অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: পুজোর আগে ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুরে উপনির্বাচন ঘোষণা করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। একই দিনে ভোট হবে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর আসনে। আর কমিশনের এই ঘোষণা সামনে আসতেই পুরভোট কবে হবে, সেই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। এমন একটা আবহে আলিপুরদুয়ার জেলায় পুরভোটের প্রস্তুতিতে শান দিতে দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেসকে।

পুরভোটে জিততেই হবে। দলীয় কর্মী সমর্থকদের সামনে এমন বার্তা তুলে ধরে ৬টি ওয়ার্ডে দুটি করে সাংগঠনিক বৈঠক করল তৃণমূল নেতৃত্ব। ছাত্র-যুব- মহিলা এবং বিভিন্ন শাখা সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে ওই বৈঠক হয়। এবার বিধানসভা ভোটে রাজ্যে ঘাসফুল ঝড়ের মধ্যেও আলিপুরদুয়ার জেলায় আঁচড় কাটতে কাটতে পারেনি তৃণমূল।

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পুরসভা ভিত্তিক ফল অনুযায়ী আলিপুরদুয়ার পুরসভার ২০টি আসনের মধ্যে ১৮টিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে ফের পুরসভা দখলের জন্য তাল ঠুকতে শুরু করেছে শাসক শিবির।

২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর তৃণমূল পরিচালিত আলিপুরদুয়ার পুরবোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়। তারপর পুরসভা পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় মহকুমা শাসককে। গত বছর ১২ ডিসেম্বর মহকুমা শাসককে অব্যাহতি দিয়ে পুরসভা পরিচালনার দায়িত্ব নেয় তৃণমূল মনোনীত প্রশাসকমণ্ডলী। এখনও পর্যন্ত সেটাই চলে আসছে।

এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের পুরনির্বাচন প্রস্তুতি ঘিরে শুরু হয়েছে তরজা। আলিপুরদুয়ার টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘যেনতেন প্রকারে পুরসভার ২০টি ওয়ার্ডেই জিততে হবে। আমাদের কাছে এখন প্রতিটি দিনই নির্বাচন। সেই অনুসারে প্রস্তুতি কর্মিসভা চলছে। মানুষ ভুল বুঝতে পেরেছে। তাই বিজেপি ছেড়ে প্রচুর যোগদান চলছে। মানুষ বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে দেখা নেই বিজেপি বিধায়কদের। দুয়ারে সরকার, ভ্যাকসিন ক্যাম্পে যাওয়া মানুষদের ক্ষেপিয়ে তুলছে বিজেপি। মানুষ সমস্যায় যাকে কাছে পায়, তার প্রতিই আস্থা রাখে। আমরা আত্মবিশ্বাসী।’

আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, ‘প্রায় তিন বছর নির্বাচন না করে সংবিধানে অমান্য করে, নিজেদের মতো করে গোটা রাজ্যের পুরসভায় আধিপত্য কায়েম করেছে শাসকদল। মানুষ ধিক্কার জানায়। লোকসভা, বিধানসভায় মানুষ যোগ্য জবাব দিয়েছে। এবার প্রতিটি ইঞ্চিতে সব হিসেব বুঝে নেবে মানুষ। আশ্বাস দিয়েও গত ১০ বছরে দেড় কোটি টাকা খরচ করে ডাম্পিং গ্রাউন্ড হয়নি। বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছয়নি। রাস্তা খারাপ। দুর্নীতিতে যুক্ত। তাই বলছে যেনোতেনো প্রকারে জিতবে। এবার বিজেপিকে আটকানো যাবে না। মানুষ পুরসভায় পরিবর্তন আনবে।’