অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার : চারদিন ধরে নিখোঁজ শিক্ষক(Teacher Missing)। জয়গাঁও পুলিশ আধিকারিকের নিখোঁজের ঘটনার পর, এবার স্কুল শিক্ষকের নিখোঁজে দানা বাঁধছে রহস্য। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আলিপুরদুয়ার(Alipurduar) থানার পুলিশ।


আলিপুরদুয়ার জেলার  ১ নং ব্লকের অন্তর্গত সোনাপুর বিকে হাই স্কুলের চুক্তিভিত্তিক কম্পিউটার শিক্ষক(Computer Teacher) বিশ্বজিৎ রায়। বয়স ৪৬ বছর। স্কুল থেকে প্রায় ২ কিমি দূরে আলিপুরদুয়ার থানার অন্তর্গত খয়েরবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা বিশ্বজিৎবাবু। 


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায় বাড়ি থেকে হেঁটে বের হন স্কুলের উদ্দেশ্যে। সাধারণত, স্কুটি চালিয়েই তিনি স্কুলে যান। ফলে স্কুটি না নেওয়ায় স্ত্রী ফোন করলে তিনি জানান, স্কুলের পর কোচবিহারে ডাক্তার দেখাতে যাবেন। এরপর আবার দুপুর দেড়টা নাগাদ স্ত্রী ফোন করে যোগাযোগের চেষ্টা করলে বিশ্বজিৎবাবুর দুটো নম্বরের ফোনই সুইচ অফ আসে। বারংবার ফোন করেও তাঁকে আর পাওয়া যায়নি। স্ত্রী স্কুলে খোঁজ-খবর শুরু করেন। জানতে পারেন, বিশ্বজিৎবাবু স্কুলেই যাননি। সেদিন আর কোনওভাবেই তাঁর খোজ না মেলায় পর দিন পরিবারের তরফে সোনাপুর পুলিশ ফাঁড়িতে তাঁর নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। 


আত্মীয়-স্বজনের কাছে খবর নিয়েও কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি তাঁর। স্কুলের তরফে সোশ্যাল মিডিয়ায় সন্ধান চেয়ে পোস্ট করাও হয়েছে। পরিবার সূত্রে খবর, বিশ্বজিৎবাবু শীতের পোশাক ছাড়াই বেরিয়েছিলেন। এমনকী মানিব্যাগ বাড়িতে রেখে টাকা নিয়ে গেছেন। নেননি নিজের প্যান, আধার এবং ভোটার কার্ড। ফলে, নিজের থেকে কোথাও যাওয়ার পরিকল্পনা তাঁর ছিল না বলেই ধারণা পরিবারের। তবে সোনাপুর থেকে সাফারি গাড়িতে চড়ে বিশ্বজিৎবাবু কোচবিহারের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন বলে পরিবার সূত্রে খবর। ঘটনার বিবরণ শুনে আলিপুরদুয়ার থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে চলছে তল্লাশি। 


বিশ্বজিৎবাবুর স্ত্রী কোচবিহার জেলার রামঠেঙা হাই স্কুলের শিক্ষিকা। তাঁদের একটি ৭ বছরের ছেলে আছে। প্রথম শ্রেণিতে পড়ে সে। সরকারি অবসরপ্রাপ্ত বাবা এবং গৃহবধু মা-কে নিয়ে হাসিখুশি স্বভাবের বিশ্বজিৎবাবুর সুখের সংসার। তার পরেও এই ঘটনায় দানা বাঁধছে রহস্য।


আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার ভোলানাথ পান্ডে জানান, নিখোঁজ শিক্ষকের খোঁজে তল্লাশি চলছে। মোবাইল নম্বর ট্রেস করা হচ্ছে। কোচবিহার পুলিশের সাহায্য নিয়ে সম্ভাব্য এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ডাক্তারের চেম্বারেও।