অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: রেলের লোকো পাইলটের তৎপরতায় আবারও প্রাণে রক্ষা পেল শাবক-সহ হাতির দল। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার জংশন এবং রাজাভাতখাওয়া স্টেশনের মাঝে। বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল ভেদ করে যাওয়া রেল ট্র্যাকের কিলোমিটার ১৬২ এলাকায়।
জানা গিয়েছে, বামনহাট -শিলিগুড়ি ডিএমইউ ৭৫৭৪২ ডাউন ট্রেন নিয়ে আসছিলেন ট্রেনের লোকো পাইলট শ্রী এস অধিকারী ও অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকোপাইলট শ্রী আর কে মাহাতো। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৫-৫০ মিনিট নাগাদ রাজাভাতখাওয়া স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ১৫০ মিটার দূর থেকে দুটি হাতি এবং একটি হস্তি শাবককে রেল ট্র্যাকের পাশে দেখতে পান তারা। তৎক্ষণাৎ ট্রেনের গতি থামিয়ে দিতে সক্ষম হন তারা। লক্ষ্য করেন, ট্রেনের বা-পাশ থেকে ট্র্যাক পেরিয়ে হাতির দলটিকে ডান-পাশের জঙ্গলে ফিরে যেতে। প্রায় মিনিট খানেকের অপেক্ষার পর স্বাভাবিক ভাবেই ট্রেন রওনা দেয় গন্তব্যের পথে।
এর আগেও এমন ঘটনা ঘটেছে আলিপুরদুয়ারে। রেলের লোকো-পাইলটদ্বয়ের তৎপরতায় হাতির দলের সাথে অতীতেও সংঘর্ষ এড়িয়েছিল প্যাসেঞ্জার ট্রেন। ঘটনাটি ঘটেছিল উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের অন্তর্গত রেলের হাসিমারা-মাদারিহাট স্টেশনের মাঝে। জানা গিয়েছিল, রেলের কিমি ১৩০/৩ স্থানে জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যান ভেদ করে যাওয়া ডাউন ধুবড়ি-শিলিগুড়ি প্যাসেঞ্জার ট্রেনের সামনেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। জানা যায়, ট্রেনের লোকো পাইলটদ্বয় লক্ষ্য করেন ইঞ্জিন থেকে পায় ৭০ মিটার দূরে ট্র্যাকের পাশেই রয়েছে হাতির দল। তৎক্ষনাৎ ইঞ্জিনের ব্রেক কষে দাড় করিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন তারা।
একুশ সালে আলিপুরদুয়ারে হঠাৎ রেললাইনে এভাবেই দেখতে পাওয়া গিয়েছিল হাতিকে। সেবারও চালকের তৎপরতায় রক্ষা হয়। নাগরাকাটা থেকে চালসা যাওয়ার পথে বাচ্চা-সহ রেললাইনে চলে আসে দুটি পূর্ণবয়স্ক হাতি। দেখতে পেয়েই ট্রেন থামিয়ে দেন চালক। হাতি নিরাপদে রেললাইন পেরনোর পর ফের ট্রেন ছাড়েন চালক।
ডুয়ার্সের সেবক-গুলমা লাইনে একই কাণ্ড ঘটে। দুরন্ত গতিতে ছুটে আসা শিলিগুড়ি-আলিপুরদুয়ার ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের সামনে চলে আসে একটি হাতি। তবে সে বারও ট্রেনচালকের তৎপরতার মর্মান্তিক পরিণতি এড়ানো গিয়েছিল। দ্রুত ব্রেক কষে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন চালক ও সহকারী চালক। বড়সড় বিপদের হাত থেকে বেঁচেছিলেন যাত্রীরাও। পাহাড়ে এমন অভিজ্ঞতা রয়েছে আরও।
ডুয়ার্সের চালসা-নাগরাকাটা রেললাইনও এই ঘটনার সাক্ষী। লাইনে পিলারের কাছে হাতি পারাপারের সময় চলে আসে ট্রেন। রেল সূত্রে খবর, লাইনে যে হাতি থাকতে পারে সে কথা বেশ কিছুটা আগেই টের পেয়েছিলেন চালক । তাঁর এবং সহকারী চালকের তৎপরতায় প্রাণ বাঁচে প্রাণীটির। কিছু ঘটার আগেই ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করেন চালক ও সহকারী চালক। হাতিটি লাইন পেরিয়ে তার গন্তব্যের দিকে চলে গেলে এগিয়ে যায় ট্রেন।