে উদ্ধার করে গৌরকে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁকে গোসাবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর চিকিৎসা চলছে।
কিছুদিন আগেই সুন্দরবনে বাঘের হানায় মৃত্যু হয়েছিল এক মৎস্যজীবীর। উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালির খড়িয়াহাট গ্রাম থেকে গত বুধবার পাঁচজনের একটি মৎস্যজীবী দল নৌকা নিয়ে সুন্দরবনে মাছ ধরতে গিয়েছিল। সুন্দরবন বাগনা এলাকায় নৌকা রেখে মাছ ধরতে নামে ৩৬ বছরের অন্ন দাস। বাকি সঙ্গীরা নৌকাতেই ছিলেন। তখন ঝড় বৃষ্টি হচ্ছিল, সে কারণে, সকলে নদীতে নামেননি।
সঙ্গীরা জানান, হঠাৎ করে জঙ্গলের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে রয়্যাল বেঙ্গল। জলে লাফ দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে অন্ন দাসের উপর। অন্ন দাসের সঙ্গী সাধু মালি সহ বাকিরা ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘের ওপর লাঠি দিয়ে আঘাত ও চিৎকার শুরু করলে অন্ন দাসকে ছেড়ে পালিয়ে যায় বাঘটি। সরকারি সাহায্য যাতে পায় পরিবার, সেই ব্যবস্থা তিনি করবেন।