অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: দশমীর রাতে প্রতিবেশী বন্ধুর বাইকে চড়ে ঘুড়তে বেড়িয়েছিল যুবক। রাতে বাড়ি না ফেরায় খোঁজ করতে গিয়ে দেহের সন্ধান মিলল জেলা হাসপাতালে। ঘটনায় চাঞ্চল্য আলিপুরদুয়ার শহরের ৫ নং ওয়ার্ড আনন্দ নগরে। পলাতক বন্ধুরা। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে খুন না নেশাগ্রস্ত অবস্থায় দুর্ঘটনা, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় পুলিশ। 


জানা গিয়েছে, আনন্দ নগরের বাসিন্দা মৃত যুবকের নাম আনন্দ কুন্ডু ওরফে পাপ্পা (২৮)। পেশায় কাপড়ের দোকানের শ্রমিক। পরিবার সূত্রে জানা যায়, দশমীর সন্ধ্যায় প্রতিবেশী বন্ধু সোনাই ওরফে লিটন পাল পাপ্পাকে এক প্রকার জোড় করেই ঘুড়তে নিয়ে যায়। অনিচ্ছার বিরুদ্ধে ক্ষুদার্ত পাপ্পাকে নিয়ে একটু ঘুড়েই ফিরিয়ে নিয়ে আসবে বলে পাপ্পা-র মাকেও কথা দেয় বন্ধু সোনাই। কিন্তু তারপর রাত পেরিয়ে সকাল হলেও ফেরে না পাপ্পা।


দশমীর সারা রাত ছেলের দুশ্চিন্তা চিন্তায় এদিক-সেদিক খোঁজ খবর করেও লাভ হয়নি মায়ের। সূর্যের আলো ফুটতেই ছেলের খোঁজে পাপ্পার মা ছুটে যান বন্ধু সোনাই-দের বাড়ি। বাড়িতে সোনাইয়ের দেখা পেলেও খোজ দিতে অস্বীকার করে সে। উলটে পাপ্পার মা-কেই প্রশ্ন করে বাড়িতে ফেরেনি ? তাহলে হাসপাতালে খোজ করার পরামর্শ দে। এরপর পাপ্পার আত্মীয়স্বজন জেলা হাসপাতালে খোজ করতেই সন্ধান পায় মৃতদেহের। মাথার পেছনে আঘাত রয়েছে বলে জানা যায়। 


যা নিয়ে চাঞ্চল্য আলিপুরদুয়ারের আনন্দ নগরে। পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পনা করেই খুন করা হয়েছে আনন্দ কুন্ডু ওরফে পাপ্পাকে। এবং প্রতিবেশি বন্ধু সোনাই ওরফে লিটন পালই খুন করেছে বলে অভিযোগ মৃত যুবকের মা-সহ আত্মীয়দের। খুনের কারণ নিয়ে পরিবারের ধোঁয়াশা থাকলেও অভিযুক্ত বন্ধু সোনাই বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়া বা অস্বিকার করায় সন্দেহ দৃঢ় হয়েছে পরিবারের। 


স্থানীয় সূত্রে খবর, দশমির রাতে শহর সংলগ্ন আলিপুরদুয়ার জংশনে ঘটনাটি ঘটে। মৃত পাপ্পার সঙ্গে অভিযুক্ত সোনাই ছাড়াও এক যুবতি ও এক যুবক তাঁদের সাথে ছিল। তবে সেটা নিছক একটি দুর্ঘটনা না খুন তা জানা যায়নি। তবে জখম পাপ্পাকে আলিপুরদুয়ার জংশন রেলওয়ে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সময় তার মৃত্যু হয় বলে সূত্রের খবর। ফলে এতকিছুর পরেও কেন পরিবারকে ঘটনার খবর বা বিবরণ না দিয়ে অভিযুক্তরা গা ঢাকা দিয়েছেন তা নিয়েই সন্দেহ দানা বাধাচ্ছে। 


আরও পড়ুন, ১০০ এর নীচে পেট্রোল দেশের এই শহরগুলিতে, আজ কলকাতায় জ্বালানি ভরাতে খরচ কত ?


অভিযুক্ত যুবক সোনাইয়ের বাবা নিতাই পালের দাবি, আমার ছেলে-সহ দুই বন্ধু এবং এক বান্ধবী দুই বাইকে চড়ে ঘুড়তে গেলে দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত পাপ্পা ছিল অন্য বন্ধুর বাইকে। সেই বাইকেই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ছেলে জানিয়েছে বলে জানান তারা। তবে খুনের অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্তের পরিবার। তবে ছেলেরা যে নেশাগ্রস্ত ছিল সেটাও স্বিকার করেন অভিযুক্তের বাবা। অভিযুক্ত যুবকের মা বিনা জানান, ছেলে গভীর রাতে বাড়ি ফেরে। এখন নেই। পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার পর থেকে নিখোজ অভিযুক্ত যুবকসহ বাকিরা। মোবাইল লোকেশন ট্র‍্যাক করে তাঁদের তল্লাশি চলছে।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।